এক সপ্তাহের মধ্যে বদরপুরে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের মেরামতির কাজ শুরু না হলে অনশনে বসার হুমকি দিলেন সমষ্টির বিধায়ক জামালউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, ‘‘প্রতি দিন জাতীয় সড়কে নতুন নতুন গর্ত তৈরি হচ্ছে। করিমগঞ্জ থেকে বদরপুরের ২৩ কিলোমিটার রাস্তা যেতে ১ ঘণ্টা সময় লাগছে। বেহাল রাস্তার জন্য দুর্ভোগে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। কেন্দ্রীয় সরকার সে দিকে নজর দিচ্ছে না।’’ তাঁর হুঁশিয়ারি— এক সপ্তাহের মধ্যে জাতীয় সড়কে মেরামতির কাজ শুরু না হলে তিনি অনশনে বসবেন। এ বিষয়ে বিভিন্ন দল সংগঠনের সাহায্যও চান বিধায়ক। অভিযোগ উঠেছে, জাতীয় সড়ক মেরামতির জন্য ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু দু’বার দরপত্র আহ্বান করলেও কোনও ঠিকাদার এগিয়ে আসেননি। এ জন্য আঙুল উঠছে স্থানীয় বিধায়কের দিকেই। অভিযোগ, তিনি বরাত পেলে তাঁকে প্রকল্পের ৪০ শতাংশ টাকা দিতে হবে বলে দাবি করছেন। সে জন্যই ঠিকাদাররা বদরপুরে বেহাল জাতীয় সড়কের মেরামতির কাজে দরপত্র জমা দিচ্ছেন না। তবে তাঁর বিরুদ্ধে এ সব অভিযোগকে ‘মনগড়া গল্প’ বলে উড়িয়ে দেন বিধায়ক জামালউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘‘এলাকার অনেক নেতা থানা-সহ বিভিন্ন সরকারি অফিস থেকে মাসোহারা নেন। আমি কখনও কারও কাছ থেকে এক টাকা নিয়েছি বলে প্রমাণ দিতে পারলে রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নেব।’’
বদরপুর-জোয়াই ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক মেরামতিতে কেন্দ্রের নজর নেই বলে যে অভিযোগ বিধায়ক তুলেছেন, তা মিথ্যা বলে চিহ্নিত করেন বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি রথীন্দ্র ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘করিমগঞ্জের ওই জাতীয় সড়কটি কেন্দ্রীয় সংস্থা বিআরটিএফ-এর অধীনে নেই। কেন্দ্রে সন্তোষমোহন দেব মন্ত্রী থাকাকালীন বরাক কংগ্রেসের নেতারা প্রায় জোর করে বিআরটিএফ-এর কাছ থেকে ওই রাস্তা সংস্কারের দায়িত্ব পূর্ত বিভাগের (এনএইচ)-এর হাতে হস্তান্তর করিয়ে দেন। জাতীয় সড়ক মেরামতির জন্য ২০০ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছে কেন্দ্র।’’ এ দিকে, করিমগঞ্জের বদরপুর এলাকায় জাতীয় সড়কের পরিস্থিতি নিয়ে অসমের মুখ্যসচিবের সঙ্গে আলোচনা করলেন করিমগঞ্জের জেলাশাসক সঞ্জীব গোঁহাই বরুয়া। করিমগঞ্জের ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের করুণ অবস্থার বিষয়ে জেলাশাসক জানিয়েছেন, জাতীয় সড়ক দিয়ে গাড়ি নিয়ে যাতায়াত করা কঠিন। সে কারণে ২৭ জুলাই থেকে আন্দোলনে নামবে একটি ছাত্র সংগঠন। এই পরিস্থিতিতে জাতীয় সড়কের কিছুটা অংশে মেরামতি করতে না পারলে সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, মুখ্যসচিব আশ্বাস দিয়েছেন— দ্রুত ওই জাতীয় সড়ক মেরামতির কাজ শুরু করা হবে। এ বিষয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। আগামী শুক্রবার করিমগঞ্জের পূর্ত বিভাগ, পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের নিয়ে আলোচনায় বসবেন জেলাশাসক।