উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে তখনও চলছে উদ্ধারকাজ। —ফাইল চিত্র।
শ্রমিকদের সুস্থ ভাবে উদ্ধার করা যাবে কি না, তা নিয়ে আশঙ্কার দোলাচল ছিল। অবশেষে ১৭ দিন পরে মঙ্গলবার রাতে উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারা-বারকোট সুড়ঙ্গ থেকে উদ্ধার করা হয় ৪১ জন শ্রমিককে। কিন্তু কী কারণে সুড়ঙ্গ ভেঙে পড়েছিল, তা জানা যায়নি। এ বার সেই কারণ অনুসন্ধানকেই অগ্রাধিকার দিতে চাইছে প্রশাসন। উদ্ধারকাজে কোন কোন কারণে এত বিলম্ব ঘটল, তা-ও খুঁজে দেখা হবে বলে জানা গিয়েছে।
বিশেষত, পর্বতে ঘেরা ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলে এই ধরনের প্রকল্পের কাজ চালিয়ে যাওয়া কতটা নিরাপদ, উত্তরাখণ্ডের ঘটনার পর তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কিছু দিন আগেই কেন্দ্রীয় সড়ক এবং পরিবহণ মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী বলেন, “আমরা এই ঘটনা (উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গ বিপর্যয়) থেকে অনেক কিছু শিখেছি। আমরা সব দিক খতিয়ে দেখব। ভবিষ্যতে আরও উন্নত কোনও প্রযুক্তি ব্যবহার করা যায় কি না, তা-ও দেখা হবে।”
১৭ দিন পর মঙ্গলবার রাতে উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৪১ জন শ্রমিককে। সকলেই সুস্থ রয়েছেন। তবে দীর্ঘ দিন সুড়ঙ্গে বন্দি থাকার কারণে তাঁদের মনের উপর প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামী শ্রমিকদের জন্য বেশ কিছু ঘোষণা করেছেন। সুড়ঙ্গে আটকে থাকা প্রত্যেক শ্রমিককে এক লক্ষ টাকা দেবে উত্তরাখণ্ড প্রশাসন। পাশাপাশি তাঁরা ১৫ থেকে ২০ দিন ছুটি নিয়ে বাড়ি যেতে পারবেন।
সুড়ঙ্গে যত দিন আটকে ছিলেন শ্রমিকেরা, রোজ তাঁদের পাঁচ ঘণ্টা করে কাউন্সেলিং করা হত। সুড়ঙ্গের বাইরে থেকে চলত স্বাস্থ্য পরীক্ষা। চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, সুড়ঙ্গ থেকে বেরিয়ে আসার পরেও তাঁদের মানসিক চিকিৎসা প্রয়োজন। পরিবারের সঙ্গে কিছু দিন সময় কাটানো প্রয়োজন। আগামী কিছু দিন সব সময় শ্রমিকদের সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের থাকতে হবে।
সুড়ঙ্গের বাইরে গড়ে তোলা হয়েছিল অস্থায়ী হাসপাতাল। মঙ্গলবার রাতে সুড়ঙ্গ থেকে বার করার পর শ্রমিকদের সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা চলে। এর পর তাঁদের ৩০ কিলোমিটার দূরে চিনিয়ালিসৌর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আগে থেকেই ৪১টি শয্যা তৈরি ছিল। প্রত্যেক শয্যায় ছিল অক্সিজেনের ব্যবস্থা। তবে সকলেই সুস্থ রয়েছেন বলে সে সবের প্রয়োজন হয়নি।