শ্রমিক সংগঠনগুলিকে খুশি করতে পারলেন না কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রী। —ফাইল চিত্র।
অরুণ জেটলির ঘোষণা করা নতুন ন্যূনতম মজুরি কাঠামো মানতে রাজি হল না দেশের বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন। জেটলি যা ঘোষণা করেছেন, তাতে শ্রমিকদের দৈনিক মজুরির কাঠামোয় আদৌ কোনও উন্নতি হবে না বলে শ্রমিক সংগঠনগুলির দাবি। তাই ২ সেপ্টেম্বরের প্রস্তাবিত ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হচ্ছে না বলেও বাম শ্রমিক সংগঠন সিআইটিইউ-র (সিটু) তরফে জানানো হয়েছে।
অকৃষি ক্ষেত্রের দিনমজুরদের জন্য দৈনিক ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির দাবি সহ বিভিন্ন ইস্যুতে শুক্রবার অর্থাৎ ২ সেপ্টেম্বর গোটা দেশে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন। সংগঠনগুলির দাবির কথা মাথায় রেখে কেন্দ্রীয় সরকার মঙ্গলবার নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণা করেছে। অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি এ দিন জানান, ন্যূনতম মজুরির পরিমাণ দৈনিক ২৪৬ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩৫০ টাকা করা হচ্ছে। বিভিন্ন রাজ্য সরকার চাইলে ন্যূনতম মজুরির হার এর চেয়ে বাড়াতে পারবে। কিন্তু এর চেয়ে কমানো যাবে না। শ্রমিক সংগঠনগুলি কিন্তু এই ঘোষণায় খুশি নয়। দিল্লি এবং কর্নাটকে দৈনিক ন্যূনতম মজুরি ইতিমধ্যেই এর চেয়ে বেশি বলে তাঁদের দাবি। সিটু নেতা তপন সেন বলেছেন, ‘‘জেটলি যা ঘোষণা করেছেন, তাতে বর্তমান অবস্থাটাই বজায় থাকছে। আমাদের কোনও দাবিই সে অর্থে তিনি মানেননি। তাই ধর্মঘট প্রত্যাহার করার কোনও প্রশ্নই উঠছে না।’’
জেটলি মঙ্গলবার আরও জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের যে দু’বছরের বোনাস বকেয়া, তা মিটিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে যে সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছে, তা কোনও ভাবেই পরিবর্তন করা হবে না বলে জেটলি জানিয়েছেন। বিমা, প্রতিরক্ষা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিদেশি বিনিয়োগের নিয়ম ভারত সরকার সম্প্রতি যে ভাবে শিথিল করেছে, তাতে দেশের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে বলে শ্রমিক সংগঠনগুলির দাবি। শুক্রবারের প্রস্তাবিত ধর্মঘটে সেটিও অন্যতম ইস্যু। কিন্তু সে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা যে সরকার করবে না, তা জেটলি মঙ্গলবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: মমতার জিএসটি-চালে উদ্বিগ্ন জেটলি
সাউথ ব্লক সূত্রের খবর, ২ সেপ্টেম্বরের প্রস্তাবিত ধর্মঘট যাতে না হয়, তার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজে সক্রিয় হয়েছেন। অর্থ মন্ত্রী অরুণ জেটলি, শ্রম মন্ত্রী বন্ডারু দত্তাত্রেয় এবং বিদ্যুৎ মন্ত্রী পীযূষ গয়ালকে সঙ্গে নিয়ে তিনি সোমবারই জরুরি বৈঠকে বসেছিলেন। সেই বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, জেটলি মঙ্গলবার তা-ই ঘোষণা করেছেন। কিন্তু শ্রমিক সংগঠনগুলি মনে করছে, এই পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়। তাই ধর্মঘট প্রত্যাহারের কোনও ইঙ্গিত মিলল না।