অ-মিতভাষণে বেফাঁস শাহ, কবুল বেকারত্ব

নরেন্দ্র মোদীর বন্দনা আর তাঁকে নানা বিতর্ক থেকে আড়াল করা—এই লক্ষ্যই ছিল সেনাপতি শাহের। কিন্তু তা করতে গিয়ে তিনি মেনে নিলেন, দেশে বেকারত্বের সমস্যা রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:৫৫
Share:

রাজ্যসভায় অমিত শাহ। সোমবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই

সংসদের গত অধিবেশন থেকে লাগাতার চেষ্টা চালিয়েছেন। কিন্তু বিরোধীদের হট্টগোলে প্রথম বক্তৃতাটিই দেওয়া হয়ে ওঠেনি। আজ সকাল থেকেও হইহট্টগোলে মুলতুবি ছিল রাজ্যসভা। দুপুর ২টোয় রাজ্যসভায় প্রথম বক্তৃতা দিতে পারলেন বিজেপি সভাপতি।

Advertisement

নরেন্দ্র মোদীর বন্দনা আর তাঁকে নানা বিতর্ক থেকে আড়াল করা—এই লক্ষ্যই ছিল সেনাপতি শাহের। কিন্তু তা করতে গিয়ে তিনি মেনে নিলেন, দেশে বেকারত্বের সমস্যা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যতই কর্মসংস্থানের দাবি করুন, অমিত বললেন, ‘‘বেকারি নিয়ে বিদ্বানদের ভাষণ শুনে থাকবেন। কিন্তু সমাধান কেউ করবে না। দেশে বেকারির সমস্যা আছে। আমি অস্বীকার করি না।..আমরা সমাধান খুঁজেছি।’’

শুধু তা-ই নয়, কংগ্রেস এবং রাহুল গাঁধীর সমালোচনা করতে গিয়ে একসময় অমিত বলে বসলেন, ‘‘আজ ক্ষমতায় আমরা আছি, কাল আপনারাও আসতে পারেন।’’ সঙ্গে সঙ্গে জয়ধ্বনি উঠল বিরোধী শিবিরে। অনেকেই বলে উঠলেন, ‘‘আপনার মুখে ফুলচন্দন।’’ সমাজবাদী পার্টির নরেশ অগ্রবাল বলেন, ‘‘বাস্তবে যা অবস্থা, বিজেপি সভাপতির ভবিষ্যৎবাণী অচিরে সত্যও হতে পারে।’’ তড়িঘড়ি অমিতের ব্যাখ্যা, ‘‘আমরা সবসময় ক্ষমতায় থাকব, এমন মানসিকতা নয় আমাদের। গণতন্ত্রে জনতা যে কাউকে ক্ষমতায় বসাতে পারে। তবে আমাকে রাজ্যসভায় ছ’বছর সহ্য করতে হবে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: ঝড় তুলতেই রাজ্য সফরের ছক রাহুলের

প্রায় সোয়া ঘণ্টার প্রথম বক্তৃতায় কম করে ৫০ বার প্রধানমন্ত্রীর নাম নিলেন অমিত, লালবাহাদুর শাস্ত্রীর সঙ্গে তাঁর তুলনাও করলেন। বাজেটে স্বাস্থ্য ঘোষণার আনুষ্ঠানিক নাম দিলেন ‘নমো কেয়ার’। কমিউনিস্টদের টেক্কা দিয়ে কী করে ধনী-গরিবকে এক শ্রেণিতে দাঁড় করাচ্ছেন মোদী, তার ফিরিস্তি দিলেন। পাক হামলায় সেনার মৃত্যু, মহিলাদের ধর্ষণের ঘটনা সত্ত্বেও তারিফ করলেন মহিলা নিরাপত্তা, সীমান্তে মোদীর ‘সাফল্যের’। স্বাভাবিক যে পরে মোদী টুইট করলেন, ‘‘দুর্দান্ত বক্তৃতা।’’

মোদী-বন্দনার সূত্র ধরে বারবারই হয় রাহুল নয়তো পি চিদম্বরমের সমালোচনা করেছেন অমিত। প্রসঙ্গত, জিএসটিকে রাহুল বলেছিলেন ‘গব্বর ট্যাক্স’। অমিতের জবাব, ‘‘গব্বর সিংহ ‘শোলে’ সিনেমার ডাকাত। আইন করে যে জিএসটির মাধ্যমে দেশের গরিব, মহিলা, সেনার উপকার হচ্ছে, তার সঙ্গে ডাকাতের তুলনা? এই বোধশক্তি?’’ বেকারি সমস্যা প্রসঙ্গে মোদী বলেছিলেন, পকোড়া বেচে ২০০ টাকা আয়ও কি রোজগার নয়? চিদম্বরমের পাল্টা ছিল, তাহলে ভিক্ষাও রোজগার! আর অমিত এদিন বলেন, ‘‘বেকারির থেকে পকোড়া বেচা ভাল। চা বেচে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন একজন।’’

অমিতের কথা শুনে কংগ্রেসের নেতা গুলাম নবি আজাদের বক্তব্য, ‘‘আসল রোজগারের কোনও হদিস নেই। সরকার শুধু কংগ্রেসের সব প্রকল্পের নাম বদলে ‘রি-প্যাকেজ’ করছে। ক্ষমতা হারালে গোটা বিশ্বের ‘রি-প্যাকেজের’ বরাত পাবে ওরা। পুরনো ভারত ছেড়ে হচ্ছে ‘নতুন ভারত’। কিন্তু হিন্দু-মুসলিম, মুসলিম স্বামী-স্ত্রী—এই বিভাজনের ‘নতুন ভারত’ দরকার নেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement