উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নায়ডুর নাতনির বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন রাজ্যসভায় সাসপেন্ড হওয়া বিরোধী সাংসদেরা। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া বৈঠকের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়ার পর সোমবার দফায় দফায় সংসদ অচল করে রাখলেন বিরোধীরা। লখিমপুর খেরি কাণ্ডে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্রের অপসারণের দাবিতে উত্তাল লোকসভায় নির্বাচনী সংস্কার সংক্রান্ত রাজনৈতিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিলটি অবশ্য পাশ করিয়ে নিয়েছে কেন্দ্র। তবে গোটা দিনই বিরোধীদের ঐক্যের ছবি অটুট রয়েছে।
অজয় মিশ্রের অপসারণ ও রাজ্যসভার ১২ জন সাংসদের সাসপেনশন তুলে নেওয়ার দাবিতে বিরোধী দলের সাংসদরা আগামিকাল সকালে সংসদ থেকে বিজয় চক পর্যন্ত মিছিল করবেন বলে যৌথ সিদ্ধান্ত হয়েছে। মিছিলে যোগ দেবেন কংগ্রেস, তৃণমূল, শিবসেনা, ডিএমকে, এনসিপি-সহ সব বিরোধী দলের সাংসদই। অনেকে মনে করছেন, পাঁচ রাজ্যের আসন্ন ভোটের দিকে তাকিয়ে এটা কেন্দ্রের উপর চাপ তৈরির কৌশল। শীতকালীন অধিবেশনের বাকি মাত্র তিন দিন। ফলে সাসপেনশন তুলে নেওয়া হলেও বিরোধীদের কাঙ্ক্ষিত কোনও বিষয় নিয়েই বিশেষ বিতর্কের অবকাশ থাকছে না।
গত কালই পাঁচ বিরোধী দলের (যাঁদের রাজ্যসভার সাংসদরা সাসপেন্ড হয়েছেন) পক্ষ থেকে কেন্দ্রকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, তাঁরা সংসদীয় নেতা পীযূষ গয়ালের ডাকা বৈঠকে যাবেন না। কংগ্রেস, তৃণমূল এসপি, সিপিআই, সিপিএমের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, বিরোধীদের মধ্যে বিভাজন আনার যে চেষ্টা হচ্ছে, তা কাঙ্ক্ষিত নয়। দ্বিতীয়ত, সাসপেনশন তুলে নিলেই সব মিটে যায়, আলাদা করে বৈঠকে কোনও ফল হবে না। রাজ্যসভার কাজ চালাতে সকালে বিএসি-র বৈঠকেও হাজির ছিলেন না বিরোধী কোনও নেতা।
আজ সকালে বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের মল্লিকার্জুন খড়্গের ঘরে তৃণমূল ছাড়া বাকি প্রধান বিরোধী দলগুলির সংসদীয় নেতারা বৈঠক করেন। বৈঠকের পর খড়্গে বলেন, “সরকারের ডাকা বৈঠকে আমরা যোগ দিচ্ছি না। সংসদে আমরা রাজ্যসভার ১২ জন সাংসদের সাসপেনশন তুলে নেওয়া ও অজয় মিশ্রের পদত্যাগ দাবি করব।” তিনি জানান, বিরোধী সাংসদেরা আগামিকাল মিছিল করে বিজয় চক পর্যন্ত যাবেন।
কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী বলেন, “এই সরকার সংসদে কোনও বিষয়ই তুলতে দিচ্ছে না। লখিমপুর খেরি, বিরোধী সাংসদদের সাসপেনশন, কৃষকদের দাবি নিয়ে আলোচনা করতে চাইছে না সরকার।”
কিন্তু কেন্দ্রের দাবি, বিরোধীরাই সংসদ চালাতে দিচ্ছেন না। এ বিষয়ে কী বক্তব্য? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নে আজ কিছুটা মেজাজ হারান সনিয়া-পুত্র। সাংবাদিককে বলেন, “আপনি কি সরকারের হয়ে কাজ করছেন?” পরে কিছুটা শান্ত হয়ে তাঁর মন্তব্য, “বিরোধীদের দায়িত্ব নয় সংসদ সুষ্ঠু ভাবে চালানো। সেই দায়িত্ব সরকারের। তারা তা পালন করছে না।”