জয়পুর-মুম্বই এক্সপ্রেসে চার যাত্রীকে গুলি করে হত্যায় অভিযুক্ত আরপিএফ কনস্টেবল চেতন সিংহ। —ফাইল চিত্র।
জয়পুর-মুম্বই এক্সপ্রেসে গুলি চালিয়ে চার জনকে হত্যা করা আরপিএফ কনস্টেবল কি আদৌ মানসিক ভাবে অসুস্থ ছিলেন? রেল প্রথমে তাঁর মানসিক অসুস্থতার কথা জানালেও সম্প্রতি সেই বক্তব্য থেকে পিছিয়ে এসেছে। কিন্তু শুক্রবার ওই কনস্টেবল চেতন সিংহের স্ত্রী জানিয়েছেন, চেতন যে অসুস্থ ছিলেন, তাঁর বিশদ প্রমাণ আছে তাঁর হাতে। তিনি সেই প্রমাণ দাখিল করতেও পারেন। সংবাদ সংস্থা ‘ইন্ডিয়া টুডে’কে দেওয়া টেলিফোনিক সাক্ষাৎকারে চেতনের স্ত্রী রেণু জানিয়েছেন, দিন কয়েকের মধ্যেই আত্মীয়স্বজনকে সঙ্গে নিয়ে তিনি মুম্বই যাবেন ওই প্রমাণ-সহ বয়ান রেকর্ড করাতে।
গত সোমবার ভোরে জয়পুর-মুম্বই এক্সপ্রেসে টহলরত চেতন আচমকাই তাঁর সঙ্গে থাকা স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র থেকে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করেন। তাঁর গুলিতে মৃত্যু হয় দু’জন যাত্রী, এক পুলিশকর্মী এবং রেলের প্যান্ট্রি কারের এক কর্মীর। এর পর অবশ্য গ্রেফতারও করা হয় চেতনকে। আচমকা এমন ঘটনার কারণ খুঁজতে গিয়ে প্রথমে চেতনের মানসিক অসুস্থতার কথাই জানিয়েছিল রেল। কিন্তু পরে সেই বয়ান থেকে তারা পিছিয়েও আসে। সম্প্রতি রেলের তরফে জানানো হয়, চেতনের শেষ মেডিক্যাল পরীক্ষায় মানসিক বিকার জাতীয় অস্বাভাবিক কিছু পাওয়া যায়নি। এর পরেই চেতনের পরিবারের তরফে জানানো হয়, তিনি দীর্ঘ দিন ধরেই মানসিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন। এ বার সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে চেতনের স্ত্রীও জানালেন, তাঁর স্বামী শুধু অসুস্থই ছিলেন না, দীর্ঘ দিন মথুরার স্থানীয় হাসপাতালে মানসিক রোগের চিকিৎসাও হয়েছে তাঁর।
রেণুর দাবি, একটি দুর্ঘটনার পর থেকেই চেতনের মানসিক বিকার দেখা গিয়েছিল। দীর্ঘ দিন ধরে মথুরার হাসপাতালে চিকিৎসাও চলেছে তাঁর। সেই মানসিক অসুস্থতার চিকিৎসার বিশদ কাগজপত্রও রয়েছে তাঁর কাছে। তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ওই সমস্ত নথি-সহ মুম্বইয়ে গিয়ে বয়ান রেকর্ড করাবেন তিনি।
চেতনের বাড়ি উত্তরপ্রদেশের মথুরায়। বুধবারই তাঁর পরিবারের তরফে দাবি করা হয়, চেতন মানসিক চাপের মধ্যে ছিলেন। চেতনের বৌদি বলেন, “কয়েক দিন ধরেই চেতনের শরীর ভাল ছিল না। ওর চিকিৎসাও চলছিল। মাথার একাংশে রক্ত জমাট বেঁধেছে বলে ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল।” চেতন রাগের মাথায় চার জনকে হত্যা করেছেন কি না, এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “রাগ থেকে এ কাজ সে করেনি বলেই মনে হয়। কিন্তু ও সব সময় উদ্বিগ্নই থাকত। বাড়ি থেকে দূরে থাকায় বুঝতেও পারতাম না যে, ওষুধগুলো ঠিক করে খায় কি না।” চেতনের পরিবারের বক্তব্য, ১৪ বছরের কর্মজীবনে কখনও কোনও সহকর্মীর সঙ্গে বিবাদে জড়াননি তিনি।