প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
রাশ টানা দূরে থাক। রাজ্যপালদের আরও সক্রিয় ভূমিকায় দেখতে চাইছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। আজ থেকে রাষ্ট্রপতি ভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে রাজ্যপালদের দু’দিনের সম্মেলন শুরু হয়েছে। কেন্দ্র চাইছে, রাজ্যপালেরা ‘জনগণের রাজ্যপাল’ হয়ে উঠুন। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে জনগণের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখুন। কোনও নীতিগত বিষয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে বিরোধ হলে সমাজমাধ্যমে রাজ্যপালদের খোলাখুলি মত প্রকাশেও উৎসাহ দিতে চাইছে কেন্দ্র।
পশ্চিমবঙ্গ থেকে কেরল, তামিলনাড়ুর মতো বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলি বারবার মোদী সরকারের নিযুক্ত রাজ্যপালদের ভূমিকা নিয়ে সরব। রাজ্যের বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল রাজ্যপালের কাছে আটকে থাকা নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট কড়া অবস্থান নিয়েছে। শীর্ষ আদালত রাজ্যপালদের বার্তা দিয়েছে, তাঁদের মনে রাখতে হবে যে তাঁরা মানুষের নির্বাচিত রাজ্যের প্রধান নন।
আজ রাষ্ট্রপতি ভবনে রাজ্যপালদের সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজ্যপালকে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে সেতুবন্ধনের কাজ করতে হবে। কিন্তু সম্মেলনের আলোচ্যসূচিতে রাজ্যপালদের ‘জনগণের রাজ্যপাল’ হয়ে ওঠার বিষয় রয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, রাজ্যপালদের নীরব দর্শক হয়ে থাকলে চলবে না। আমজনতার সঙ্গে জড়িত বিষয়ে রাজ্যপালকে যথাযথ অবস্থান নিতে হবে। প্রয়োজন মাফিক রাজ্য সরকারের উপরে চাপ তৈরি করতে হবে। সরকারি সূত্রের অবশ্য দাবি, শুধু বিরোধী শাসিত রাজ্য নয়, বিজেপি শাসিত রাজ্যের ক্ষেত্রেও একই কথা বলা হচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস এই সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন। রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে তাঁর সঙ্গে রাজ্য সরকারের সংঘাতের জেরে সুপ্রিম কোর্টকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে। সম্মেলনের শুরুতে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু বলেন, জাতীয় শিক্ষানীতিতে শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কারের চেষ্টা হচ্ছে। রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য হিসেবে এ ক্ষেত্রে রাজ্যপালদের সক্রিয় হতে বলেন তিনি। রাজ্য সরকারের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয় বাড়ানোর ক্ষেত্রে রাজ্যপাল কী ভূমিকা নিতে পারেন, তা নিয়েও ভাবনাচিন্তা করতে বলেন তিনি। ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা ও সাক্ষ্য অধিনিয়ম, নতুন তিন আইনের রূপায়ণ নিয়ে সম্মেলনে আলোচনা হবে।
মোদী সরকার অনগ্রসর জেলাগুলির জন্য ‘উচ্চাকাঙ্ক্ষী জেলা’ প্রকল্পের পাশাপাশি চিন সীমান্তবর্তী গ্রামগুলির উন্নয়নে ‘ভাইব্র্যান্ট ভিলেজ’ প্রকল্প চালু করেছে। কেন্দ্র চায়, রাজ্যপালেরা নিয়মিত সেখানে যান। আজ রাষ্ট্রপতি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এ নিয়ে রাজ্যপালদের সক্রিয় হতে বলেছেন।