সুদীপ বৃহস্পতিবার লোকসভায় জানিয়েছেন, বুলেট ট্রেন বিতর্কে সরকারের সঙ্গে সঙ্ঘাতে যাওয়ার কোনও পরিকল্পনা নেই তৃণমূলের। রেলমন্ত্রী অশ্বিনীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘আপনার বা আপনার দলের সঙ্গে কোনও বিরোধিতার পথে আমরা হাঁটব না। বরং রেলের উন্নয়নে এক সঙ্গে কাজ করব।’’
মোদীর স্বপ্নের বুলেট ট্রেন নিয়ে লোকসভায় প্রশ্ন সুদীপের। ছবি: সংগৃহীত।
ভারতের মাটিতে জাপানের মতো বুলেট ট্রেন চালানো সম্ভব নয়। বৃহস্পতিবার লোকসভার আবার এই দাবি করলেন তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। যিনি ঘটনাচক্রে, সংসদের রেলওয়ে স্থায়ী কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান।
রেল সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুদীপ বুধবার তাঁর বক্তৃতায় লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘‘আপনি আমাকে আগের বার রেলের স্থায়ী (স্ট্যান্ডিং) কমিটির চেয়ারম্যান করেছিলেন। তিন বছর সেই পদে কাজ করেছি। ফলে রেলের অনেক বিষয়ই আমি জানি।’’ এর পরেই নিজের সেই অভিজ্ঞতার প্রসঙ্গ তুলে সুদীপ বলেন, ‘‘(মঙ্গলবার) যা বলেছিলাম তা আবার বলছি, ভারতের মাটিতে জাপানের মতো বুলেট ট্রেন চালানো সম্ভব নয়। তবে ফাস্ট স্পিড ট্রেন চলতে পারে। যার সঙ্গে ইউরো ট্রেনের তুলনা করা যায়।’’
এর পরেই সুদীপ বলেন, ‘‘এমন ইউরো রেলে চড়ে আমি প্যারিস থেকে লন্ডন ১,০৫০ কিলোমিটার পথ মাত্র তিন ঘণ্টায় পাড়ি দিয়েছি।’’
প্রসঙ্গত, ২০১৭-র নভেম্বরে গুজরাতের সবরমতী স্টেশনে ভারতের প্রথম বুলেট ট্রেন প্রকল্পের শিলান্যাস করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। প্রায় ১ লক্ষ হাজার কোটি টাকারও বেশি খরচে তৈরি হচ্ছে মোদীর স্বপ্নের মুম্বই-আমদাবাদ বুলেট ট্রেন প্রকল্প।
রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণোর কাছে মঙ্গলবার সুদীপ এবং তৃণমূলের অপর সাংসদ নুসরত জাহান জানতে চেয়েছিলেন, তীব্র গতিতে ছোটা বুলেট ট্রেনকে ধারণ করে রাখার ক্ষমতা কি রয়েছে এ দেশের মাটির চরিত্রের? জবাবে বুধবার তৃণমূলকে ‘রাজনৈতিক আক্রমণ’ করেন রেলমন্ত্রী। বলেন, ‘‘যে দল মা-মাটি-মানুষের কথা বলে থাকে, তারা এ দেশের মা বা মাটিকে বিশ্বাস করে না। কেমন মানুষ এরা?’’ এর পর তৃণমূল সাংসদদের সঙ্গে রেলমন্ত্রীর একপ্রস্ত কথা কাটাকাটিও হয়।
সুদীপ বৃহস্পতিবার লোকসভায় জানিয়েছেন, বুলেট ট্রেন বিতর্কে সরকারের সঙ্গে সঙ্ঘাতে যাওয়ার কোনও পরিকল্পনা নেই তৃণমূলের। রেলমন্ত্রী অশ্বিনীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘আপনার বা আপনার দলের সঙ্গে কোনও বিরোধিতার পথে আমরা হাঁটব না। বরং রেলের উন্নয়নে এক সঙ্গে কাজ করব।’’ বুধবারের ঘটনার জন্য জন্য রেলমন্ত্রীর কাছে দুঃখপ্রকাশও করেন সুদীপ। তবে সেই সঙ্গেই অশ্বিনীকে তাঁর খোঁচা— ‘‘তবে আপনিও উত্তেজিত ছিলেন। দ্বাদশ লোকসভা (১৯৯৮) থেকে আমি কখনও কোনও মন্ত্রীকে টেবিলে ঘুসি মারতে দেখিনি। সংসদের রেল বিষয়ক স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান থাকাকালীন তিনি রিপোর্টে রেলের প্রায় দেড় লক্ষ শূন্য পদের উল্লেখ করে তা পূরণের কথা বললেও এ বিষয়ে কোনও অগ্রগতি হয়নি বলেও দাবি করেন তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদ সুদীপ।