গ্রাফিক শৌভিক দেবনাথ
টিকিটের তারিখ ৩০১৩ সাল! ১০০ বছর পরের!
এমনই উদ্ভট টিকিট দেওয়ায় রেলকে গুনাগার দিতে হল ১৩ হাজার টাকা। উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুরের ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের নির্দেশে ওই টাকা পাচ্ছেন ভোগান্তির শিকার হওয়া যাত্রী। পাঁচ বছর পর হলেও অবশেষে আদালতে সুবিচার পেয়ে খুশি অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ওই যাত্রী।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর সাহারানপুর-জুনপুর হিমগিরি এক্সপ্রেসের টিকিট কাটেন সেখানকার জে ভি জৈন ডিগ্রি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক বিষ্ণুকান্ত শুক্ল। রেলের কাউন্টার থেকেই টিকিট কাটেন বলে সেটি খুঁটিয়ে পরীক্ষাও করেননি। কিন্তু ওই টিকিট নিয় ট্রেনে উঠেই ঘটে বিপত্তি।
আরও পড়ুন: সংস্কারি সন্তানের জন্ম দিতে না পারলে বন্ধ্যা থাকুন, বিতর্কিত মন্তব্য বিজেপি বিধায়কের
ট্রেনের টিকিট পরীক্ষক দেখেন, টিকিটে ভ্রমণের তারিখ লেখা রয়েছে ১৯.১১.৩০১৩। সেই টিকিট দেখেই বিষ্ণুকান্তবাবুকে জরিমানা দিতে হবে বলে দাবি করেন তিনি। রেলের কাউন্টার থেকে কাটা টিকিট, এবং সেখানেই তারিখ ছাপায় ভুল হয়েছে বলে বারবার জানালেও বিষ্ণুবাবুর কথায় কর্ণপাত করেননি টিকিট পরীক্ষক। শুধু তাই নয়, জরিমানা না দেওয়ায় তাঁকে ট্রেন থেকে নামিয়েও দেওয়া হয়।
মামলার রায়ের পর বিষ্ণুকান্ত শুক্ল সে দিনের ঘটনার বিবরণ দিয়ে বলেন, ‘‘আমি অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক। প্রবীণ নাগরিক। বারবার টিটিই-কে বোঝানোর চেষ্টা করি, আমি বিনা টিকিটে বা জাল টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণ করার মতো লোক নই। কিন্তু তিনি আমার কোনও কথাই না শুনে ৮০০ টাকা জরিমানা দাবি করেন। আমি তা না দেওয়ায় ট্রেন থেকে নামিয়ে দেন। মাঝ রাস্তায় নেমে মহা সমস্যায় পড়ি। আমার বন্ধুর স্ত্রী-বিয়োগ হওয়ায় তাঁর বাড়িতে যাচ্ছিলাম। সেখানেও আর যেতে পারিনি।’’
আরও পড়ুন: ভিডিও ভাইরাল, পরিবার ফিরে পেলেন নব্বই বছরের বৃদ্ধ!
এরপর ওই ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ এবং রেলের দেওয়া টিকিট-সহ ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা দায়ের করেন বিষ্ণুকান্ত শুক্ল। পাঁচ বছর পর মঙ্গলবার সেই মামলার রায়ে সাহারানপুরের ক্রেতা সুরক্ষা আদালত রেলকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা হিসেবে বিষ্ণুকান্ত শুক্লকে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। একই সঙ্গে বিষ্ণুকান্তকে আরও তিন হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়।
এই মামলায় আদালতের পর্যবেক্ষণ, যাত্রার মাঝপথে একজন প্রবীণ নাগরিককে ট্রেন থেকে নামিয়ে দেওয়া অমানবিকই শুধু নয়, শারীরিক ও মানসিক হেনস্থার সমান। রেলের কাউন্টার থেকে কোনও যাত্রী টিকিট নিয়ে খুঁটিয়ে না দেখলেও রেল তার দায়িত্ব এড়াতে পারে না। এটা স্পষ্ট যে রেলের গলদেই টিকিটের তারিখ ভুল ছাপা হয়েছে। যদিও এ বিষয়ে রেলের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।