তৃণমূল প্রার্থীকে সুপারের দফতর থেকে বার করে দিচ্ছে পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত।
পুরভোটের দিন যত কাছাকাছি আসছে, অশান্তির ঘটনা বাড়ছে ত্রিপুরায়। আগরতলায় এ বার তৃণমূল কংগ্রেসের মহিলা প্রার্থীকে পুলিশ সুপারের দফতর থেকে পাঁজাকোলা করে বার করে দেওয়ার ঘটনা ঘিরে বিতর্ক বাধল। তৃণমূলের অভিযোগ, ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে পুরভোটে বিরোধীদের অস্তিত্ব মুছে দিতে চাইছে বিজেপি। শাসক দল অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
আগরতলার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী পান্না দেবের অভিযোগ, তাঁর এলাকায় প্রচারে বাধা দেওয়া হচ্ছে। ফ্লেক্স-ফেস্টুন ছিঁড়ে দেওয়া হচ্ছে। তাঁর প্রচারের সময়ে সোমবারও বিজেপি-আশ্রিত দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়েছে। আগরতলা পূর্ব থানায় অভিযোগ জানাতে গেলেও পুলিশ তা নেয়নি বলে পান্নার দাবি। তার পরেই তিনি গিয়েছিলেন পুলিশ সুপারের দফতরে। কিন্তু বিনা অনুমতিতে সরকারি দফতরে ঢোকার কারণ দেখিয়ে মহিলা পুলিশকর্মীদের দিয়ে তাঁকে পাঁজাকোলা করে বাইরে বার করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভও দেখান স্থানীয় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা।
সাংসদ সুস্মিতা দেব ও তৃণমূলের রাজ্য নেতা সুবল ভৌমিককে পাশে নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন এ দিন আগরতলায় বলেন, ‘‘ভয়ের পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে। পুরভোটে বিরোধীদের প্রতিদ্বন্দ্বিতার অধিকার কেড়ে নিতে চাইছে বিজেপি। ত্রিপুরার পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠছে।’’ প্রসঙ্গত, আগরতলা-সহ ২০টি পুর-এলাকার মোট ৩৩৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১১২টি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে নিয়েছে শাসক দল। গা-জোয়ারি করে ওই ওয়ার্ডগুলি দখল করা হয়েছে বলে বিরোধীদের অভিযোগ।
ভোটে সন্ত্রাসের অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি। মহিলা প্রার্থীকে পাঁজাকোলা করে বার করে দেওয়ার ঘটনা প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপি নেতা নব্যেন্দু ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘‘পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করতে গেলে আগাম সময় নিতে হয়। ওই নেত্রী তা করেননি। তা ছাড়া, ওঁর বিরুদ্ধে খুনের মামলাও আছে। এখন জামিনে রয়েছেন।’’ পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের প্রতিক্রিয়া, “তৃণমূল বাংলা থেকে সমাজবিরোধীদের নিয়ে গিয়ে ত্রিপুরায় তাদের ভিত শক্ত করার চেষ্ট করছে। তাতে সেখানকার সাধারণ শান্তিপ্রিয় মানুষ ভয়ে আছেন। আমাদের কাছে ছবি আছে— এখানকার এক কুখ্যাত দুষ্কৃতী ত্রিপুরার পুরভোটে তৃণমূলের সমর্থনে প্রচার করছেন। অপরাধীরা সেখানে পৌঁছে গেলে এবং নিয়ম বহির্ভূত ভাবে আন্দোলন করলে পুলিশ যা করার করবেই।’’ তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে বিরোধী দলের রাজ্য সভাপতিকে পুলিশ যদি চ্যাংদোলা করে তুলে নিতে পারে, তা হলে পুরভোটের এক জন প্রার্থী বা অন্য কেউ, কী এমন ব্যাপার?”