বাঁ দিক থেকে, গিরিরাজ সিংহ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শিবরাজ সিংহ চৌহান। —ফাইল ছবি।
তৃতীয় নরেন্দ্র মোদী সরকারের মন্ত্রক বণ্টন হয়েছে সোমবার। তাতে অনেকে যেমন পুরনো দায়িত্ব পেয়েছেন, তেমন অনেকেরই মন্ত্রক বদল হয়েছে। দেখা যাচ্ছে গিরিরাজ সিংহের জায়গায় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানকে। ফলে, বাংলার শাসকদল তৃণমূলকে এ বার ১০০ দিনের কাজের ‘বকেয়া’ টাকা চাইতে গিরিরাজের বদলে যেতে হবে শিবরাজ তথা মামাজির (মধ্যপ্রদেশের রাজনীতিতে শিবরাজ মামাজি নামেই পরিচিত) কাছে। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প তথা রেগা কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের অধীন।
লোকসভা ভোটের প্রচারেও বাংলায় কেন্দ্রীয় ‘বঞ্চনা’র কথা তুলে ধরেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়েরা। তৃণমূলের তরফে এ-ও বলা হয়েছিল, বাংলার বকেয়া পাওনার দাবিতে লোকসভা ভোটের পরেই আন্দোলন শুরু হবে। সেই আন্দোলন এ বার পৌঁছবে শিবরাজের দুয়ারে।
গ্রাফিক- সনৎ সিংহ।
গিরিরাজকে এ বার অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক দেওয়া হয়েছে। তাঁকে বস্ত্র মন্ত্রকের দায়িত্ব দিয়েছেন মোদী। দ্বিতীয় মোদী সরকারের সময়ে গিরিরাজের হাতে ছিল গ্রামোন্নয়ন ও পঞ্চায়েতিরাজ মন্ত্রক। এ বার পঞ্চায়েতিরাজ মন্ত্রক গিয়েছে শরিক দল জনতা দল ইউনাইটেডের হাতে। নীতীশ কুমারের দলের সাংসদ রাজীবরঞ্জন সিংহ পেয়েছেন সেই দায়িত্ব।
বাংলার বকেয়া নিয়ে গিরিরাজের সঙ্গে টক্কর চলেছিল তৃণমূলের। এক দিকে গিরিরাজের অভিযোগ ছিল, তৃণমূল হিসাব দিচ্ছে না বলেই নতুন করে তহবিল দেওয়া হচ্ছে না। পাল্টা তৃণমূলের বক্তব্য ছিল, গিরিরাজ অসত্য বলছেন। সমস্ত হিসাব কেন্দ্রকে দেওয়া হয়েছে। বাংলার গরিব মানুষকে ভাতে মারতেই টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র। গিরিরাজের সঙ্গে দিল্লিতে দেখা করে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে এসেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও।
গত সেপ্টেম্বরে ১০০ দিনের কাজ-সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বকেয়া পাওনার দাবিতে দিল্লিতে আন্দোলন নিয়ে গিয়েছিলেন তৃণমূলের সেনাপতি অভিষেক। সেই সময়ে নয়াদিল্লির কৃষি ভবনে গিরিরাজ ছিলেন না। প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি ছিলেন। তৃণমূলের অভিযোগ ছিল, কৃষি ভবনে থাকলেও নিরঞ্জন জ্যোতি বাংলার সাংসদ এবং ভুক্তভোগীদের সঙ্গে দেখা করতে চাননি। তার পর কৃষি ভবনে অভিষেকদের ধর্না, পুলিশি ধরপাকড় দিল্লিতে শোরগোল ফেলে দিয়েছিল। যদিও এ বারের লোকসভা ভোটে সেই নিরঞ্জন জ্যোতি পরাস্ত হয়েছেন।