প্রতীকী ছবি।
মহারাষ্ট্রের সোলাপুরে মেঘের দেখা পাওয়া ভার। প্রকৃতির খেয়াল! কিন্তু এই ধরনেরই শুখা এলাকায় এ বার বৃষ্টির পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে কেন্দ্রীয় ভূবিজ্ঞান মন্ত্রক। তবে সেই বৃষ্টি প্রকৃতির নিয়মে হবে না, হবে বিজ্ঞানীদের খেয়ালে! কী ভাবে?
সোমবার বসু বিজ্ঞান মন্দিরের শতবার্ষিকী অনুষ্ঠানে এসে সেটাই ব্যাখ্যা করলেন কেন্দ্রীয় ভূবিজ্ঞান মন্ত্রকের সচিব মাধবন নায়ার রাজীবন। জানালেন, এই প্রকল্পের নাম ‘আর্টিফিশিয়াল রেন’ বা কৃত্রিম বৃষ্টি। বিমানের সাহায্যে বায়ুমণ্ডলের উপরিস্তরে রাসায়নিক ছিটিয়ে তৈরি করা হবে কৃত্রিম মেঘ। তা থেকেই শুখা এলাকায় নেমে আসবে জলের ধারা। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর এবং পুণের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল মেটিরিওলজির অধীনে চলতি বছরেই এই পরীক্ষা শুরু হয়েছে। চলবে ২০২০ সাল পর্যন্ত।
বিজ্ঞানীরা জানান, বিমানে চাপিয়ে বায়ুমণ্ডলের উপরিস্তরে সিলভার আয়োডাই়ড, পটাশিয়াম ও সোডিয়াম ক্লোরাই়ড ছিটোনো হবে। এই রাসায়নিকের বিক্রিয়ায় তৈরি হবে জলবাহী ভারী মেঘ। এবং তা থেকেই দ্রুত বৃষ্টি নামবে ওই এলাকায়। সোলাপুরের পরীক্ষায় দু’টি বিমান ব্যবহার করা হবে। একটি বিমান রাসায়নিক ছিটোবে। তার পরে মেঘের চরিত্র কেমন দাঁড়াচ্ছে, সেই ব্যাপারে নমুনা সংগ্রহ করবে দ্বিতীয় বিমানটি। ভূবিজ্ঞান মন্ত্রক সূত্রের খবর, সোলাপুর পশ্চিমঘাট পর্বতের ‘বৃষ্টিচ্ছায় এলাকা’ (পাহাড়ের যে-সব ঢালে প্রাকৃতিক বৃষ্টিপাত হয় না)। তাই এই পরীক্ষার জন্য ওই এলাকাকেই বেছে নেওয়া হয়েছে।
চলতি বছরেই কেরলের শুখা এলাকায় কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রস্তাব এসেছিল। কিন্তু পিনারাই বিজয়নের সরকার জানিয়ে দেয়, প্রচুর টাকা ব্যয়ে তড়িঘড়ি এ কাজে নামতে চায় না তারা। তবে ভূবিজ্ঞান মন্ত্রকের কর্তারা জানান, জলবায়ু বদলের ফলে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম ভারতের শুখা এলাকায় বৃষ্টি কমবে, বা়ড়তে থাকবে তাপমাত্রা। এর মোকাবিলা করতে গেলে কৃত্রিম বৃষ্টিপাতের মতো নতুন পদ্ধতির সাহায্য নিতেই হবে। রাজীবন জানান, আঞ্চলিক স্তরে জলবায়ুতে কী বদল আসছে, তা বুঝতেও গবেষণা শুরু হয়েছে। জলবায়ুর পরিবর্তনে কৃষির যাতে ক্ষতি না-হয়, সেই জন্য ২০১৯ থেকে দেশের ৬০০ জেলায় কৃষি-আবহাওয়া দফতর খোলা হবে।