রাহুল গান্ধী। —ফাইল চিত্র।
ইজ়রায়েল-প্যালেস্টাইনের যুদ্ধের ছায়া দেশের বিধানসভা নির্বাচনেও।
কংগ্রেস প্যালেস্টাইনের সমর্থনে সুর চড়াতেই বিজেপির প্রশ্ন, কী ভাবে রাহুল গান্ধীর দল সন্ত্রাস ও সন্ত্রাসবাদীদের সমর্থন করতে পারে। লক্ষ্য স্পষ্ট, পাঁচ রাজ্যে ভোটের আগে প্যালেস্টাইনের জঙ্গি সংগঠন হামাসের হামলাকে সামনে রেখে হিন্দু ভোটের মেরুকরণ। যাতে ভোট যুদ্ধে ফায়দা পায় দল। এখানেই না থেমে বিজেপি ইতিমধ্যেই প্রচারে নেমে পড়েছে যে ইজ়রায়েল যেমন সন্ত্রাসের শিকার হয়েছে, তেমনি সন্ত্রাসবাদীদের সমর্থনে সরব হওয়া কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে ফের জঙ্গি হামলার শিকার হবে এ দেশ। ঠিক যে ভাবে অতীতে ইউপিএ আমলে একের পর এক হামলার সাক্ষী থেকেছে ভারত।
রাজনীতির অঙ্গনে অনেকেরই মত, প্যালেস্টাইনের হামলার সঙ্গে পাক জঙ্গিদের হামলাকে এক পংক্তিতে রেখে হিন্দু ভোটের মেরুকরণ ও জাতীয়তাবাদ উস্কে দেওয়ার কৌশল নিয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। তেমনি প্রশ্ন তোলা হয়েছে সন্ত্রাস প্রশ্নে কংগ্রেসের নরম মনোভাব নিয়েও। সংসদীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশীর কথায়, ‘‘ফের একই পথে হাঁটল কংগ্রেস। নিরীহ মানুষ যখন সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের হাতে মারা যাচ্ছে, কংগ্রেস তখন তাদের সমর্থন করছে। এর ফলে বিরোধী জোট ইন্ডিয়া-র বড় শরিক হিসেবে কংগ্রেসের আসল চেহারা সামনে চলে এল। যারা প্রকাশ্যে হানাহানিকে সমর্থন করে, সেই দল কী ভাবে দেশ ও দেশবাসীকে সুরক্ষা দেবে?’’
কংগ্রেস নীতিগত ভাবে প্রথম দিন থেকেই ইজ়রায়েলে হামলার নিন্দায় সরব হয়েছে। কংগ্রেসের বক্তব্য, দল বরাবর প্যালেস্টাইনের মানুষের আত্মসম্মানের সঙ্গে জীবনযাত্রার আকাঙ্ক্ষার পক্ষে। ইজ়রায়েলের জাতীয় নিরাপত্তার কথা খেয়াল রেখে আলোচনার মাধ্যমেই পরিস্থিতির মোকাবিলা করা প্রয়োজন। হিংসা কোনও কিছুর সমাধান নয়। এরপরে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির প্রস্তাবে বলা হয়, কংগ্রেস পশ্চিম এশিয়ায় বহু মানুষের মৃত্যুতে দুঃখিত। প্যালেস্টাইনের মানুষের জমি, স্বশাসন ও সম্মানের সঙ্গে জীবনযাত্রার পক্ষে পুরনো অবস্থানও মনে করিয়ে দিয়ে কংগ্রেস শান্তি ও আলোচনার দাবি জানায়। যদিও ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে অনেকের মত ছিল, ইজ়রায়েলে সন্ত্রাসবাদের কড়া সমালোচনা করা উচিত। না হলে বিজেপি কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তুষ্টিকরণের রাজনীতি ও সন্ত্রাস নিয়ে নরম মনোভাবের অভিযোগ তুলতে পারে। ঠিক সেটাই হয়েছে।
পাঁচ রাজ্যে ভোটের আগে বিজেপি ইজ়রায়েল-প্যালেস্তাইন নিয়ে মেরুকরণের রাজনীতি শুরু করায় আজ লোকসভার কংগ্রেসের উপ-নেতা গৌরব গগৈ বলেন, মোদী সরকারের ব্যর্থতা ও রাজস্থান-মধ্যপ্রদেশে দলের অন্তর্কলহ থেকে নজর ঘোরাতে বিজেপি এ নিয়ে রাজনীতি করছে। বিজেপি নেতাদের উচিত অটলবিহারী বাজপেয়ীর বক্তৃতা শোনা। তিনি বলেছিলেন, আরবদের জমি ইজ়রায়েলকে খালি করতে হবে। তবে প্রধানমন্ত্রী থেকে বিজেপির নেতারা ইজ়রায়েলে সমস্যা দেখতে পান। মণিপুর-সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সমস্যা দেখতে পান না।