মানিক সরকার। —ফাইল চিত্র।
মানিক সরকার যে জল্পনা গত কাল উস্কে দিয়েছেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক হিসেবে আগরতলায় এসে তাতে আরও কিছুটা ইন্ধন জোগালেন কুণাল ঘোষ।
প্রাক্তন বাম মুখ্যমন্ত্রী, বর্তমান বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার কাল জানিয়েছেন, তৃণমূলের সঙ্গে জোটের কোনও পরিকল্পনা এখনও করা হয়নি। তবে তেমন সম্ভবনা উড়িয়েও দেননি তিনি। এতে ত্রিপুরায় জল্পনা, তবে কি বাম-তৃণমূল কাছাকাছি আসছে এই রাজ্যে? এর পর দিনই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেকের নির্দেশে এখানে এসে বাংলার তৃণমূল রাজ্য সম্পাদক কুণাল আজ বাম নেতাদের সঙ্গে পুরনো সম্পর্কের কথা তোলেন। জানান, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নৃপেন চক্রবতী তাঁর বাবার কাছে চিকিৎসা করাতেন। সেই সুবাদে বহু বার তাঁদের বাড়িতে গিয়েছেন। ঘটনাচক্রে তাঁকেই এক বিস্ফোরক সাক্ষাৎকার দিয়ে দল থেকে বহিষ্কৃত হন।
বিমানবন্দরে পৌঁছেই কুণাল জানান, সিপিএমের সঙ্গে তাঁর তীব্র মতপার্থক্য থাকলেও মানিক সরকারকে তিনি শ্রদ্ধা করেন। রাজনৈতিক মহলে জল্পনা, অভিন্ন শত্রু বিজেপিকে রাজ্য থেকে হটাতে এ ভাবেই কি কাছাকাছি আসছে দু’টি শিবির? বঙ্গে সিপিএমের তীব্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতা যে ভুল, সেটা মনে
করিয়ে দিয়ে আম বাম সমর্থকদের কাছে পেতে চাইছে তৃণমূল? যে কারণে মানিককে শ্রদ্ধা করার কথা জানিয়েও দল থেকে বিতাড়িত নৃপেনের প্রসঙ্গ টেনে বাম নেতৃত্বকে পরোক্ষে খোঁচা দিতেও ছাড়ছেন না দলের নেতারা? ব্রাত্য বসুরা সম্প্রতি রাজ্যে এসে ঠিক এই হুঁশিয়ারিই দিয়ে গিয়েছেন বঙ্গের ভুল, বামেরা যেন ত্রিপুরাতেও না করে। কুণাল কার্যত সেই সুরটাই ধরে রাখলেন তাঁর সফরে।
আগরতলায় পৌঁছনোর আগেই কুণাল আজ টুইটে জানান, ত্রিপুরার সঙ্গে তাঁর বহু বছরের যোগাযোগ। আগে বহু বার গিয়েছেন। আজ যাচ্ছেন তৃণমূল কংগ্রেসের একজন সৈনিক হিসেবে। অভিষেকের কথা মিলে যাবে। দেড় বছর পর ত্রিপুরায় উন্নয়ন হবে তৃণমূল সরকারের নেতৃত্বে। কুণালের মতে, ত্রিপুরায় উন্নয়নের প্রচুর সুযোগ থাকলেও সেই সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছে বামফ্রন্ট এবং বিজেপি জোটের সরকার। তৃণমূল আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ত্রিপুরায় সরকার গড়ে বাংলা মডেলেই উন্নয়ন নিশ্চিত করবে।
দলীয় সূত্রের খবর, ২০২৩-এর ভোটের লক্ষ্যে তৃণমূলের যুব নেতারা কাজে নেমে পড়েছেন রাজ্যে। তাঁদের উজ্জীবিত করতে ও স্থানীয় নেতাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিতে পাঠানো হয়েছে কুণালকে। দু’সপ্তাহ পর ফের ত্রিপুরা যাবেন অভিষেক নিজে।