এ এক অদ্ভুত দুনিয়া। একদিকে যখন রক্তের সম্পর্ককেও রক্তে রাঙিয়ে তুলতে এতটুকু হাত কাঁপে না অনেকের, দেশের অন্যপ্রান্তে সেই মুহূর্তেই আবার গাঁটের কড়ি খরচা করে দুঃস্থদের আহার জোগান কেউ।
তিনি আমদাবাদের হেমন্ত পটেল। রোজ সন্ধে ৭টায় আমদাবাদ হাসপাতালের বাইরে ৪০০ লোককে খাওয়ান তিনি। কোনও রক্তের টানে নয়, মানবিকতার টানে।
শুরুটা অবশ্য হয়েছিল ১৪ বছর আগে। ২০০২ সালে দাঙ্গার সময়ে। সে সময়ে তাঁর এক আত্মীয় এই হাসপাতালেই ভর্তি ছিলেন। তখন তিনি দেখেছিলেন দুঃস্থ রোগীদের পরিজনেরা কী ভাবে না খেতে পেয়ে দিন গুনতেন। সেই শুরু। তখন থেকেই তিনি নিজের বাড়িতে রান্না করে দুঃস্থদের জন্য খাবার নিয়ে যেতেন। তখন অবশ্য বিনিময়ে সামান্য কিছু টাকা নিতেন। কিন্তু পরে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ওই হাসপাতাল চত্বরে দুঃস্থদের খাওয়াতে শুরু করেন। মেনুও নেহাত কম নয়! কোনও দিন রুটি, সবজি আবার কোনও দিন খিচুড়ি-মিষ্টি। আর উৎসবের দিনে আছে বাড়তি মিষ্টিও। এই কাজে একমাত্র সঙ্গী তাঁর স্ত্রী।
খরচাও নেহাত কম হয় না। প্রতি মাসে খরচা প্রায় ৯০ হাজার টাকা। হেমন্তবাবু নিজেও এক অতি সাধারণ মানুষ। যে বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন সেখান থেকেও অবসর নিয়েছেন। তবে হেমন্তবাবু জানান, কোনও না কোনও ভাবে তা ঠিক জোগার হয়েই যায়। তাঁর বার্তা, ‘‘টাকা দিয়ে অনেকেই সাহায্য করতে চান আমাদের, কেউ যদি একটু সময় দিতেন তাহলে আরও ভাল করে দুঃস্থদের সাহায্য করতে পারতাম।’’