প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
শুক্রবার পর্যন্ত সংসদ না-চলার জন্য সরাসরি বিরোধীদের দায়ী করছিল মোদী সরকার। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথসিংহ স্পষ্টই বলেছিলেন সংসদ চলতে না দেওয়া ‘কিছু রাজনৈতিক দলের’ কৌশল। শনিবার সংসদ ছুটির সকালে তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বল ঠেলেদিলেন বিজেপি তথা মোদী সরকারের কোর্টে। টুইট করে জানালেন, বিজেপি-ই সংসদ অচল করে রাখছে। প্রধানমন্ত্রী এসে মণিপুর নিয়ে বিবৃতি দিলেই অচলাবস্থা কেটে যাবে। সিদ্ধান্ততাঁর হাতে।
রাজনৈতিক সূত্রের খবর, বাদল অধিবেশন এ বার ভেসেই যাবে। নাটকীয় কোনও ঘটনা না ঘটলে ১১ অগস্ট (এ বারের বর্ষাকালীন অধিবেশনের শেষ দিন) পর্যন্ত সংসদে কিছু সরকারি বিল পাশ ছাড়া (অবশ্যই একতরফা ভাবে, আলোচনা ছাড়াই) কোনও কাজই হবে না। ফলে বেঙ্গালুরু এবং মুম্বইয়ে বিরোধী সম্মেলনের মাঝের এই সময়ে প্রচারে নামতে চাইছে কংগ্রেস, তৃণমূল, ডিএমকে-র মতো বিরোধী দলগুলি।
কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ রঞ্জিত রঞ্জনের বক্তব্য, “আমাদের দাবি খুব সরল। প্রধানমন্ত্রী সংসদে আসুন। রাজ্যসভায় প্রথম মণিপুরের বিষয় নিয়ে আলোচনা হোক। লোকসভায় বাকি সব কার্যসূচি মুলতুবি রেখে মণিপুর নিয়ে বিতর্ক হোক। মণিপুরে গত ৮০-৮৫ দিন ধরে হিংসা চলছে। তা নিয়ে সংসদে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জবাব দিন। দুর্ভাগ্যজনক হল, বিজেপি তা নিয়ে রাজনীতি করছে। প্রধানমন্ত্রী মণিপুর নিয়ে বিবৃতি দিলেন। সেটাও সংসদের বাইরে। তার মধ্যে আবার রাজস্থান-ছত্তীসগঢ়ের কথা টেনে আনলেন। আপনার ৫৬ ইঞ্চি ছাতি থাকলে সংসদের ভিতরে এসেজবাব দিন।”
কংগ্রেসের অভিযোগ, মণিপুরে গত ৮০ দিন ধরে হিংসায় দেড়শোর বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। ৫০ হাজার মানুষ ঘরছাড়া। ইন্টারনেট বন্ধ। লাগাতার হিংসা চলছে। গ্রামের মধ্যে মানুষ বাঙ্কার তৈরি করে রয়েছেন। তাঁদের হাতে যে সব ভয়ঙ্কর আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে, তা পুলিশের কাছেও নেই। কেন্দ্রীয় সরকার বা রাজ্য সরকারের কি এ সব জানা নেই, না কি জেনে শুনেও তাঁরা কিছু করছে পারছেন না, তার উত্তর সরকারকে সংসদে এসেইদিতে হবে।
অন্য দিকে ডেরেকের টুইট, “বিজেপি-ই সংসদ অচল করে রেখেছে। মণিপুর নিয়ে আলোচনা শুরু হোক সোমবার সকাল ১১টায়। প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নিন, তিনি কখন আলোচনা শুরু করতে চান। লোকসভা না রাজ্যসভা। অবশ্যই আমরা সবাই থাকব।” তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী যত ক্ষণ মণিপুর নিয়ে বলতে চান, বিরোধীরা বসে শুনতে আগ্রহী। সেটা তিরিশ মিনিটই হোক বা টানা এক ঘণ্টা। ডেরেকের কথায়, “প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্রের মন্দিরে প্রণাম করে প্রবেশ করেছিলেন। এখন বাইরে কেন? সংসদের ভিতরে এসে কথা বলুন।”