পূজা খেড়কর। — ফাইল চিত্র।
খোঁজ মিলছে না বিতর্কিত শিক্ষানবিশ আমলা পূজা খেড়করের বাবা-মায়ের। বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ওপার থেকে উত্তর মেলেনি।
সম্প্রতি পূজা খেড়করের বিরুদ্ধে উঠে এসেছে নতুন তথ্য। আগেই ইউপিএসসি পরীক্ষায় সংরক্ষণের সুবিধা পেতে নিজেকে ‘বিশেষ ভাবে সক্ষম’ বলে তুলে ধরার অভিযোগ ছিল পূজার বিরুদ্ধে। ভুয়ো শংসাপত্র দাখিল করে নিজেকে ‘অনগ্রসর’ (ওবিসি) শ্রেণিভুক্ত বলে দেখানোরও অভিযোগ উঠেছিল। আমলা হিসাবে পূজার নিয়োগপ্রক্রিয়া আদৌ যথাযথ ছিল কি না, প্রশ্ন উঠেছিল তা নিয়েও। এ বার জানা গেল, ২০২২ সালের অগস্টে পুণের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে শারীরিক প্রতিবন্ধীর শংসাপত্রের জন্য আবেদন করেছিলেন পূজা। প্রাথমিক পরীক্ষার পর সেই আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছিল তাঁর।
দিন কয়েক আগে মহারাষ্ট্রের পুণের সহকারী জেলাশাসক হিসাবে নিযুক্ত পূজার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজের ব্যক্তিগত ব্যবহারের বিদেশি গাড়িতে ভিআইপি স্টিকার, নেতা-মন্ত্রীদের মত লাল-নীল আলো এবং মহারাষ্ট্র সরকারের বোর্ড ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়াও অতিরিক্ত জেলাশাসকের চেম্বার ‘দখল’ করা এবং জেলাশাসকের সহকারীর কাছে বেআইনি দাবিদাওয়া পেশ করে সেই দাবি পূরণের জন্য হুমকি দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। পূজা মহারাষ্ট্রের আহমেদনগর জেলার পাথারদি এলাকার বাসিন্দা। পূজার বাবা দিলীপরাও খেড়করও এক জন প্রশাসনিক কর্তা ছিলেন। মহারাষ্ট্র দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের উচ্চপদস্থ কর্মচারী ছিলেন তিনি। পূজার দাদুও ছিলেন এক জন আমলা। অবসরের পর রাজনীতিতে যোগ দেন দিলীপরাও। পূজার মা মনোরমা অবশ্য অনেক আগে থেকেই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি ভালগাঁও গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান।
সম্প্রতি পূজার মায়ের একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে (যদিও ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। পুণের পুলিশ সুপার পঙ্কজ দেশমুখ জানিয়েছেন, যে ভিডিয়োটি ভাইরাল হয়েছে, সেটি এক বছর আগের। ভিডিয়োতে পূজার মাকে দেখা যাচ্ছে এক কৃষককে বন্দুক উঁচিয়ে জমি জবরদখলের হুমকি দিতে। ওই কৃষকের দাবি, পুলিশ সেই সময় কোনও অভিযোগ নিতে চায়নি। কারণ খেড়কর পরিবার অত্যন্ত প্রভাবশালী। আর সেই প্রভাবই বারবার খাটানো হয়েছে বলে অনুমান।
অন্য দিকে, পূজার বাবার দাবি, তাঁর কন্যা কোনও ভুল করেননি। অযথা তাঁকে হেনস্থা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। দিলীপের আরও দাবি, তাঁর মেয়ে পূজার বিরুদ্ধে যা যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। পূজা কি সংরক্ষণের ভিত্তিতে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন? এই প্রশ্নে দিলীপের সাফ জবাব, “কমিটির কাছে আমরা সব জানাব। এখন আইনি প্রক্রিয়া চলছে, তাই এখন এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাই না। তবে এটুকু বলতে পারি, সব কিছু আইন মেনেই করা হয়েছিল। কোনও অসদুপায় অবলম্বন করা হয়নি।”
তার পর থেকে পূজার বাবা-মা কোনও খোঁজ নেই। পূজাদের বাড়ি গিয়েও তাঁর বাবা-মায়ের সন্ধান পায়নি পুলিশ। তাঁদের খুঁজতে পুলিশের তিনটি বিশেষ দল তৈরি করা হয়েছে। মুম্বই, পুণে এবং আহমেদনগরে তাঁদের খোঁজ চলছে।