বুধবার ত্রিপুরায় একাধিক সংবাদমাধ্যমের উপর হামলা হয়। —নিজস্ব চিত্র।
তিরিশের দশকের জার্মানিতে হিটলারের জমানার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে ত্রিপুরার বিজেপি সরকার। জার্মানির সে সময়কার মতোই এখনকার ত্রিপুরায় বিজেপি শাসনে গণতান্ত্রিক অধিকার বা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নেই। ত্রিপুরায় একাধিক সংবাদমাধ্যমের উপরে হামলার ঘটনায় সেখানকার বিজেপি শাসকের সঙ্গে এ ভাবেই জার্মান একনায়ক অ্যাডলফ হিটলারের জমানার তুলনা টানল তৃণমূল। বুধবার ওই ঘটনার নিন্দা করে ত্রিপুরার বিপ্লব দেবের সরকারকে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করেন রাজ্যের শাসকদলের নেতা-নেত্রীরা। পাশাপাশি, ত্রিপুরা থেকে বিজেপি সরকারের উৎখাতে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
বুধবার ত্রিপুরায় একাধিক সংবাদমাধ্যমের উপর হামলা হয়। এই ঘটনায় অভিযোগের তির সেখানকার বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। বিজেপি-র সঙ্গে সিপিএমের সংঘর্ষেও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ত্রিপুরা। গোটা ঘটনায় বিপ্লব দেবের সরকারকে নিশানা করেছে তৃণমূল। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত সংবাদমাধ্যমের অফিসেও যান রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ তথা অধুনা তৃণমূলনেত্রী সুস্মিতা দেব। পরে একটি সাংবাদিক সম্মেলনও করেন তাঁরা। তাতে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূলের নেতা-নেত্রীরা। ঋতব্রত বলেন, “ত্রিপুরায় তিরিশের দশকের জার্মানির কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে সেখানকার বিজেপি সরকার। যে সময় গণতান্ত্রিক অধিকার ছিল না। সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতাও ছিল না। সংবাদমাধ্যমের উপর আক্রমণের ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাই।”
ত্রিপুরার বিপ্লব দেবের সরকারকে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করেন রাজ্যের শাসকদলের নেতা-নেত্রীরা। —নিজস্ব চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গে টানা তিন বার ক্ষমতা দখলের পর এ বার অসম, ত্রিপুরার মতো দেশের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতেও জোড়াফুলের কর্তৃত্ব পেতে প্রচেষ্টা শুরু করেছে তৃণমূল। তবে সেই প্রচেষ্টায় ওই রাজ্যে গিয়ে বার বার তৃণমূল নেতা-কর্মী-সমর্থকেরা বিজেপি-র হামলার মুখে পড়েছেন বলে অভিযোগ। হামলা হয়েছিল অভিষেকের কনভয়েও। বুধবার সংবাদমাধ্যমের উপর হামলার ঘটনা নিয়ে আসরে নেমেছেন অভিষেকও। এই ঘটনায় বিপ্লব দেবের সরকারকে সরাসরি আক্রমণ করেন তিনি।
অভিষেকের টুইট, ‘ত্রিপুরার বিজেপি সরকারের মধ্যে হিংসা এবং গুন্ডামি এতটাই মিশে গিয়েছে যে আজ (বুধবার) গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভের উপরেও নৃশংস হামলা হয়েছে। সংবাদমাধ্যমের পাশে আমরা রয়েছি এবং ত্রিপুরা থেকে এই দুয়ারে গুন্ডা সরকারের মডেলকে উৎখাত করতে লড়াই চালিয়ে যাব।’
অভিষেকের মতোই হামলার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তৃণমূল নেতা মুকুল রায়ও। এ নিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তদন্তের দাবিও করেছেন মুকুল।