Abhishek Banerjee

TMC in Tripura: মুখে বলুন পদ্ম, ছাপ দিন জোড়াফুলে: অভিষেক

দু’দশক আগে বাংলায় বিধানসভা ভোটে ‘চুপচাপ ফুলে ছাপ’-এর ডাক উঠে এসেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২১ ০৮:০৭
Share:

আগরতলায় সাংবাদিক বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার। নিজস্ব চিত্র।

একই তিরে নিশানা করলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে। যুব নেত্রী সায়নী ঘোষের গ্রেফতারের ঘটনা প্রসঙ্গে সরাসরি নাম করেই বিঁধলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। সেই সঙ্গেই মোদীর ছবি হাতে বা বিজেপির নামে স্লোগান দিয়ে বুথে গিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ভোট দিয়ে আসার জন্য ত্রিপুরার মানুষের কাছে আবেদন জানালেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

দু’দশক আগে বাংলায় বিধানসভা ভোটে ‘চুপচাপ ফুলে ছাপ’-এর ডাক উঠে এসেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে। ত্রিপুরার পুরভোটের আগে অভিষেকের আবেদন অনেকটা সেই কথাই মনে পড়িয়ে দিচ্ছে রাজনৈতিক শিবিরকে!

আগরতলা-সহ ত্রিপুরার ২০টি পুর অঞ্চলে ভোট হবে আগামী বৃহস্পতিবার। প্রচারের শেষ লগ্নে সোমবার আগরতলায় এসে কড়া ভাষায় ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লবকে আক্রমণ শানিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। সেই সূত্রেই অভিষেকের মন্তব্য, ‘‘ত্রিপুরার মানুষের কাছে আমার অনুরোধ, বিপ্লব দেবের তল্পিবাহক হবেন না! হাতে পদ্মফুল বা নরেন্দ্র মোদীর ছবি নিয়ে হোক, বৃহস্পতিবার ভোট-কেন্দ্রে যাবেন। ভিতরে গিয়ে জোড়াফুল চিহ্নের বোতাম টিপে দেবেন। তার পরে আবার বিজেপির নামে জিন্দাবাদ বলতে বলতে ফিরে চলে আসবেন!’’ তাঁর দাবি, অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট হলে পুরভোটে খাতা খুলতেই পারবে না শাসক বিজেপি।

Advertisement

বাংলার যুব তৃণমূল রাজ্য সভানেত্রী সায়নীকে গ্রেফতার ঘিরে তুলকালামের মধ্যেই এ দিন সকালে আগরতলায় পৌঁছন অভিষেক। তাঁর আসার আগেই বিমানবন্দর চত্বরে একটি ব্যাগ ঘিরে বোমাতঙ্ক তৈরি হয় এবং তা নিয়ে বিজেপি-তৃণমূলের চাপানউতোরও বেধে যায়। পরীক্ষায় সেই ব্যাগে অবশ্য সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি। এই ঘটনার উল্লেখ করেই অভিষেকের অভিযোগ, ‘‘ত্রিপুরায় সার্বিক নৈরাজ্যের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। দমন-পীড়নের সব রেকর্ড ভেঙে ফেলেছে বিজেপি।’’ এই পরিবেশ থেকে মুক্তির জন্যই পুরভোটকে কাজে লাগানোর ডাক দিয়েছেন তিনি।

অভিষেকের পদযাত্রার কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছিল প্রশাসনের অনুমতির জটিলতার জেরে। পথসভা করার অনুমতি অবশ্য দিয়েছিল পুলিশ। আগরতলায় ওরিয়েন্ট চৌমোহনীর সেই সভায় যদিও অভিষেক যাননি। সভা থেকে বিজেপিকে কড়া হুঁশিয়ারি দেন সুস্মিতা দেব, সুবল ভৌমিক, কুণাল ঘোষেরা।

রাস্তায় কোনও কর্মসূচিতে না গেলেও আগরতলার একটি হোটেলে দলের নেতা-নেত্রীদের পাশে নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন অভিষেক। সেখানেই ফের বিপ্লবকে ‘বিগ ফ্লপ দেব’ বলে কটাক্ষ করেন তিনি। অভিযোগ করেন, বিপ্লব দেবের উস্কানিতেই সাধারণ মানুষের দুয়ারে গুন্ডা পৌঁছচ্ছে, হেলমেটবাহিনী তাণ্ডব করছে। আবার বিপ্লব এবং মোদী-শাহের নাম না করেও অভিষেকের মন্তব্য, ‘‘এ রাজ্যে এক জন ছোট চোর চুরি করছে। উপরে আরও দু’জন বসে চুরি করছে। ডবল ইঞ্জিন সরকারের মতো ওটা ডবল ইঞ্জিন চোর!’’

সায়নী প্রসঙ্গে অবশ্য সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর নামও শোনা গিয়েছে অভিষেকের মুখে। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘সায়নী ‘খেলা হবে’ বলেছিলেন। তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তা হলে খেলা হবে বলার জন্য প্রধানমন্ত্রীকেও গ্রেফতার করা হবে না কেন?’’

তৃণমূলের যুব নেত্রী সায়নীকে যে ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছিল এবং থানায় ঢুকে দুষ্কৃতী বাহিনী হামলা চালিয়েছিল, তাকে বিজেপির ‘ফ্যাসিস্ত সন্ত্রাস’ বলে সমালোচনা করেছে ত্রিপুরার সিপিএমও। তাদেরও অভিযোগ, পুরভোট যত কাছে আসছে, পুলিশ-প্রশাসনকে ‘নির্লজ্জ ভাবে কাজে লাগিয়ে’ ততই বিরোধীদের দমন করা হচ্ছে। অভিষেকের মতোই সিপিএমের ত্রিপুরা রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরীর দাবি, মানুষ শান্তিতে ভোট দেওয়ার সুযোগ পেলে পুর-নির্বাচনে বিজেপির শোচনীয় ফল হবে!

বাম কর্মী-সমর্থক বা প্রার্থীদের উপরে আক্রমণের পাশাপাশিই হামলা হয়েছে তৃণমূলের রাজ্য নেতা সুবলের বাড়িতেও। তৃণমূলের নির্বাচনী সদর ক্যাম্প তাঁর বাড়িতেই। সন্ধ্যায় সেখানে গিয়েছিলেন অভিষেক। ত্রিপুরা ছাড়ার আগে তাঁর মন্তব্য, ‘‘শেষ দেখে ছাড়ব! ত্রিপুরার মানুষকে বোঝাতে হবে, তৃণমূল সব সময় তাঁদের পাশে রয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement