সংসদে ঢোকার আগে আটকে দেওয়া হল তৃণমূল সাংসদদের।
সাইকেল চালানোর মহড়া সেরে ফেলেছেন তৃণমূল সাংসদেরা! সোমবার দিল্লির সাউথ অ্যাভিনিউর দলীয় কার্যালয় থেকে তৃণমূলের অন্তত ৮ জন সাংসদ সাইকেল চালিয়ে সংসদে গেলেন! পেট্রল, ডিজেল-সহ পেট্রোপণ্যের লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে এ ভাবেই প্রতিবাদ জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের সাংসদেরা। মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে স্লোগান লেখা সাদা জামা পরে, সাইকেলে সংসদে ঢোকার আগেই অবশ্য আটকে দেওয়া হয় তাঁদের।
ডেরেক ও’ব্রায়েন, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, অর্পিতা ঘোষ, নাদিমুল হক, শান্তনু সেন, আবীররঞ্জন বিশ্বাস-সহ জনা আষ্টেক সাংসদ সাইকেল চালিয়ে সংসদ ভবনে গেলেন। বয়স্ক সাংসদেরা সংসদের সামনে থেকে সঙ্গ নেন। সূত্রের খবর, প্রথমে ভাবা হয়েছিল ঘোড়ার গাড়ি (এক্কা) করে সংসদে ঢোকার। তা ‘রাজকীয়’ হয়ে যেতে পারে আশঙ্কায় সাইকেলই বেছে নেওয়া হয়েছে। গাঁধীমূর্তির পাদদেশে সাংসদদের স্লোগান দেওয়ারও কথা।
সোমবার থেকে শুরু সংসদের বাদল অধিবেশন। দুই কক্ষেই পেট্রল, ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে নোটিস দিতে পারে তৃণমূল। রাজ্যসভায় দলের সচেতক সুখেন্দুশেখর রায় ২৬৭ ধারায় সব কর্মসূচি বন্ধ রেখে পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আলোচনার নোটিস দেবেন বলে জানা গিয়েছে। রবিবার তিনি বলেন, “গত মার্চে তৎকালীন তেলমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান লোকসভায় লিখিত জবাবে স্বীকার করেছিলেন, গত ছ’বছরে পেট্রোপণ্যের দাম ৪৯৩ শতাংশ বেড়েছে। আজকের দিনে দেশের সব শহরে পেট্রলের দাম ১০০ টাকা ছাড়িয়েছে। একশো ছুঁতে চলেছে ডিজেলও। অথচ এই উপমহাদেশে অন্যত্র কম দামে পেট্রল বিক্রি হচ্ছে।” সুখেন্দু আরও জানান, ধর্মেন্দ্র জুনে আরও বলেছিলেন, তেল বাবদ যে অতিরিক্ত রাজস্ব আসছে, তা জনকল্যাণমূলক কর্মসূচিতে ব্যয় হচ্ছে। ওই তৃণমূল সাংসদের কথায়, ‘‘অতিরিক্ত রাজস্ব কত আসছে এবং তা দিয়ে কী কী জনকল্যাণমূলক পরিষেবা সরকার দিচ্ছে, তার একটা শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হোক।”
তৃণমূল সূত্রের বক্তব্য, অধিবেশনে প্রত্যেকদিনই জনস্বার্থে যুক্ত কোনও না কোনও বিষয় নিয়ে নোটিস দেওয়া হবে আলোচনার জন্য। তবে সরকার তাদের জন্য অস্বস্তিকর কোনও বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে দেবে না বলে আশঙ্কা। সে ক্ষেত্রে প্রতিদিনই অধিবেশনে হইচইয়ের সম্ভাবনা। রবিবার তৃণমূলের সাইকেল-প্রতিবাদ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে কলকাতায়, রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি তথা সাংসদ অর্জুন সিংহ প্রচ্ছন্ন হুমকির সুরে বলেছেন, “পশ্চিমবঙ্গে ভোট পরবর্তী হিংসায় অনেকে ঘরছাড়া হয়ে দিল্লিতে আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁরা আগামিকাল তৃণমূলকে তাদের আন্দোলনের সময় কিছু বলতে যান কিনা দেখুন।”
রবিবার এনডিএ-র শরিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একসঙ্গে কাজের আহ্বান জানিয়ে তাঁর পরামর্শ, নতুন মন্ত্রীরা যেন সবসময় অধিবেশন কক্ষে থাকেন। প্রত্যেককে সকাল ১১টার মধ্যে কক্ষে পৌঁছে যেতে হবে। আগামিকাল সংসদ শুরু হলে প্রধানমন্ত্রী নতুন মন্ত্রীদের পরিচয় করাবেন।