ফাইল চিত্র
কলকাতায় সম্প্রতি ভুয়ো ভ্যাকসিনের বিষয়টি সামনে এসেছে। তবে তার আগেই মুম্বইয়েও ভুয়ো প্রতিষেধকের ঘটনা জনসমক্ষে এসেছিল। এখনও পর্যন্ত সেখানে জাল প্রতিষেধক নিয়েছেন প্রায় দু’হাজার মানুষ। মোট সাতটি এফআইআর দায়ের হয়েছে এই ঘটনায়। গ্রেফতার করা হয়েছে ১০ জনকে। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছে এক মহিলাও। অভিযোগ, ওই মহিলা প্রতিষেধকের শংসাপত্র তৈরির জন্য কোউইন অ্যাকাউন্টের ইউজ়ারনেম ও পাসওয়ার্ড ছড়িয়ে দিয়েছিল। মুম্বই পুলিশ জানিয়েছে, যাঁরা ওই শিবিরে গিয়েছিলেন, তাঁদের সম্ভবত লবণজল দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত হত্যার মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
আজ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্মসচিব লব আগরওয়াল বলেছেন, ‘‘এ ধরনের ভুয়ো প্রতিষেধক চক্রের বিষয়টি জানতে পারলেই প্রশাসনের উচিত, তা বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা। সে জন্য রাজ্যের উচিত কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে আইনি পদক্ষেপ করা।
মুম্বই পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (আইনশৃঙ্খলা) বিশ্বাস নাংরে পাটিল জানিয়েছেন, প্রতারণার ফাঁদ পেতে সংগৃহীত ১২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। মূল অভিযুক্ত মণীশ ত্রিপাঠী ও মহেন্দ্র সিংহের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এর পাশাপাশি পুলিশ জানিয়েছে, আটটি ভুয়ো ভ্যাকসিন শিবিরের আয়োজন করেছিল অভিযুক্তেরা। পুলিশের দাবি, এক অভিযুক্ত জানিয়েছে, মুম্বইয়ের এক হাসপাতাল থেকে তারা কোভিশিল্ডের ভায়াল জোগাড় করেছিল।
কোভিশিল্ডের নির্মাতা সিরাম ইনস্টিটিউট এই ঘটনার পরে বৃহন্মুম্বই পুরসভাকে (বিএমসি) জানিয়েছে, ভায়ালগুলির ব্যাচ নম্বর চিহ্নিতকরণের কাজে সাহায্য করবে তারা।
১৭ জুন কান্দিভলী পশ্চিমের এক আবাসনে প্রথম ভুয়ো ভ্যাকসিনের ঘটনা সামনে আসে। তার পরে বোরীভলী, অন্ধেরী, খার, পারেল, মালাড-সহ মোট ৯টি জায়গায় ভুয়ো ভ্যাকসিন শিবিরের খোঁজ মিলেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, আরও অনেক অঞ্চলেও জাল প্রতিষেধকের ফাঁদ পেতেছিল জালিয়াতরা।
এই ঘটনায় শুক্রবার বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করল মুম্বই পুলিশ। সিটের নেতৃত্বে থাকবেন ডিসিপি পদমর্যাদার এক অফিসার। এক প্রবীণ পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, বহু জায়গায় বিশুদ্ধ জলে ভরা ভায়াল থেকে টিকা দেওয়া হয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালের নামে ভুয়ো শংসাপত্রও দেওয়া হয়েছে।
গত মঙ্গলবার বম্বে হাই কোর্ট বিএমসি-কে নির্দেশ দিয়েছিল, ভুয়ো প্রতিষেধকের ভায়ালে কী ছিল এবং টিকাপ্রাপকদের শারীরিক অবস্থা খতিয়ে দেখে তাঁদের জন্য টিকাকরণের বন্দোবস্ত করার।
এ দিকে বিহারের ছাপড়ায় টিকাদানে গাফিলতির ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। ওই শিবিরে প্যাকেট থেকে নতুন সিরিঞ্জ বার করে তাতে প্রতিষেধক না ভরেই সটান ইঞ্জেকশনের সূঁচ ফুটিয়ে দেওয়া হয় এক ব্যক্তির শরীরে। আক্রান্ত ব্যক্তি জানান, টিকা নেওয়ার ঘণ্টাখানেক পরে তিনি বিষয়টি জানতে পারেন। তাঁর টিকা গ্রহণের ভিডিয়ো করেছিলেন তাঁর বন্ধু। সেই ভিডিয়োর সূত্রেই বিষয়টি নজরে আসে। এই ঘটনার পরে ওই ব্যক্তির শরীরে অবশ্য সামান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। টিকাকরণ শিবিরে বিষয়টি জানানোর পরে কর্তব্যরত নার্সকে কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
গত কালের তুলনায় আজ দেশে সামান্য কম দৈনিক সংক্রমণ। আজ সংক্রমণ হার ২.৯৮%। অ্যাক্টিভ রোগীও সামান্য কমে ৬,১২,৮৬৮।