রাফাল নিয়ে চুপ মায়া, মমতারা

রাফাল-রায় নিয়ে বিজেপির আক্রমণের জবাব দিয়ে পাল্টা আক্রমণে নামলেন রাহুল গাঁধী। বিরোধীদের একজোট করে সংসদ ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে যৌথ সংসদীয় কমিটির (জেপিসি) দাবিতে চাপ বাড়াল কংগ্রেস।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:৫৮
Share:

রাফাল-রায় নিয়ে বিজেপির আক্রমণের জবাব দিয়ে পাল্টা আক্রমণে নামলেন রাহুল গাঁধী। বিরোধীদের একজোট করে সংসদ ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে যৌথ সংসদীয় কমিটির (জেপিসি) দাবিতে চাপ বাড়াল কংগ্রেস। তবে এ বারেও তাদের সঙ্গী হননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মায়াবতী ও অখিলেশ যাদবরা।

Advertisement

সুপ্রিম কোর্টে রাফালের রায় আসতেই একে নিজেদের ‘জয়’ হিসেবে তুলে ধরে উৎসবে মেতেছে বিজেপি। রাহুল ‘মিথ্যা’ বলছেন বলে গোটা দেশে প্রচারও শুরু হয়েছে। তবে রায়ের ‘ভুল’ ধরিয়ে এ দিনই রাহুল অভিযোগ করেন, নরেন্দ্র মোদী সরকার শীর্ষ আদালতকে বিভ্রান্ত করেছে। সেই সূত্র ধরে আজ সংসদে সরকারের বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস দিয়েছে কংগ্রেস। বিজেপিও রাহুলের বিরুদ্ধে পাল্টা স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস দিয়েছে। তাদের দাবি, রাফাল নিয়ে সংসদকে বিভ্রান্ত করেছেন রাহুল।

সংসদ ভবনে বিরোধীদের সাংবাদিক বৈঠকে বাম, এনসিপি, আরজেডির মতো দলগুলি হাজির থাকলেও ছিল না তৃণমূল, সমাজবাদী পার্টি ও বিএসপির কোনও প্রতিনিধি। সুপ্রিম কোর্টের রায় আসার পরেই অখিলেশ বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, এই মুহূর্তে জেপিসির দাবিতে সায় নেই তাঁদের। তাঁর যুক্তি, রাফাল নিয়ে জেপিসির দাবি তখনই তোলা হয়েছিল, যখন সুপ্রিম কোর্টে মামলা পৌঁছয়নি। কিন্তু এখন সর্বোচ্চ আদালতের রায় আসার পরে এই কমিটি গড়ার অবকাশ নেই। এর পরেও রাফাল নিয়ে কোনও অভিযোগ থাকলে কেউ সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারেন। আর মায়াবতীর দলের সাংসদরা জানাচ্ছেন, রাফাল নিয়ে কংগ্রেসের পাশে দাঁড়ানোর কোনও নির্দেশ এখনও নেই। তৃণমূল কেন নেই? দলের এক সাংসদের মন্তব্য, ‘‘আমরা জেপিসিতে বিশ্বাস করিনা। এর আগে যত বার জেপিসি গঠন হয়েছে, কাজের কাজ হয়নি।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: ৭০ নেতার নিশানায় একা রাহুল

গত কালই অরুণ জেটলি জেপিসির সম্ভাবনা খারিজ করে যুক্তি দিয়েছিলেন, সেখানে বিভিন্ন দলের নিজস্ব মতামত চলে আসে। তাঁর মতে, রাফাল নিয়ে কোর্টের রায়ের পরে আর বিতর্ক থাকতে পারে না। কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম অবশ্য জেটলির যুক্তিকে খারিজ করে দিয়েছেন। তাঁর মতে, অতীতে অনেক সময়েই সংসদ সুপ্রিম কোর্টের রায়ের সঙ্গে ভিন্ন মত পোষণ করেছে। টুইটারে চিদম্বরম লিখেছেন, ‘‘অর্থমন্ত্রীর প্রশ্ন, যে বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়ে দিয়েছে, রাজনীতিকদের নিয়ে গঠিত কমিটির কি সেই বিষয়ে মত দেওয়ার যোগ্য? তা হলে, যখন তফসিলি জাতি-জনজাতি আইনে সুপ্রিম কোর্টের রায় মেনে না নিয়ে সরকার ও সংসদ সংশোধনী নিয়ে এল, তখন কি রাজনীতিকেরা শীর্ষ আদালতের রায়ের পুনর্বিবেচনা করেননি?’’ জেটলির যুক্তিকে ‘হাস্যকর’ মনে করে তৃণমূলও। রাফাল নিয়ে বেশ কয়েকমাস ধরেই আক্রমণাত্মক রাহুল। ‘চৌকিদার চোর’ এই স্লোগান দেশের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে দিয়েছেন। তার পরেও বিরোধী শিবিরের কয়েকটি দলের এগিয়ে না আসায় কংগ্রেসের অনেকেই বিস্মিত। ঘরোয়া মহলে তাঁদের প্রশ্ন, অনিল অম্বানীর সঙ্গে যোগাযোগের খাতিরেই এই অবস্থান নয় তো? তবে প্রকাশ্যে কংগ্রেস কোনও বিরূপ প্রতিক্রিয়া দিতে চাইছে না। তাঁদের মতে, লোকসভা ভোটে সবাই মিলে মোদীকে হারানোই লক্ষ্য। ফলে বিরোধীদের একজোট হওয়া প্রয়োজন। কংগ্রেস নেতাদের আশা, রাফাল নিয়ে আজ যাঁরা সঙ্গে নেই, অদূর ভবিষ্যতে তাঁরা আসতেও পারেন। কংগ্রেস তাই রাফাল-অস্ত্রেই বিজেপিকে ঘায়েল করতে আজও এগারোটি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement