চলতি অর্থবর্ষে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে মহিলাদের অংশগ্রহণের হার ফের বেড়ে নতুন রেকর্ড করেছে। ফাইল ছবি।
নোট বাতিলের বছরে একশো দিনের কাজ প্রকল্পে মহিলাদের অংশগ্রহণের হার বেড়েছিল। পরে তা কমতে শুরু করে। চলতি অর্থবর্ষে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে মহিলাদের অংশগ্রহণের হার ফের বেড়ে নতুন রেকর্ড করেছে। যা গত ১০ বছরে সর্বোচ্চ।
অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, গ্রামীণ অর্থনীতিতে যে সঙ্কট তৈরি হয়েছে, তারই প্রমাণ হল, একশো দিনের কাজে মহিলাদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি। এক দিকে, পরিবারের রোজগার বাড়াতে আরও বেশি সংখ্যক মহিলাকে একশো দিনের কাজের প্রকল্প বা নরেগা-য় কাজ করতে হচ্ছে। কোভিডের জেরে লকডাউনের পরে পরিযায়ী শ্রমিকরা শহর থেকে গ্রামে ফিরেছিলেন। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও সকলে এখনও কাজে ফিরতে পারেননি, বিশেষত মহিলারা। এখন তাঁদেরও ভরসা একশো দিনের কাজ প্রকল্প।
লোকসভায় একটি প্রশ্নের উত্তরে আজ কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক জানিয়েছে, ২০১২-১৩-য় একশো দিনের কাজের প্রকল্পে মহিলাদের অংশগ্রহণের হার ছিল ৫১.৩ শতাংশ। ২০১৬-১৭-তে নোট বাতিলের বছরে মহিলাদের অংশগ্রহণের হার বেড়ে ৫৬.২১ শতাংশে পৌঁছেছিল। পরে তা কমে এসেছিল। কোভিডকালে লকডাউনের পরে তা ফের বাড়তে শুরু করেছে। চলতি অর্থবর্ষ, ২০২২-২৩-এ ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত একশো দিনের কাজে মহিলাদের অংশগ্রহণের হার ৫৬.৬ শতাংশ। ২০১২-১৩-র পর থেকে এখনও পর্যন্ত একশো দিনের কাজে এত বেশি মহিলাদের অংশগ্রহণ দেখা যায়নি।
অর্থনীতিবিদেরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, নোট বাতিল এবং লকডাউন, দুইয়ের পরেই পরিযায়ী শ্রমিকদের শহর থেকে গ্রামে ফিরতে হয়েছিল। দিল্লির অম্বেডকর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির শিক্ষিকা দীপা সিন্হা বলেন, ‘‘একশো দিনের কাজের প্রকল্পে মহিলাদের অংশগ্রহণ বরাবরই ভাল। কারণ গ্রামের মধ্যেই কাজ মেলে। কিন্তু তা এতটা বেড়ে যাওয়ার কারণ গ্রামের অর্থনীতির সঙ্কট, রোজগার কমে যাওয়া।তার উপরে লকডাউনের জেরে পরিযায়ী শ্রমিকদের গ্রামে ফিরতে হয়েছে। তারও প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে।’’ কোভিড-লকডাউনে কাজ হারিয়ে অনেক মহিলা নতুন করে কাজ খোঁজাই ছেড়ে দিয়েছিলেন। অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, এমনও হতে পারে, যে কাজ মিলছে, তার মজুরি একশো দিনের কাজের মজুরির থেকে কম। তার ফলেও নরেগা-য় মহিলাদের অংশগ্রহণ বাড়তে পারে।