ফাইল চিত্র
লকডাউনে কাজ হারিয়ে ঘরে ফিরতে বাধ্য হওয়া বাংলার শ্রমিকেরা কেন প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ রোজগার যোজনার সুবিধা পেলেন না, তা ঘিরে কেন্দ্র-কংগ্রেস দ্বন্দ্বের মধ্যে তরজায় জড়াল তৃণমূলও। তবে তাদের নিশানায় ছিলেন লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা অধীর চৌধুরী।লোকসভায় জিরো আওয়ারে অধীর বলেন, ঘরে ফিরতে বাধ্য হওয়া পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ১২৫ দিনের কাজের প্রকল্প ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। বরাদ্দ হয়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকা। তার সুবিধা পেয়েছে ছয় রাজ্যের ১১৬টি জেলা। অথচ তার মধ্যে বাংলার কোনও জেলা নেই! তাঁর প্রশ্ন, “যেখানে শুধু আমার নিজের জেলা মুর্শিদাবাদেই দেড় লক্ষ কর্মী কাজ হারিয়ে ফিরতে বাধ্য হয়েছেন, সেখানে পশ্চিমবঙ্গের একটি জেলাও ওই প্রকল্পের সুবিধা পাবে না কেন?”
জিরো আওয়ারে কোনও সাংসদের তোলা অভিযোগের জবাব দিতে দেখা যায় না কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে অধীরের বাংলায় বলা শ্রমিক কল্যাণ সংক্রান্ত বক্তব্য শেষ হতেই স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তিনি স্পিকারকে বলেন, অধীরের অভিযোগের জবাব দিতে চান তিনি। নির্মলা বলেন, ‘‘গত ২০ জুন দেশের ১১৬টি জেলার নাম ঘোষণা করা হয়েছিল। শর্ত ছিল, যে সমস্ত জেলায় অন্তত ২৫ হাজার কর্মী ফিরেছেন, শুধু মাত্র সেগুলিই এই প্রকল্পের আওতায় আসতে পারবে। তার জন্য ওই সমস্ত জেলার বিশদ তথ্য নির্দিষ্ট দিনের মধ্যে জমা দেওয়ার কথা ছিল সমস্ত রাজ্যের।’’ এর পরই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে নির্মলার পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘যদি ২৫ হাজার কিংবা তার বেশি শ্রমিক ফিরে আসা জেলা সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট রাজ্যই না-জানায়, তা হলে কেন্দ্রের কী করণীয়? ওই রাজ্যে কত জনকে শেষমেশ ফিরতে দেওয়া হয়েছে বা হয়নি, সেটিও তো বিবেচ্য বিষয়।’’
অধীরের অভিযোগ ও সঙ্গে সঙ্গেই নির্মলার উত্তর দেওয়া-এই দু’টি ঘটনার মধ্যে গড়াপেটা রয়েছে বলে লোকসভার ভিতরে ও বাইরে সরব হন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। লোকসভার ভিতরে কল্যান কংগ্রেসকে আক্রমণ করে বলেন, ‘‘পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ট্রেন-বাসের ভাড়া মিটিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিল কংগ্রেস। কিন্তু তেমন কোনও উদাহরণ তাঁদের চোখে পড়েনি। কংগ্রেস-শাসিত রাজস্থান থেকে যে সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিক পশ্চিমবঙ্গে ফিরেছেন, তাঁদের ভাড়া হিসেবে ৩৬ লক্ষ টাকা গুনেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। কংগ্রেস একটি পয়সাও দেয়নি।’’ আর লোকসভার বাইরে কল্যাণ বলেন, ‘‘এখন বিজেপির সবচেয়ে কাছের লোক অধীর চৌধুরী! অধীর নিজের আসন বাঁচাতে যে সিপিএম ও বিজেপির সঙ্গে আঁতাত করেন, তা সবাই জানে। অধীর যদি কংগ্রেসের নেতা হয়, তা হলে আগামী পঁচিশ বছরে কংগ্রেস ক্ষমতায় আসতে পারবে না।’’