দ্বিপাক্ষিক চুক্তির প্রেক্ষিতে ত্রিপুরার পালাটানা বিদ্যুৎ প্রকল্পে উত্পাদিত বিদ্যুৎ বাংলাদেশে পাঠানো এবং বাংলাদেশের সাবমেরিন কেবলের সাহায্যে ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে আগরতলায় তৃতীয় আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়ের পথচলা একই সঙ্গে শুরু হল। দুটো অনুষ্ঠানই ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভিডিও কনফারেন্সিং-এর বিশাল পর্দায় দেখা গেল, দিল্লিতে সেই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ভারতের বিদেশ মন্ত্রী সুষমা স্বরাজ, কেন্দ্রীয় যোগাযোগ মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ ও বিদ্যুৎ মন্ত্রী পীযূষ গয়াল। অন্য দিকে, ঢাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশে ছিলেন বিদেশমন্ত্রী আবুল হাসান মেহমুদ আলি, বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন সিংলা এবং সে দেশের উচ্চপদস্থ সরকারি আধিকারিকরা।
বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে ১০ জিবিপিএস ইন্টারনেট ব্যান্ডইউথ আজ থেকে আগরতলার আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়েতে আসবে। চেন্নাই ও মুম্বইয়ের পর সাবমেরিন কেবল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে তৃতীয় আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়েটি তৈরি হল আগরতলাতে। এই আধুনিক ও উন্নত ইন্টারনেট পরিষেবা বিএসএনএলের মাধ্যমেই কাজে লাগানো যাবে বলে বিএসএনএল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। অন্য দিকে, পালাটানার উত্পাদিত বিদ্যুতে ত্রিপুরার ভাগের ১০০
মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আজ থেকে বাংলাদেশে ব্যবসায়িক ভিত্তিতে পাঠানো শুরু হল।
ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে পরিষেবা দু’টি উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলায় বলেন, ‘‘বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে আন্তরিক শুভেচ্ছা। ২৬ মার্চ বাংলাদেশের জাতীয় দিবসে ভারতের সমস্ত মানুষের জন্য অভিনন্দন রইল।’’ তিনি বলেন: নতুন ইন্টারনেট সংযোগ ও বিদ্যুৎ পরিবহণের মাধ্যমে ভারত ও বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে যোগাযোগ আরও বৃদ্ধি পাবে। বন্ধুত্বপূর্ণ পারস্পরিক নির্ভরশীলতার মাধ্যমে দু’টি দেশের উন্নয়ন ও বিকাশ যে দ্রুত সম্ভব তা বিশ্ববাসী আজ দেখছেন বলে মন্তব্য করেন মোদী। দু’দেশের সহযোগিতায় আগামী দিনে মহাকাশ বিজ্ঞান ও গবেষণার ক্ষেত্রেও প্রসারিত হবে বলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী জানান। তিনি ঘোষণা করেন, যৌথ উদ্যোগে ‘বঙ্গবন্ধু’
নামে একটি স্যাটেলাইটও মহাকাশে পাঠানো হবে।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতার কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে উল্লেখ করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘‘ভারত থেকে আমাদের বিদ্যুৎ পাওয়া এবং বাংলাদেশের ইন্টারনেট ব্যন্ডইউথ সংযোগ ভারতে পাঠানো, দু’টি ঘটনাই পারস্পরিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বৃদ্ধির মাইল-ফলক হিসেবে চিহ্নিত হবে।’’ এই
সহযোগিতার সম্পর্ক দু’দেশের দারিদ্র দূরীকরণ, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে দারুণ ভাবে কাজে আসবে বলেও হাসিনার আশা। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারও ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে আজকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশের সহযোগিতা না থাকলে পালাটানা বিদ্যুৎ প্রকল্প সম্ভব হত না বলে তিনি মনে করেন। মানিকবাবুর মতে, এটি ঐতিহাসিক দিন।