গুজরাতে জমি বিক্ষোভ,কৃষকদের মার পুলিশের

বিরোধের কেন্দ্রে রয়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার একর জমি। যা ১২৫০ জন কৃষকের কাছ থেকে দু’দশক আগে লিগনাইট খনির জন্য অধিগ্রহণ করেছিল গুজরাত বিদ্যুৎ নিগম।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:১৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

জমি অধিগ্রহণ সম্পর্কে গুজরাতের নীতি সবচেয়ে ভাল বলে প্রায়ই নানা মঞ্চে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এ বার তাঁর রাজ্যেই জমি অধিগ্রহণ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে বড় ধরনের সংঘর্ষে জড়ালেন কৃষকেরা। রবিবার ভবনগরে ঘোগা শহরের কাছে বাদি গ্রামে দু’পক্ষের মধ্যে কার্যত কুরুক্ষেত্র বেধে যায়। পুলিশ যথেচ্ছ কাঁদানে গ্যাস এবং লাঠি চালিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া চেষ্টা করে। এই ঘটনায় ১০ জন আহত হয়েছেন। আটক হয়েছেন ৫০ জন কৃষক। গোটা ঘটনায় নরেন্দ্র মোদী বেজায় ক্ষুব্ধ বলে প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রের খবর। বিষয়টি নিয়ে আগামিকাল সংসদে সরব হওয়ার ছক কষছেন বিরোধীরা।

Advertisement

স্থানীয় কৃষক সংগঠনের নেতার অভিযোগ, পুলিশ শুধু লাঠিই চালায়নি। প্রতিবাদী মহিলা ও শিশুদের নিগ্রহ করেছে।

বিরোধের কেন্দ্রে রয়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার একর জমি। যা ১২৫০ জন কৃষকের কাছ থেকে দু’দশক আগে লিগনাইট খনির জন্য অধিগ্রহণ করেছিল গুজরাত বিদ্যুৎ নিগম। কিন্তু এত বছর ধরে সেখানে কোনও কাজ হয়নি, কৃষকরাও চাষবাস থামাননি। এত দিন পরে নিগম সেই জমি হাতে নিতে চাওয়ায় কৃষকরা খেপে উঠেছেন। ভবনগর পুলিশ জানিয়েছে, অধিগ্রহণের জন্য পুলিশি নিরাপত্তা চেয়েছিল বিদ্যুৎ নিগম।

Advertisement

তাঁদের নেতা নরেন্দ্রসিন গোহিলের দাবি, এ দিন তাঁরা শান্তিপূর্ণ ভাবে মিছিল করছিলেন। তাঁদের দাবি, জমি নিতে হলে ২০১৩ সালের আইন মেনে নতুন করে অধিগ্রহণ করতে হবে। এ ব্যাপারে তাঁরা আদালতেও গিয়েছেন। এ দিন পুলিশ কোনও প্ররোচনা ছাড়াই আক্রমণ চালিয়েছে‌।

আন্দোলনকারীদের কৌঁসুলি আনন্দ যাজ্ঞিক জানিয়েছেন, গুজরাত হাইকোর্টে তাঁদের আবেদনের শুনানি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এই ধরনের কিছু মামলার রায়ের মধ্যে অমিল রয়েছে। সেই অমিল দূর করার প্রক্রিয়া চলছে সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চে। তার আগে এই ধরনের মামলায় কোনও রায় না দিতে সব আদালতকে নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। ফলে তাঁদের মামলার রায়দানও আটকে গিয়েছে। কৃষকেরা জমি অধিগ্রহণ নিয়ে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশও পাননি।

প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রের খবর, গ‌োটা ঘটনায় বেজায় ক্ষুব্ধ নরেন্দ্র মোদী। কৃষকদের সমস্যা মেটাতে প্রথমে আনন্দীবেন পটেল ও পরে বিজয় রূপাণিকে নির্দেশ দিয়েও কাজ হয়নি বলে মত প্রধানমন্ত্রীর দফতরের কর্তাদের। কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার মতে, ‘‘নিজের রাজ্যেই কৃষকদের সমস্যা হিন্দুত্বের রোলার চালিয়ে ঢেকে রেখেছিলেন মোদী। সেই সমস্যা এখন দগদগে ক্ষতের চেহারা নিয়েছে। কংগ্রেস কৃষকদের পাশে আছে।’’

সুরজেওয়ালা জানিয়েছেন, তাঁরা স্থানীয় কংগ্রেস নেতাদের কাছ থেকে ঘটনা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করছেন। আগামিকাল সংসদে বিষয়টি নিয়ে সরব হতে পারে কংগ্রেস। তৃণমূল সূত্রে খবর, এ নিয়ে সরকারকে প্রশ্নের মুখে ফেলতে পারে তারাও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement