শিলচর-লামডিং লাইনে ৯ নম্বর সুড়ঙ্গ।— নিজস্ব চিত্র।
যাত্রীবাহী ট্রেন পরিষেবা শুরুর আগে লামডিং-শিলচর ব্রডগেজ লাইনের সুড়ঙ্গে ফাটলের হদিস মিলল।
রেল সূত্রে খবর, ৯ নম্বর সুড়ঙ্গে ওই ফাটল মেরামতির কাজ চলছে। নিউহাফলং স্টেশনের কাছে ৩ কিলোমিটার ২৩৫ মিটার দীর্ঘ ওই সুড়ঙ্গটি। সেটির এক মুখে প্রায় ২০০ মিটার চওড়া একটি ঝর্না রয়েছে। রেলের আশঙ্কা, পাহাড় থেকে নেমে আসা জলের স্রোতের ধাক্কায় সুড়ঙ্গে ফাটল ধরেছে। সেই সব ফাটল দিয়ে এখন নাগাড়ে জল বের হচ্ছে।
ব্রডগেজ লাইন তৈরির দাবিতে আন্দোলনে সামিল বরাকের বিভিন্ন সংগঠনের অভিযোগ, নিম্নমানের জিনিস দিয়ে সুড়ঙ্গ নির্মাণ করা হয়েছে। তাতেই এই বিপত্তি। নির্মাণ সংস্থা যে ভাবে সুড়ঙ্গটি তৈরি করেছে তাতে সেটির স্থায়িত্ব নিয়েও অনেকের সংশয় রয়েছে। সংগঠনগুলির অভিযোগ, জলের স্রোতে সুড়ঙ্গের ভিতরে কংক্রিটের প্রলেপ উঠে আসছে। তা দেখে উদ্বিগ্ন সংগঠনগুলির সদস্যরা। তাঁদের আশঙ্কা, সুড়ঙ্গের এই সমস্যার জেরে বর্ষাকালে মাঝেমধ্যেই যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল ব্যাহত হবে। তাতে দুর্ভোগে পড়তে পারেন বরাকবাসী।
ওই সুড়ঙ্গের নির্মাণ সংস্থার ইঞ্জিনিয়ার ব্রিজেশ শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘এটা বড় কোনও সমস্যা নয়। পাহাড় থেকে জলের স্রোত নেমে ফাটল তৈরি করেছে ঠিকই, কিন্তু তা নিয়ে আশঙ্কার কোনও কারণ নেই।’’ তিনি জানিয়েছেন, দ্রুত ওই সব ফাটল মেরামতি করা হচ্ছে। কিছু কিছু জায়গায় জলের চাপ কমাতে ড্রিলিং করে সুড়ঙ্গের গায়ে ছিদ্র করে দেওয়া হয়েছে। সেই সব জায়গায় জল নেমে আসার জন্য পাইপ লাগানো হবে। তাতে সুড়ঙ্গের কোনও ক্ষতি হবে না। বিঘ্নিত হবে না ট্রেন চলাচলও।
নির্মাণ সংস্থার ওই কর্তার দাবি, সুড়ঙ্গটি ঠিকই রয়েছে। সেটির কাজও সম্পূর্ণ। রেল বিভাগের নির্দেশে কিছু কিছু জায়গায় মেরামতি চলছে। পাহাড় কেটে সুড়ঙ্গ নির্মাণ করা হলে এ ধরনের ছোটখাটো সমস্যা থাকবেই। তার মানে এই নয় যে, ট্রেন চলাচল করতে পারবে না। ব্রিজেশবাবু বলেন, ‘‘ওই সুড়ঙ্গ দিয়ে প্রতি দিন মালগাড়ি যাতায়াত করছে। যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলেও সমস্যা হবে না।’’ তাঁর বক্তব্য, রেলের নিরাপত্তা কমিশনার সুদর্শন নায়েকও কয়েক দিন আগে ওই সুড়ঙ্গ পরিদর্শন করে গিয়েছেন। তিনি এ নিয়ে কোনও প্রশ্ন তোলেননি।
৯ নম্বর সুড়ঙ্গ নিয়ে নির্মাণকারী সংস্থার কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিলেও, সুড়ঙ্গের কাজের গুণগত মান নিয়ে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের ‘ওপেন লাইনের’ পক্ষ থেকেই প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের ওপেন লাইন শাখার ডিআরএম নীরজ কুমার জানিয়েছেন, ৯ নম্বর সুড়ঙ্গ ও নিউ হাফলং থেকে ডিটেকছড়া পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার ‘ডাইভারশন’ অংশের কাজ নিয়ে খুশি নন। ওপেন লাইন এখনই লামডিং-শিলচর ব্রডগেজের দায়িত্ব নিতে চাইছে না। নীরজ কুমার জানান, বর্ষার পরই তিনি যাত্রী রেল চালানোর পক্ষে।