নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সরাসরি কটাক্ষ করে বছর শুরু করল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূল কংগ্রেস। গত কয়েক বছরে মোদী সরকারের দেওয়া ছ’টি প্রতিশ্রুতি সামনে এনে তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন আজ টুইট করেন, ‘প্রধানমন্ত্রী, আপনি বাইশের আগে ছ’টি প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছিলেন। তার একটিও করতে পারেননি।’
রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, গত কয়েক মাসে রাহুল গান্ধী সম্পর্কে তৃণমূল কংগ্রেসের ‘অ্যালার্জি’র দিকটি যত বেশি সামনে এসেছে, ততই প্রশ্ন উঠেছে তৃণমূলের বিজেপি-বিরোধী লড়াই বিশেষত নরেন্দ্র মোদীকে সরাসরি আক্রমণের সদিচ্ছা নিয়ে। কংগ্রেস প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে, রাজ্যে রাজ্যে কংগ্রেসকে হীনবল করার চেষ্টা করে মোদীরই কি সুবিধা করে দিতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস? পাশাপাশি বেশ কিছু ক্ষেত্রে মমতা বা তাঁর দল সরাসরি কেন মোদীকে রাজনৈতিক আক্রমণ করছেন না, সে প্রশ্নও তুলেছে তারা। নতুন বছরের শুরুতেই এই অভিযোগ এড়ানোর কৌশল নিয়েছে তৃণমূল। কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করা, দেশের অর্থনীতিকে পাঁচ লক্ষ কোটি ডলারে পৌঁছে দেওয়া, প্রত্যেকটি বাড়িতে বিদ্যুৎ, শৌচালয়ের প্রতিশ্রুতি, দেশে বুলেট ট্রেন চালানোর মতো মোদীর অঙ্গীকারগুলি সামনে নিয়ে এসেছে তারা। ডেরেকের কথায়, “নরেন্দ্র মোদী গত সাত বছরে সংসদে একটি প্রশ্নেরও জবাব দেননি। অথচ মনমোহন সিংহকে প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় ২৬টি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের জবাব দিতে দেখা গিয়েছে।” ডেরেকের অভিযোগ, সংসদেই শুধু নয়, সংবাদমাধ্যমের সামনেও মুখে কুলুপ এঁটে থেকেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাই নতুন বছরে তিনি যাতে তাঁর প্রতিশ্রুতিভঙ্গের দায় নিজের ঘাড়ে নেন, তার জন্য সংসদের ভিতরে ও বাইরে তারা চাপ তৈরি করবে বলে দলীয় সূত্রের খবর।
সংসদের সাম্প্রতিক শীতকালীন অধিবেশনে রাজ্যসভা থেকে সাসপেন্ড হওয়া সাংসদদের ফিরিয়ে নেওয়ার দাবিতে গান্ধী মূর্তির সামনে লাগাতার ধর্নায় বসতে দেখা গিয়েছে প্রায় সব বিরোধী দলের সাংসদদের। একই ভাবে লখিমপুর খেরি কাণ্ডে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর অজয় মিশ্রর পদত্যাগ চেয়েও যৌথ আন্দোলন হয়েছে। যদিও কংগ্রেসের ডাকা বৈঠক এড়িয়ে গিয়েছে তৃণমূল। আসন্ন বাজেট অধিবেশনেও কি একযোগে নামতে দেখা যাবে বিরোধীদের? এই প্রশ্নের উত্তরে তৃণমূল নেতৃত্ব সংসদের ভিতরে বিরোধীদের সমন্বয় অটুট রাখার কথা বলেছেন ঠিকই। তবে রাহুল গান্ধীর নাম না করে তাঁকে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি। কারও নাম না করে তৃণমূলের এক নেতার কথায়, “ওঁরা আগে নিউ ইয়র্ক থেকে ছুটি কাটিয়ে ফিরুন, তার পরে দেখা যাবে!”