প্রতীকী ছবি।
টিকা কর্মসূচি চালাতে গিয়ে সরকারকে অনেক সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে। টিকা নেওয়ার জন্য দেশ জুড়ে প্রচার চালানো হচ্ছে, নেওয়া হচ্ছে সচেতনতামূলক কর্মসূচি। কিন্তু তার পরেও দেখা যাচ্ছে অনেকেই টিকাবিমুখ হচ্ছেন। সেই তালিকায় এ বার নতুন সংযোজন হয়েছে ‘মৃত্যু ভয়’।
টিকা নিলেই নাকি মৃত্যু হচ্ছে। অতএব টিকা নেওয়া চলবে না। মুখে মুখে এই গুজব ছড়িয়ে পড়ছে দেশের গ্রামাঞ্চলগুলোতে। আর যে কারণেই গ্রামাঞ্চল এবং প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে টিকা কর্মসূচি বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। আর সে কারণেই টিকা নেওয়ার ভয়ে উত্তরপ্রদেশের সরযূ নদীতে গ্রামবাসীদের ঝাঁপ দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে। শুধু উত্তরপ্রদেশ কেন, দেশের বহু রাজ্যে গ্রামগুলোতে একই ছবি ধরা পড়ছে—টিকাবিমুখতা। কারণ একটাই— গ্রামীণ মানুষের মধ্যে ভ্রান্ত ধারণা প্রোথিত হওয়া।
রাজস্থানে অশোক গহলৌত সরকারকে গ্রামের মানুষকে টিকার সুফল বোঝাতে গিয়ে রীতিমতো নাকানিচোবানি খেতে হচ্ছে। এই অতিমারি পরিস্থিতিতে কুসংস্কারকেই বেশি করে আঁকড়ে ধরছেন রাজস্থানের গ্রামীণ এলাকার বাসিন্দারা। মন্ত্রতন্ত্র, দেব-দেবীর উপর আস্থা রাখার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। ফলে টিকার জন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে লাইন দেওয়ার বদলে তান্ত্রিক, পুরোহিতদের দরবারে ভিড় জমাচ্ছেন তাঁরা। অনেকে আবার বলছেন, ‘আমার তো কিছুই হয়নি, তা হলে টিকা নেব কেন’? এক গ্রামবাসী আবার বলেছেন, ‘‘শুনেছি টিকা নিলেই মৃত্যু হচ্ছে। তাই আমিও টিকা নিইনি।’’ গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে এই ভ্রান্ত ধারণার কাছে হার মানতে হচ্ছে বিজ্ঞানকে।
উত্তরপ্রদেশের ছবিটাও এক। লখনউয়ের এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘অনেক মানুষ তাঁদের প্রিয়জনকে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে হারিয়েছেন। ফলে তাঁদের মধ্যে একটা ভয় ঢুকেছে যে টিকা নিলেই জীবন বিপন্ন হবে। ফলে অনেকেই টিকাবিমুখ হচ্ছেন।’’ অনেকে আবার টিকা নেওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াতেও ভয় পাচ্ছেন। বিহার, মধ্যপ্রদেশ-সহ বহু রাজ্যের গ্রামীণ অঞ্চলে একই ছবি ধরা পড়ছে। শুধু মুখে মুখেই নয়, ভ্রান্ত ধারণা নেটমাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে পড়ছে। যা সরকারকে আরও চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলছে।