শোকার্ত: জঙ্গি নেতা আবু দুজানার মৃত্যুর পরে উপত্যকা ফের উত্তপ্ত। মঙ্গলবার পুলওয়ামায় বেগমবাগে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে নিহত হন ফিরদৌস আহমেদ নামে এই কাশ্মীরি যুবক। ছবি: রয়টার্স।
মাস তিনেক আগে সেনার হাতের নাগাল থেকে পালিয়ে গিয়েছিল সে। উপত্যকার মানুষই পাথর ছুড়ে সেনার পথ আটকে সে দিন সেই সুযোগ করে দিয়েছিল। আজ সে সুযোগটা আর মেলেনি। ভোরেই সেনা-পুলিশের গুলিতে খতম হয়ে গেল কাশ্মীরে লস্করের অন্যতম শীর্ষ নেতা আবু দুজানা। পুলিশের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকার একেবারে উপরের দিকে থাকা দুজানার সঙ্গে মৃত্যু হয়েছে তার এক সঙ্গীরও।
এক সেনা কর্তা জানিয়েছেন, পুলওয়ামার হারকিপোরা গ্রামের একটি বাড়িতে লুকিয়ে ছিল আবু ও তার সঙ্গী আরিফ লিলহারি। হিজবুল কম্যান্ডার বুরহান ওয়ানি আর সবজার বাটের পরে আবুর মৃত্যু উপত্যকায় জঙ্গি দমন অভিযানের অন্যতম বড় সাফল্য বলে আজ দাবি করেছে সেনা। বস্তুত সেনার এই ‘অপারেশন ক্লিন আপ’ অভিযানে গত ছ’মাসে মৃত্যু হয়েছে ১১৬ জন জঙ্গির। বুরহানের মতোই আবুর মৃত্যুর পরেও অবশ্য উপত্যকা জুড়ে শুরু হয়েছে অশান্তি। আজ নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে এক বিক্ষোভকারীরও।
বিক্ষোভ: লস্কর নেতা আবু দুজানার মৃত্যুর খবরে পাথর হাতে রাস্তায় নেমেছে ক্ষুব্ধ ছাত্রীরাও। মঙ্গলবার শ্রীনগরে। ছবি: পিটিআই।
২০১৫ সালে লস্কর কম্যান্ডার আবু কাসিমের মৃত্যুর পরে কাশ্মীরে সংগঠনের শীর্ষ স্থানে বসানো হয়েছিল দুজানাকে। মহিলা মহলে যথেষ্ট জনপ্রিয়তা ছিল বছর ছাব্বিশের স্মার্ট এই যুবকের। উপত্যকার বেশ কিছু মেয়ের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্কও ছিল। যথেষ্ট বিলাসবহুল জীবনযাত্রাও ছিল তার। গত বছর বিয়ে করে সে। আর তার পর থেকেই নাকি দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে গোলমাল বাধতে শুরু করে আবুর। মাস খানেক আগে তার ক্ষমতা কমিয়ে আর এক জঙ্গিকে লস্করের কাশ্মীর শাখার প্রধান করা হয়। সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, স্ত্রীর সঙ্গে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল আবুর। খুব সম্ভবত সে জন্যই আজ তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল সে।
আইজিপি মুনির আহমেদ খান জানিয়েছেন, এর পরে পুলওয়ামায় শান্তি ফিরে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘উপত্যকার মেয়েরাও এখন অনেক সুরক্ষিত।’’ তবে আবুর মৃত্যুর খবর ছড়াতেই নতুন করে অশান্তি শুরু হয়েছে কাশ্মীরের নানা জায়গায়। পাথর হাতে রাস্তায় নেমেছে শ্রীনগরের ছাত্রীরাও। পুলওয়ামার কাকাপোরা এলাকার বেগমবাগে সেনার পাল্টা গুলিতে মৃত্যু হয়েছে ফিরদৌস আহমেদ খান নামে এক বিক্ষোভকারীর। ঝামেলা এড়াতে গোটা উপত্যকায় মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে।