ত্রিপুরা সিপিএমের অন্তর্বর্তী রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী
প্রয়াত দশরথ দেবের পরে আবার ত্রিপুরা সিপিএমের শীর্ষ পদে জনজাতির প্রতিনিধি। রাজ্য সম্পাদক গৌতম দাশের আকস্মিক মৃত্যুর পরে দলের অন্তর্বর্তী দায়িত্ব পেলেন প্রাক্তন সাংসদ এবং সিপিএমের জনজাতি সংগঠন ‘উপজাতি গণমুক্তি পরিষদের’ সভাপতি জিতেন্দ্র চৌধুরী। আগরতলায় রবিবার ত্রিপুরা সিপিএমের রাজ্য কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে জিতেন্দ্রকে অন্তর্বর্তী রাজ্য সম্পাদক বেছে নেওয়া হয়েছে। কয়েক মাস পরেই দলের রাজ্য সম্মেলন। সেখানেই পূর্ণ সময়ের সম্পাদক নির্বাচিন হবে।
দ্বিতীয় দফায় দশরথ দায়িত্ব ছাড়ার পরে ত্রিপুরা সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক ছিলেন মানিক সরকার, বৈদ্যনাথ মজুমদার, বিজন ধর, গৌতমেরা। দীর্ঘ দিন পরে আবার সেই দায়িত্বে জনজাতি অংশের প্রতিনিধিকে নিয়ে এল সিপিএম। রাজ্যের পাহাড়ি ও জনজাতি এলাকায় বামেরা এখন দুর্বল। দীর্ঘ কালের ভিত্তি হারিয়ে গত বিধানসভা নির্বাচনে জনজাতি এলাকায় ২০টির মধ্যে মাত্র দু’টি আসন জিততে পেরেছিল সিপিএম। স্বশাসিত জেলা পরিষদের নির্বাচনেও তাদের ভরাডুবি অব্যাহত থেকেছে। এই পরিস্থিতিতে আগামী বিধানসভা ভোটের আগে জিতেন্দ্রকে সামনে রেখে জনজাতি এলাকায় জমি উদ্ধারের চেষ্টা চালাতে চায় সিপিএম। তুলনায় কমবয়সি রাজ্য সম্পাদক থাকায় তরুণ প্রজন্মকে কাছে টানতে সুবিধা হবে বলেও সিপিএম সূত্রের ব্যাখ্যা।
অন্তর্বর্তী দায়িত্ব পাওয়ার পরে জিতেন্দ্রের মন্তব্য, ‘‘আমাদের দলে যৌথ দায়িত্বে এবং সিদ্ধান্তে কাজ হয়। তবে ব্যক্তি হিসেবে একটা ভূমিকা আগেও ছিল, সেটা এখনও থাকবে। ফুটবলের ভাষায় বলতে গেলে আগে ডান দিকে ছিলাম। এখন মাঝমাঠে খেলার দায়িত্ব পালন করব।’’ সিপিএম এখন ক্ষমতায় নেই, শাসক বিজেপির আক্রমণও বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে ‘চ্যালেঞ্জের’ মুখোমুখি হয়েই কাজ করতে হবে বলে জানিয়ে নতুন রাজ্য সম্পাদকের বক্তব্য, ‘‘কঠিন সময়ে সবাইকে নিয়ে দলের সংগঠন মজবুত করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করব। বর্তমানে দেশের এবং রাজ্যের রাজনীতি একটা কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। গণতন্ত্র এবং দল আক্রান্ত হচ্ছে।’’
সিপিএমের অন্দরের খবর, এক সময়ে পরিকল্পনা ছিল আগামী দিনে রাজ্যে পরিষদীয় রাজনীতির মুখ হিসেবে জিতেন্দ্রকে সামনে রাখার। সে ক্ষেত্রে ২০২৩ সালের বিধানসভা ভোটের ফলের নিরিখে তাঁকে পরিষদীয় স্তরে বড় দায়িত্বে পাঠানোর ভাবনা ছিল। কিন্তু গৌতমবাবুর আকস্মিক প্রয়াণে কৌশল বদলে আপাতত দলের দায়িত্বই কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জিতেন্দ্রকে দেওয়া হল। তিনি রাজ্য কমিটির সদস্য হয়েছেন ১৯৮৮ সালে। রাজ্যে মন্ত্রী ছিলেন ১৯৯৩ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত। তার পরে সাংসদ হয়েছিলেন জনজাতি সংরক্ষিত পূর্ব ত্রিপুরা লোকসভা কেন্দ্র থেকে।