লখনউ বিমানবন্দরে প্রতিমা মণ্ডল, দীনেশ ত্রিবেদী, নাদিমুল হক ও আবির বিশ্বাস। নিজস্ব চিত্র
লখনউ শহরে ঢুকতে দেওয়া হল না তৃণমূলের প্রতিনিধিদের। তিন সাংসদ-সহ তৃণমূলের চার জনের প্রতিনিধিদল রবিবার দুপুরে লখনউ পৌঁছলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁদের বিমানবন্দরেই আটকে রাখা হয়। জেলা প্রশাসনের তরফে তাঁদের ফিরে আসার অনুরোধ করা হলেও তৃণমূলের প্রতিনিধিরা সেখানেই ধরনায় বসেন।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এবং এনআরসি-বিরোধী আন্দোলনে নিহতদের পরিজনদের সঙ্গে দেখা করতে চার প্রতিনিধি পাঠিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদীর নেতৃত্বে এই দলে রয়েছেন তিন সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল, আবির বিশ্বাস এবং নাদিমুল হক। কলকাতা থেকে এ দিন দুপুরে লখনউ পৌঁছলে বিমানবন্দরেই তাঁদের ঘিরে ফেলে স্থানীয় পুলিশ। দীনেশ বলেন, ‘‘আমরা বারবার জানতে চাই, কী অপরাধে আমাদের আটকে দেওয়া হচ্ছে? পুলিশ কোনও কারণই জানাতে চায়নি।’’ পরে তৃণমূলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন লখনউয়ের জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার। প্রতিনিধিদলের সদস্য আবিরের অভিযোগ, ‘‘পুলিশ কিছুটা জোর করেই আমাদের একটি জায়গায় আটকে দেয়। বিমানবন্দরের বাইরে বেরোতে বাধা দেয়। সেই সময় দীনেশদা ও প্রতিমাদি’র সঙ্গে ধাক্কাধাক্কিও হয়।’’ এর আগে এনআরসি-বিক্ষোভের সময়ে শিলচর বিমানবন্দরেও তৃণমূলের প্রতিনিধিদের আটকে দিয়েছিল অসম পুলিশ।
উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের তরফে সন্ধ্যার বিমানে লখনউ ছাড়ার অনুরোধ করা হলেও তৃণমূলের প্রতিনিধিরা তাতে রাজি হননি। যোগী আদিত্যনাথ সরকারের এই ভূমিকার নিন্দা করে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের নেতারা নিহতদের পরিজনদের পাশে দাঁড়াতে গিয়েছিলেন। আহতদের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু গণতন্ত্রে বিশ্বাস নেই বলেই বিজেপি প্রশাসন এই ব্যবহার করেছে।’’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য পাল্টা বলেন, ‘‘এখানে বসিরহাট বা সন্দেশখালির ঘটনায় আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াতে বিজেপির প্রতিনিধিদল যখন এসেছিল, তৃণমূলের সরকার তাদের আটকে দিয়েছিল। বলেছিল, ওই সব জায়গায় ১৪৪ ধারা আছে। যাওয়া যাবে না। এখন উত্তরপ্রদেশ সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে কী হবে?’’
বিমানবন্দরে তৃণমূল নেতাদের আটকে দেওয়ার খবর পেয়ে তাঁদের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করেছিল সমাজবাদী পার্টির একটি প্রতিনিধিদল। সেই প্রশ্নে সমাজবাদী নেতা অখিলেশ যাদবকে নিশানা করে বিজেপির উত্তরপ্রদেশ রাজ্য সভাপতি স্বতন্ত্র দেব সিংহ বলেন, ‘‘ওঁরা বরং বাংলায় গিয়ে দেখে আসুন তৃণমূল কী ভাবে সরকার চালাচ্ছে! অন্য দলের পতাকা নিয়ে রাজনীতি করলে সেখানে গলা কেটে দেওয়া হয়। সমাজবাদী পার্টি বাংলায় গিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রার্থী দাঁড় করিয়ে দেখুক!’’