সুপ্রিম কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
গত সপ্তাহের পরে আজও। পতঞ্জলি মামলায় চিকিৎসক সংগঠন আইএমএ-ও (ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন) সুপ্রিম কোর্টের তিরস্কারের সামনে পড়ল। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে আইএমএ প্রেসিডেন্ট আরভি অশোকান আদালতকে নিয়ে কিছু মন্তব্য করেছিলেন। বিচারাধীন বিষয়ে মুখ খোলা এবং শীর্ষ আদালতকে নিয়ে মন্তব্য করার দায়ে আইএমএ-কে তিরস্কৃত হতে হল।
গত সপ্তাহেই ওই সাক্ষাৎকারটি পতঞ্জলির তরফে আদালতের গোচরে আনা হয়। বিচারপতি হিমা কোহলি এবং বিচারপতি আহসানউদ্দিন আমানুল্লা তখনই আইএমএ-কে এক প্রস্ত ভর্ৎসনা করেন। আজ তাঁরা ফের বলেন, ‘‘এক দিকে আপনারা বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য পতঞ্জলির দিকে আঙুল তুলছেন। আপনারা নিজেরা কী করছেন?’’ আইএমএ-র আইনজীবী পিএস পাটওয়ালিয়া তখন মক্কেলের হয়ে বলেন, ‘‘আমরা আদালতের প্রশংসাই করেছি মূলত। একটা প্রশ্নের ক্ষেত্রে উনি (অশোকান) একটু ফাঁদে পড়ে গিয়েছিলেন।’’ আদালত তখন ফের বলে, বিষয়টা গত সপ্তাহেই উঠেছিল। এই এক সপ্তাহে আইএমএ এ ব্যাপারে তার কোনও বক্তব্য জানায়নি। পাটওয়ালিয়া তার উত্তরে বলেন, আইএমএ আগ বাড়িয়ে কিছু করতে চায়নি বলেই চুপ ছিল। আদালত তখন ফের তিরস্কারের সুরে বলে, ‘‘আগ বাড়িয়ে মানে কী? আইএমএ-র প্রেসিডেন্ট বিচারাধীন বিষয়ে মুখ খুলতে তো পারলেন!’’ পাটওয়ালিয়ার ‘নিরীহ উত্তরে’ তাঁরা ভুলছেন না বলে জানিয়ে বিচারপতিরা বলেন, ‘‘আদালত কোনও পিঠ চাপড়ানি প্রত্যাশা করে না।’’ পাটওয়ালিয়া জানান, আইএমএ প্রেসিডেন্ট দুঃখিত বোধ করছেন। তিনি নিজের ভুল বুঝেছেন, বুঝেছেন যে তাঁর চুপ থাকা উচিত ছিল। আগামী সপ্তাহ অবধি সময়ও চেয়েছেন পাটওয়ালিয়া।
আইএমএ-র পাশাপাশি সেলিব্রিটি এবং সমাজমাধ্যমে ইনফ্লুয়েন্সারদের ভূমিকা নিয়েও আজ সরব হয় সুপ্রিম কোর্ট। বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন প্রসঙ্গে বিচারপতিরা বলেন, এই সব বিজ্ঞাপনী প্রচারের মুখ যাঁরা, সেই সেলিব্রিটি এবং ইনফ্লুয়েন্সাররাও তাঁদের দায় এড়াতে পারেন না। আইনে বলাই আছে, কোনও বস্তুর বিজ্ঞাপন করতে হলে সেই বস্তুটি সম্পর্কে যথেষ্ট তথ্য আগাম জানতে হবে এবং নিশ্চিত হতে হবে যে, সেটি কোনও রকম বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে না। যে সব সম্প্রচার মাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচারিত হবে, সেই সম্প্রচারকদেরও ঘোষণা করে জানাতে হবে, প্রচারিত বিজ্ঞাপন কোনও ভাবে আইন লঙ্ঘন করছে না। এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারকেও তার ভূমিকার ব্যাখ্যা দিতে বলেছিল আদালত। কেন তারা রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে চিঠি দিয়ে আয়ুর্বেদিক এবং আয়ুষ সামগ্রীর বিজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে বারণ করেছিল, সে ব্যাপারে নিজেদের অবস্থান জানিয়ে আদালতে চিঠি জমা দিয়েছে কেন্দ্র।