মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল ছবি।
গোয়া সফর সেরে ফেরার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঠিক হয়ে গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরবর্তী সফরের দিনক্ষণ। আগরতলায় রবীন্দ্র ভবনের সামনে তৃণমূলের জনসভা থেকে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা, ডিসেম্বরে ত্রিপুরায় আসছেন মমতা। বিবেকানন্দ ময়দানে জনসভা করবেন তিনি।
নীলবাড়ির লড়াইয়ে বিজেপি-কে পর্যুদস্ত করার পর তৃণমূলের নজরে ত্রিপুরা, অসম ও গোয়া। এর মধ্যে তিন দিনের গোয়া সফর সেরে সদ্য ফিরেছেন মমতা। রবিবার, অভিষেকের ঘোষণার মধ্যে দিয়ে জানা গেল, ডিসেম্বর মাসে ত্রিপুরায় আসছেন নেত্রী। কিন্তু নেত্রীর সফরের আগে ত্রিপুরায় বিজেপি-র প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে নিজেদের তুলে আনতে সর্বশক্তি প্রয়োগ করছে তৃণমূল। ইতিমধ্যেই রাস্তার লড়াইয়ে সেই ইঙ্গিত পাওয়া শুরুও হয়েছে বলে দাবি করছেন তৃণমূলের ত্রিপুরার নেতারা। এই অবস্থায় দলের অঘোষিত দু’নম্বর ঘোষণা করলেন, তৃণমূল নেত্রী আসছেন ত্রিপুরায়।
সভার অনুমতি প্রদান নিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে জোর টানাপড়েনে জড়িয়েছে ত্রিপুরার বিজেপি সরকার। তৃণমূলের অভিযোগ, অভিষেককে আটকাতে জোর করে রাজ্যে ১৪৪ ধারা জারি করেছে বিপ্লব দেবের সরকার। এ দিন নিজের বক্তৃতায় সেই প্রসঙ্গ তুলে আনেন অভিষেক। বলেন, ‘‘এখানে সভা করা যাবে না, বলেছিল বিপ্লব দেবের সরকার। আমরা বিচার ব্যবস্থায় চূড়ান্ত আস্থাশীল। হাই কোর্টের হস্তক্ষেপ চেয়েছি। হাই কোর্ট ডান গাল আর বাঁ গাল, দু’গালে দুটো কষিয়ে থাপ্পর মেরে বলেছে, সভা এখানেই হবে। বিজেপি-র বাড়া ভাতে ছাই!’’ ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবকে কটাক্ষ করে অভিষেক বলেন, ‘‘আপনার যা জেদ, আমার তার চেয়ে দু-তিন গুণ বেশি জেদ। নভেম্বরে আরও দু' থেকে তিন বার আসব।’’ এই প্রসঙ্গেই ক’দিন আগে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেছিলেন, ‘বিবেকানন্দ ময়দানে জনসভা করে দেখাক তৃণমূল।’ রবিবার বিপ্লবের বলা সেই মন্তব্যকে তুলে ধরে অভিষেক বলেন, ‘‘আপনি বলেছিলেন, বিবেকানন্দ ময়দানে জনসভা করে দেখাতে হবে! বিপ্লববাবু আপনার সেই মনস্কামনাও আমি পূরণ করে দেব। ডিসেম্বর মাসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসবেন, বিবেকানন্দ ময়দানে সভা হবে।’’
এ দিন অভিষেক বলেন, ‘‘১৪ মাস পর যখন ত্রিপুরায় তৃণমূল সরকার তৈরি হবে, বাংলার সমস্ত জনকল্যাণমূলক প্রকল্প ত্রিপুরাতেও চালু করা হবে।’’ তাঁর কথায়, ত্রিপুরা জুড়ে বিপ্লব দেবের ‘দুয়ারে গুন্ডা’ প্রকল্প চলছে। বাইক বাহিনীর তাণ্ডবে সাধারণ মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত। অভিষেকের চ্যালেঞ্জ, ‘‘আজ যে বাইক বাহিনী তাণ্ডব চালাচ্ছে, আমি কথা দিয়ে যাচ্ছি, তৃণমূল সরকার গঠিত হওয়ার পর, তারাই 'দুয়ারে সরকার'-এর কাজ নিয়ে আপনার কাছে যাবে।’’
বিজেপি-কে 'করোনার চেয়েও ভয়ঙ্কর ভাইরাস' বলে উল্লেখ করে অভিষেক বলেন, ‘‘বিজেপি-র টিকা একটাই, তার নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ডবল ডোজ দিতে হবে। পুরভোটে প্রথম ডোজ, তার পর ১৩ মাস পরে বিধানসভা ভোটের সময় দ্বিতীয় ডোজ।’’