আন্তর্জাতিক যোগ দিবস উপলক্ষে যোগাভ্যাস প্রধানমন্ত্রীর। মঙ্গলবার মাইসুরু রাজপ্রাসাদ চত্বরে। পিটিআই
বলতে গেলে তাঁদের উঠোনেই যোগব্যায়াম করতে এসেছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী। মাইসুরুর রাজমাতা প্রমোদা দেবী ওয়াডিয়ার তাই তাঁকে বাড়িতে খেতে ডেকে চিঠি লিখেছিলেন। রাজমাতা বলছিলেন, ‘‘অন্যদের কাছে হয়তো এই বাড়িটা রাজপ্রাসাদ। প্রধানমন্ত্রীকে নিমন্ত্রণ করেছিলাম, বিশ্ব যোগ দিবস উপলক্ষে মাইসুরু এলে তিনি যেন আমাদের বাড়িতে এসে প্রাতরাশ খান। তিনি সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করায় আমরা খুশি।’’
রাজপ্রাসাদের সামনেই বিশাল মাঠ। সেখানেই আজ প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ৪৫ মিনিট ধরে চলল যোগব্যায়ামের সম্মিলিত প্রদর্শন। কর্নাটকের রাজ্যপাল থেবরচন্দ গহলৌত তো বটেই, মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাইও হাঁটুর ব্যথাকে পাত্তা না দিয়ে টানা একের পর এক আসন করে গেলেন। কেন্দ্রীয় আয়ুষ মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল, কর্নাটকের একাধিক মন্ত্রী, সাংসদ, এমনকি রাজ্য পুলিশের ডিজি-ও নেমে পড়লেন যোগব্যায়াম করতে। তার পর মোদী তাঁর বক্তৃতায় বললেন, যোগাসন এখন জীবনের চলার পথ হয়ে উঠেছে।
যোগাসনের পরেই আসন পড়ল প্রাতরাশের। রাজমাতা আগেই মেনু জানিয়ে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, দক্ষিণী রান্নার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর কোনও বিশেষ পছন্দের পদ থাকলে তারও ব্যবস্থা করা হবে। মোদী অবশ্য মজলেন মাইসুরুর ট্রেডমার্ক খানাতেই। শোনা গেল, প্রাতরাশে মাইসুরু মশলা ধোসা আর মাইসোর পাক মিষ্টি বিশেষ তৃপ্তি সহকারে খেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বেসন, খাঁটি ঘি আর চিনি দিয়ে পাকানো মাইসোর পাক মিষ্টির কদর অবশ্য গোটা দেশেই। মাইসুরু মশলা ধোসা বানানোর সময়ে ধোসার ভিতরের দেওয়ালে এক ধরনের লাল চাটনির প্রলেপ দেওয়া হয়। রান্নার পরে ধোসা পুরো লাল হয়ে যায়। এখানেই তার বিশেষত্ব।
যোগ এবং জলযোগের এমন মেলবন্ধনের দিনেও বিঁধে রইল বিতর্কের কাঁটা। আজ একটি ভিডিয়োর অংশ অনেকেই টুইট করেছেন। ভিডিয়োটির সত্যতা আনন্দবাজার যাচাই করেনি। নেটিজ়েনদের বক্তব্য, দূর থেকে তোলা সেই ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, হেলিকপ্টারের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন মোদী। তাঁর ছবি তুলছেন চিত্রগ্রাহকেরা। আর মোদী তাঁর সামনে দাঁড়ানো শার্ট-ট্রাউজ়ার্স পরা এক ব্যক্তিকে হাত নেড়ে কিছু বলছেন। তা শুনে লোকটি দু’তিন পা পিছিয়ে যাচ্ছেন। কারও কারও প্রশ্ন, তাঁর আর ক্যামেরার মাঝখানে চলে আসার জন্যই কি ওই ব্যক্তিকে সরিয়ে দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী? মোদীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ অবশ্য আগেও নানা সময়ে তুলেছেন বিরোধীরা। তাঁকে কটাক্ষ করেছেন ‘ক্যামেরাজীবী’ বলে। এ বারের ভিডিয়োটি পোস্ট করে এক জন লিখেছেন, ‘‘এটা আবার কোন আসন!’’ অনেকেই তার উত্তরে একই কথা লিখেছেন— ‘‘ক্যামেরাসন!’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।