রেলে কমছে খাবার-লাগেজের ওজন, নিয়ম ভাঙলে জরিমানা ছ’গুণ

বরাদ্দের চেয়ে ৩৮ টাকা বেশি খরচ করে রেলের মিলে এখন যে খাবার দেওয়া হয়, তার চেয়ে ওজনে অন্তত ১৫০ গ্রাম কমছে প্রতি প্লেট। আর মালপত্রের ক্ষেত্রে, বুক না করে নির্দিষ্ট পরিমাণের চেয়ে বেশি মালপত্র নিলে এখনকার চেয়ে অনেক বেশি জরিমানা দিতে হবে এ বার থেকে। দূরপাল্লার ট্রেনে অতিরিক্ত মালপত্রের বোঝা কমাতেই এই ব্যবস্থা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৮ ০৩:৪৫
Share:

ওজন নিয়ে এ বার দু’ভাবে কড়া হচ্ছে রেল। এক, যাত্রীর মালপত্রের ওজন। দুই, ট্রেনে বিক্রি করা খাবারের ওজন।

Advertisement

বরাদ্দের চেয়ে ৩৮ টাকা বেশি খরচ করে রেলের মিলে এখন যে খাবার দেওয়া হয়, তার চেয়ে ওজনে অন্তত ১৫০ গ্রাম কমছে প্রতি প্লেট। আর মালপত্রের ক্ষেত্রে, বুক না করে নির্দিষ্ট পরিমাণের চেয়ে বেশি মালপত্র নিলে এখনকার চেয়ে অনেক বেশি জরিমানা দিতে হবে এ বার থেকে। দূরপাল্লার ট্রেনে অতিরিক্ত মালপত্রের বোঝা কমাতেই এই ব্যবস্থা।

যাত্রী পিছু বর্তমানে স্লিপার ক্লাসে ৪০ কেজি ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে ৩৫ কেজি মালপত্র নেওয়া যায়। তার বেশি নিতে হলে তা বুক করতে হয়। তার জন্য মাসুলের নির্দিষ্ট হার রয়েছে। বুক না করে ছাড়ের চেয়ে বেশি মাল নিলে বাড়তি ওজনের জন্য ওই মাসুলের দেড় গুণ জরিমানা নেওয়া হত এত দিন। এ বার নেওয়া হবে পণ্য মাসুলের ছ’গুণ। ধরা যাক, স্লিপার শ্রেণির কোনও যাত্রী ৮০ কেজি মাল নিয়ে ৫০০ কিমি যাবেন। বাড়তি ৪০ কেজি মাল তিনি ১০৯ টাকা মাসুল দিয়ে লাগেজ ভ্যানে নিয়ে যেতে পারেন। কিন্তু বুক না করে ধরা পড়লে জরিমানা দিতে হবে ৬৫৪ টাকা। প্রত্যেক বিমানযাত্রীর ব্যাগপত্র ওজন করা হয়। রেলে তা চালু করা কঠিন। তবে রেল এ বার মালের ব্যাপারে নজরদারি অনেক বাড়াবে।

Advertisement

নজর দেওয়া হচ্ছে খাবারের মান বাড়ানোর দিকেও। এ জন্য নতুন খাদ্যতালিকা চালুর প্রস্তাব দিয়েছে আইআরসিটিসি। বাদ পড়ছে স্যান্ডুইচ, মাখন, স্যুপ বা ব্রেডস্টিকের মতো বেশ কিছু জনপ্রিয় পদ। মান বাড়াতে কমছে খাবারের পরিমাণ। প্রাথমিক ভাবে রাজধানী, শতাব্দীর মতো ২৭টি ট্রেনে তা চালু হতে চলেছে।

খাবারের মান নিয়ে অনেক যাত্রীই ক্ষুব্ধ। আসছে বাসি-পচা বা মেয়াদ ফুরোনো খাবার দেওয়ার অভিযোগও। গত বছর রেলের খাবার নিয়ে তীব্র ভর্ৎসনা করেছিল কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি)। তাদের বক্তব্য, ট্রেনে খাবার নিচু মানের। অথচ দাম অনেক বেশি। জল পানের অযোগ্য। এই ভাবমূর্তি ফেরাতে গত ১১ মে এক দফা সংস্কারের কথা ঘোষণা করেছিল রেল। জানানো হয়, আমিষ-নিরামিষ রান্নার জন্য আলাদা রান্নাঘর–সহ ৩৫টি ‘বেস কিচেন’ হবে। মেনুতে রকমারি পদ কমিয়ে ভাত বা রুটির সঙ্গে সব্জি, মাছ, ডিমের ঝোল বা রাজমার মতো একটি পদই বেশি পরিমাণে দেওয়া হবে।

কিন্তু খাবারের মোট পরিমাণ তবে কমানো হচ্ছে কেন? রেল সূত্রের খবর, বিশেষজ্ঞদের একটি দল সম্প্রতি সমীক্ষা চালিয়ে দেখেছে, ভারতীয়রা এক বেলায় গড়ে ৭৫০ গ্রাম খাবার খান। এখন প্রতি মিলে থাকে ৯০০ গ্রাম খাবার। খরচ পড়ে ১৫০ টাকা। অথচ প্লেটপিছু বরাদ্দ মাত্র ১১২ টাকা। এতে বিপুল লোকসান হয়। এই বোঝা টানতে গিয়েও খাবারের মানে তার প্রভাব পড়ছে। তাই প্রতি মিলে ১৫০ গ্রাম কমানো হবে খাবার। রকমারি পদ নয়, মিলবে আমিষ বা নিরামিষের কম্বো মিল। ডালের পরিমাণ ১৫০ থেকে ১০০ গ্রামে নেমে আসবে। পুষ্টিগুণে যাতে খামতি না হয়, তার জন্য যাত্রীদের ঝোলহীন তরকারি ও ১২০ গ্রাম ঝোলের সঙ্গে হাড় ছাড়া মুরগির মাংস দেওয়া হবে। স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখতে চালু হবে ‘ডিসপোজ়েবল’ প্লেট।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement