প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। —ফাইল ছবি।
ডাক্তারির প্রবেশিকা নিট-ইউজি-র প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতে আজ নিট মামলা চলার সময় প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বলেছেন, বিহার পুলিশের কাছে অভিযুক্তদের দেওয়া বয়ানে মনে হচ্ছে, ৪ মে-র আগেই নিট-এর প্রশ্ন ফাঁস হয়ে গিয়েছিল। কেন্দ্র ও ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (এনটিএ) অবশ্য দাবি করেছিল, গত ৫ মে পরীক্ষার দিনেই হাজারিবাগের একটি কেন্দ্রে নিটের প্রশ্ন ফাঁস হয়।
নিট মামলার আগের শুনানিতেই বিহার পুলিশের তদন্ত-নথি চেয়েছিল শীর্ষ কোর্ট। আজ সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে শুনানির সময় আবেদনকারীদের আইনজীবী নরেন্দ্র হুডা দাবি করেন, পরীক্ষার আগেই নিটের প্রশ্ন ফাঁস হয়েছিল। তাঁর মতে, বিহার পুলিশের রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, ৪ মে কিছু পরীক্ষার্থীর হাতে প্রশ্নপত্র চলে এসেছিল। তাঁর দাবি, স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া বা কানাড়া ব্যাঙ্কে প্রশ্নপত্র মজুত রাখার আগেই তা ফাঁস হয়ে গিয়েছিল। আর এ নিয়ে যে এফআইআর হয়েছে, তাতে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, পটনাতেই প্রথম প্রশ্ন ফাঁস হয়।
এই সংক্রান্ত রিপোর্ট দেখার পরে প্রধান বিচারপতি বলেন, “৪ মে রাতে পরীক্ষার্থীদের প্রশ্নপত্র মনে রাখার জন্য বলা হয়েছে বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। এর অর্থ হল, ৪ মের আগেই প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে।” নিট মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত অমিত আনন্দ প্রথমে বলেছিল, ৪ মে রাতে প্রশ্ন ফাঁস হয়। পরে সে জানায়, ৫ মে সকালে হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্ন মিলেছিল। অমিতের বয়ানের এই ফারাক প্রধান বিচারপতির নজরে এসেছে। তিনি বলেন, “যদি ৪ মে রাতে প্রশ্ন ফাঁস হয়ে থাকে, তা হলে বুঝতে হবে প্রশ্নপত্র সরবরাহের প্রক্রিয়ার আগেই তা ফাঁস হয়েছে। তেমন হলে আমাদের দেখতে হবে, প্রশ্নফাঁস শুধু হাজারিবাগ ও পটনাতেই সীমাবদ্ধ ছিল, না কি আরও দূর পর্যন্ত তা ছড়িয়ে পড়েছিল...।” হুডা সওয়াল করেন, প্রশ্ন ফাঁসের ব্যাপারটা কিছু পরীক্ষার্থীর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এমন কাজের ইতিহাস রয়েছে মতো সংগঠিত চক্র এতে জড়িয়ে। চক্রের বিভিন্ন সদস্যকে এখনও গ্রেফতার করা হয়নি বলে কোর্টে জানান তিনি। নতুন করে পরীক্ষা নেওয়া পুরোপুরি সম্ভব না হলেও উত্তীর্ণ ১৩ লক্ষ পরীক্ষার্থীকে ফের পরীক্ষায় বসার সুযোগ দিতে আবেদন করেন পরীক্ষার্থীদের আইনজীবী।
শুনানির সময় নিট-ইউজি-র পরমাণু ও এর চরিত্র সংক্রান্ত একটি প্রশ্ন শীর্ষ কোর্টের নজরে এসেছে। প্রশ্নটির দু’টি ঠিক উত্তর ছিল। বিশেষ একটি উত্তর দিয়েছে যে পরীক্ষার্থীরা, তাদের ৪ নম্বর দেওয়া হয়েছে। যা চূড়ান্ত ফলাফলে প্রভাব ফেলেছে বলে সওয়াল করা হয়। এর পরে শীর্ষ কোর্ট আইআইটি দিল্লির তিন বিশেষজ্ঞকে এই বিশেষ প্রশ্নটির উত্তর নিয়ে মতামত জানাতে বলেছে। প্রতিষ্ঠানের ডিরেক্টরকে আগামী কালের মধ্যে এই বিষয়ে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। আগামিকালও শীর্ষ আদালতে নিট মামলা ওঠার কথা।