ফাইল ছবি
বাঙালি দলের তকমা সরিয়ে তৃণমূলকে অসমের দল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চেষ্টা চলছিল। কিন্তু তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের ‘মি. গগৈ’ সংক্রান্ত টুইটে জোর ধাক্কা খেল সেই প্রচেষ্টা। বাঙালি বনাম আহোম টানাপড়েন মাথাচাড়া দিল রাজ্যে। যত ক্ষণে মহুয়া ফের টুইট করে জানান, মি. গগৈ বলতে তিনি শুধুই সাংসদ তথা সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈকে বুঝিয়েছেন, ততক্ষণে জল অনেক দূর গড়িয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত ১৪ জুলাই করা মহুয়ার টুইট থেকে। তাতে তিনি লিখেছেন, “সংসদে নিষিদ্ধ শব্দের তালিকায় থাকা যৌন হেনস্থার বিকল্প শব্দ হল, মি. গগৈ।” অসমে আহোমদের মধ্যে সবচেয়ে প্রচলিত পদবি গগৈ। তাই মহুয়ার টুইটের পরেই সমালোচনার বন্যা বইতে থাকে। আজ মহুয়া লেখেন, “যে সব সঙ্ঘীরা আমার টুইটকে নিয়ে উদ্দেশ্যমূলক ভাবে বিতর্ক সৃষ্টি করছে ও বোঝাচ্ছে যে আমি সব গগৈকে নিশানা করেছি তাদের উদ্দেশ্যে স্পষ্ট করে লিখে দিচ্ছি মিস্টার রঞ্জন গগৈ, রাজ্যসভার সম্মানিত সাংসদ।”
অসমের বিরোধী দল অসম জাতীয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জগদীশ ভুঁইয়া লেখেন, “আপনার নিজের মতপ্রকাশের সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে। কিন্তু দয়া করে পুরো নাম ব্যবহার করবেন, কারণ পদবি অনেক বৃহত্তর গোষ্ঠীকে বোঝায়।” মহুয়া তার জবাবে লেখেন, “টুইট সবসময় প্রসঙ্গভিত্তিক হয়। আমি লোকসভায় রঞ্জন গগৈ ও যৌন হেনস্থার প্রসঙ্গ নিয়ে সরব হয়েছিলাম। শুধু সেই কারণেই ওই শব্দটা অসংসদীয় শব্দের তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।” মহুয়া আরও লিখে দেন, “এ ক্ষেত্রে যে অন্য কাউকে বোঝানো হয়নি তা বলাই বাহুল্য। শুধু সঙ্ঘীরাই এমন ভুল যুক্তি দিতে পারে।”
অনেকে লেখেন, সাংসদ পদে আরও একজন গগৈ (গৌরব গগৈ)ও আছেন। জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র সমালোচক উৎপল বরপুজারী লেখেন, “কোন গগৈয়ের কথা বলছেন সেই নাম না লিখলে সব গগৈয়ের অপমান করা হয়। অসংসদীয় শব্দের তালিকা খুবই হাস্যকর। কিন্তু একই রকম হাস্যকর না হয়েও তার সমালোচনা করা যেত।” বীর লাচিত সেনা দাবি করে, প্রকাশ্যে ক্ষমা না চাইলে মহুয়া মৈত্রকে অসমে নিষিদ্ধ করা হবে।
তৃণমূল সাংসদ সুস্মিতা দেব আনন্দবাজারকে বলেন, “মহুয়া দলের মুখপাত্র নন, তিনি যা বলেছেন- তা তাঁর ব্যক্তিগত মতামত। অবশ্য তিনি পরে রঞ্জন গগৈয়ের নাম স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তার পরেও ইচ্ছে করে এ নিয়ে বিতর্ক চালিয়ে যাচ্ছে।” রঞ্জন গগৈ দিল্লি থেকে আনন্দবাজারকে ফোনে বলেন, ‘‘এই বিষয় নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করতে চাই না।’’