অবশেষে বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের মুখোমুখি হলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের প্রতিনিধি দল। দু’পক্ষের বৈঠকের পর টানা ৭২ দিনের জট কাটার সম্ভাবনা দেখছে এফটিআইআই।
এসএম খান, এস নাগনাথন, আলসুল সিংহ— তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল বৃহস্পতিবার রাতে পুণে পৌঁছয়। আলোচনা শুরুর আগেই এসএম খান জানান, নিরপেক্ষ ভাবে সবার বক্তব্য শুনতে চান তাঁরা। বৈঠকের পরে তিনি বলেছেন, ‘‘শিক্ষকমণ্ডলী, অশিক্ষক কর্মী, পড়ুয়া, ডিরেক্টর সবার সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। কোথায় কোথায় সমস্যা রয়েছে বুঝতে পেরেছি। বৈঠক খুবই ভাল হয়েছে। আগামী সোমবারের মধ্যে তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রকের কাছে রিপোর্ট জমা দেব।’’ আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে বলে মত ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিদেরও।
এফটিআইআই-এর পরিচালন পর্ষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে বিজেপি-ঘনিষ্ঠ গজেন্দ্র চৌহানকে সরাতে ৭২ দিন যাবৎ আন্দোলন চালাচ্ছে পড়ুয়ারা। ডিরেক্টর প্রশান্ত পাথরাবের অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার গভীর রাতে ক্যাম্পাসে পুলিশ ঢুকে পাঁচ ছাত্রকে গ্রেফতার করার পর সেই আন্দোলনের মাত্রা আরও বেড়েছে। ১২ জুন থেকে চলা এই অচলাবস্থা মেটাতে বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে মধ্যস্থতা করার আবেদন জানিয়েছিলেন ছাত্ররা।
এরই মধ্যে আজ মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন কংগ্রেসের শাখা সংগঠন এনএসিউআই-এর সমর্থকরা। ‘গজেন্দ্র চৌহান হাটাও, এফটিআইআই বাঁচাও’ স্লোগান তোলেন তাঁরা। শুক্রবার পুণের ছাত্রদের প্রতি সমর্থনের সুর শোনা যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলাতেও। মমতার টুইট, ‘‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে রাজনীতির উর্ধ্বে রাখতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত এই সমস্যা মেটাতে এগিয়ে আসা।’’ তিনি এও বলেছেন, ‘‘আমি নিজে এক সময় ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। আমি এই আন্দোলন সমর্থন করি।’’
ছাত্রদের বিরুদ্ধে তাঁর অফিস ঘেরাও করে হেনস্থার যে অভিযোগ তুলেছেন প্রশান্ত পাথরাবে, তা গত কালই খারিজ দিয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা। তবে সোমবার রাতের ওই ঘটনায় জড়িত ১৭ ছাত্রের বিরুদ্ধে এফটিআইআই কর্তৃপক্ষ মামলা তুলে নেবেন কি না তা নিয়ে মুখ খোলেননি সরকারি প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। চাপের মুখে পড়ে পাথরাবে ছুটিতে চলে যাচ্ছেন এমন কথা শোনা যাচ্ছিল গ্রেফতার হওয়া পাঁচ ছাত্রের জামিনের পর। তবে তা গুজব বলেই উড়িয়েছেন এফটিআইআই-এর ডিরেক্টর।
ছাত্রদের আন্দোলন সাফল্যের মুখ দেখবে বলে আশাবাদী ছাত্র পরিষদের প্রতিনিধি বিকাশ উরসও। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘শেষ পর্যন্ত মন্ত্রক আমাদের সমস্যার কথা শুনল। আমরা খুবই খুশি।’’