ইউসুফ পাঠান। — ফাইল চিত্র।
পুরসভার জমি দখলের অভিযোগের ঘটনায় গুজরাত হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তৃণমূল সাংসদ তথা প্রাক্তন ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠান। বৃহস্পতিবার তাঁর হয়ে আদালতে সওয়াল করেছেন তাঁর আইনজীবী। পাঠানকে তাদের জমি দখলের অভিযোগে নোটিস পাঠিয়েছিল গুজরাতের বরোদা পুরসভা। সেই নোটিসের বিরুদ্ধেই হাই কোর্টে গিয়েছেন পাঠান।
বরোদা পুরসভার স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান শীতল মিস্ত্রি জানিয়েছেন, বিষয়টি যে হেতু আদালতে বিচারাধীন, তাই দেখা হচ্ছে আদালত কী সিদ্ধান্ত নেয়।
গত ১৩ জুন জমি দখল সংক্রান্ত অভিযোগ তুলেছিলেন বরোদার প্রাক্তন বিজেপি কাউন্সিলর বিজয় পাওয়ার। তাঁর অভিযোগ, বরোদায় নিজের বাংলোর পাশে পুরসভার জমি দখল করে রেখেছেন ইউসুফ। বরোদার তান্দলাজা এলাকায় বাংলো রয়েছে ইউসুফের। সেই বাংলোর পাশে রয়েছে পুরসভার ‘টাউন প্ল্যানিং ২২ ফাইনাল প্লট ৯০’ সংরক্ষিত জমিটি। ২০১২ সালে এই জমিটি পুরসভার থেকে কিনে নিতে চেয়েছিলেন পাঠান। সেখানে নিজের আস্তাবল গড়তে চেয়েছিলেন তিনি। পুরসভা একটি প্রস্তাব পাশ করে সেই জমি প্রাক্তন ক্রিকেটারকে দেওয়ার অনুমোদন দেয়। ২০১৪ সালে বিষয়টি যায় গুজরাত সরকারের কাছে। তখন রাজ্য প্রশাসন সেই প্রস্তাব খারিজ করে দেয়। এখন অভিযোগ, সেই জমির চারপাশে প্রাচীর তুলে তা দখল করে রেখেছেন ইউসুফ। সেই জমি ফেরানোর আর্জি জানিয়েই বরোদা পুরসভার বর্তমান স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান এবং পুরকমিশনারকে চিঠি দিয়েছেন বিজয়। স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, এই নিয়ে পাঠানকে নোটিস পাঠানো হয়েছে। শীঘ্র সিদ্ধান্তও নেওয়া হবে। পুরসভার ওই জমি উদ্ধারের আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি।
এর পর ১৫ জুন বরোদার আর এক কাউন্সিলর নিতিন ডোঙ্গা পুরকমিশনারকে স্মারকলিপি দিয়েছেন। সেখানে তিনি দাবি করেছেন, পাঠানের বিরুদ্ধে জমি দখলের মামলা দায়ের করা হোক। তিনি এ-ও দাবি করেছেন, লোকসভা ভোটে প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন দাখিলের সময় পাঠান পুরসভার এই জমির একাংশের মালিকানা নিজের নামে দেখিয়েছেন। বরোদা পুর কমিশনার জানিয়েছেন, এই নিয়ে পাঠানকে ইতিমধ্যে নোটিস পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।
এ বারের লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে পাঠানকে প্রার্থী করে চমক দিয়েছিল তৃণমূল। গুজরাত থেকে তাঁকে বাংলায় নিয়ে এসে বহরমপুরে ভোটের টিকিট দিয়েছিল তৃণমূল। কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরীর ‘গড়’ বলে পরিচিত বহরমপুরে তিনি ছিলেন দলের তুরুপের তাস। ৫২ হাজারের বেশি ভোটে তিনি অধীরকে হারিয়ে দিয়েছেন। এই জয়ের জন্য দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘরোয়া বৈঠকে তাঁকে ‘জায়েন্ট কিলার’ আখ্যাও দেন। সেই ফলপ্রকাশের পরেই গুজরাতের পুরসভা থেকে নোটিস পাঠানো হয় পাঠানের কাছে। এ বার তিনি দ্বারস্থ হয়েছেন হাই কোর্টের।