জ়াকিয়া জাফরি
দাঙ্গা মামলায় নরেন্দ্র মোদীকে ক্লিন চিট দেওয়ার বিরুদ্ধে দেশের শীর্ষ আদালতের শরণাপন্ন হয়েছিলেন জ়াকিয়া জাফরি। তাঁর সেই আবেদনের শুনানি হবে কাল।
২০০২ সালে গুজরাত দাঙ্গায় স্বামী এহসান জাফরিকে হারিয়েছিলেন জ়াকিয়া। এহসান কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ ছিলেন। শুধু এহসান নন, গুলবার্গ সোসাইটির সেই হত্যাকাণ্ডে প্রাণ হারিয়েছিলেন ৬৯ জন। রাজ্যের তদানীন্তন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গোটা ঘটনায় মুখ ফিরিয়ে ছিলেন বলে জ়াকিয়ার অভিযোগ। যদিও সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) মুখ্যমন্ত্রী মোদী ও বেশ কয়েক জন আমলাকে ওই মামলায় ক্লিন চিট দেয় ২০১২ সালে। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে এত দিন নিম্ন আদালতে লড়াই চালিয়েছেন জ়াকিয়া। তার পরে গুজরাত হাইকোর্ট পর্যন্ত গেলেও গত বছর তাঁর সেই আবেদন খারিজ হয়ে যায়। শেষমেশ সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন ৮০ বছরের জ়াকিয়া।
গত বছর গুজরাত হাইকোর্টের কাছে আবেদনে তিনি জানিয়েছিলেন, ওই দাঙ্গার পিছনে ‘বৃহত্তর ষড়যন্ত্র’ রয়েছে। কিন্তু আদালত তাঁর আর্জি খারিজ করে ২০১২ সালে সিট-এর রিপোর্টই মেনে নেয়। সেই রিপোর্টে বলা হয়, সেই সময়কার মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণে যা যা পদক্ষেপ করার, তার সবই করেছিলেন। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মী তিস্তা শেতলওয়াড়ের সঙ্গে জ়াকিয়া আর্জি জানিয়েছিলেন, মোদীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হোক। সিট-এর রিপোর্টের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের মার্চে গুজরাত হাইকোর্টে যান জ়াকিয়া। সেখানে তাঁকে শুনতে হয়, দাঙ্গার চার বছর পরে কেন তিনি অভিযোগ জানিয়েছেন।
২০০২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি গুলবার্গ সোসাইটির বাসিন্দাদের ঘর থেকে টেনে বের করে কুপিয়ে, পুড়িয়ে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ। কংগ্রেস কর্মী এহসান পুলিশ এবং প্রবীণ রাজনীতিকদের কাছে সাহায্য চেয়ে বারবার ফোন করলেও সাড়া মেলেনি বলে জ়াকিয়ার দাবি। গুলবার্গ সোসাইটিতে ২৯টি বাংলো ও ১০টি অ্যাপার্টমেন্টে মূলত মুসলিমদের বাস ছিল। সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ তদন্তকারী দল গুজরাত দাঙ্গার যে ১০টি মামলার পুনর্তদন্ত করতে নামে, তার মধ্যে গুলবার্গ সোসাইটি
হত্যা মামলা অন্যতম। নিম্ন আদালতে মোদীর আইনজীবীরা জানান, হামলার সময়ে এহসান জ়াফরি শূন্যে গুলি ছোড়ায় ‘আগুনে ঘি পড়ে এবং জনতা খেপে যায়।’