ফাইল ছবি
একশো দিনের কাজ নিয়ে আজ দিল্লিতে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহের কাছে একই দিনে পৌঁছলো তৃণমূল কংগ্রেস এবং পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির প্রতিনিধি দল। তৃণমূল যখন এই প্রকল্পে কেন্দ্রের বকেয়া অর্থ রাজ্যকে পাঠানোর দাবিতে সরব হয়েছে, সেখানে বিজেপির পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কাছে পাল্টা অভিযোগ— শাসক দলের মদতে একশো দিনের কাজ নিয়ে বিপুল দুর্নীতি চলছে বাংলায়। বিজেপির দাবি, আগে স্বচ্ছতা ফিরুক তার পরে যেন টাকা দেয় কেন্দ্র। দুই শিবিরের চাপানউতোরে আরও অনিশ্চয়তা বাড়ল এই প্রকল্পে যুক্ত প্রকৃত গরিব মানুষদের।
তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় আজ দশ জনের সংসদীয় প্রতিনিধি দল নিয়ে গিয়েছিলেন গিরিরাজের কাছে। তাঁরা একটি স্মারকলিপি দেন মন্ত্রীকে। সুদীপের বক্তব্য, গত ডিসেম্বর মাস থেকে কেন্দ্র এই প্রকল্পে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। তার ফলে এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত গরিব মানুষেরা বিপদে পড়েছেন। নবান্নের হিসাব অনুযাযী এই মুহূর্তে এই প্রকল্পের ৭,১৩০ কোটি টাকা কেন্দ্রের কাছে বকেয়া রয়েছে। সেই টাকা অবিলম্বে গিরিরাজকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করে প্রতিনিধি দলটি। জবাবে মন্ত্রী বলেন, পশ্চিমবঙ্গের সমস্যা নিয়ে তিনি ওয়াকিবহাল। ওই রাজ্যের একশো দিনের কাজে কিছু অসঙ্গতি রয়েছে। যা ঠিক না-করা পর্যন্ত টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। পাল্টা সুদীপের সওয়াল, সামান্য অসঙ্গতির জন্য রাজ্যের লাখ লাখ মানুষ, যাঁরা এই সামান্য অর্থে জীবিকা নির্বাহ করেন, তাঁরা কেন ভুক্তভোগী হবেন? অবিলম্বে বকেয়া অর্থের অন্তত অর্ধেক দিয়ে দেওয়ার দাবি করেন সুদীপ। তৃণমূল নেতৃত্ব মনে করছেন কেন্দ্রের এই আচরণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ছাড়া কিছু নয়। কিন্তু মন্ত্রকের পাল্টা যুক্তি, পশ্চিমবঙ্গে দুর্নীতির অভিযোগ শুনে কেন্দ্রীয় কর্তারা রাজ্যে গিয়ে সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখে তার সত্যতাও পেয়েছেন। একশো দিনের কাজে রুল নম্বর ২৭ অনুযাযী যদি কোনও রাজ্য কেন্দ্রীয় নির্দেশিকা মেনে না চলে সে ক্ষেত্রে সেই রাজ্যের বকেয়া অর্থ আটকে দেওয়ার অধিকার রয়েছে কেন্দ্রের। এ ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।
গিরিরাজ আজ তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধি দলকে জানিয়েছেন, তাঁদের দেওয়া স্মারকলিপির জবাব দু’দিনের মধ্যে কেন্দ্র পাঠাবে। পাশাপাশি মন্ত্রী এই প্রস্তাবও দেন, কেন্দ্র এবং রাজ্যের সংশ্লিষ্ট সচিবরা যৌথ ভাবে বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করুন। জানা গিয়েছে, ১৫ দিনের মধ্যেই কেন্দ্র ও রাজ্যের আমলা স্তরে এই বৈঠক হতে পারে। গোটা বিষয়টি নিয়ে মে এবং জুন মাসে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীকে দু’টি চিঠি দিয়েছিলেন। আজ তৃণমূল তাদের স্মারকলিপির সঙ্গে ওই দুটি চিঠিও কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়নমন্ত্রীকে দিয়েছেন।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।