নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।
ফের উরি-পঠানকোটের মতো সেনা ছাউনিতে আত্মঘাতী জঙ্গি হামলার আশঙ্কা করছে কেন্দ্র। ঝুঁকি না নিয়ে তাই ‘অরেঞ্জ অ্যালার্ট’ জারি করা হয়েছে জম্মু-কাশ্মীর, পঞ্জাব ও উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন বায়ুসেনা ঘাঁটিতে। সেনা ছাউনির পাশাপাশি নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ ও অজিত ডোভালের উপরে জইশ-ই-মহম্মদ গোষ্ঠীর জঙ্গিরা হামলার ছক কষেছে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন গোয়েন্দারা। এরই মধ্যে আজ উপত্যকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে শ্রীনগর গিয়েছেন জাতীয় সুরক্ষা উপদেষ্টা ডোভাল।
দু’দিন আগেই সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়ত জানিয়েছিলেন, প্রায় পাঁচশো জঙ্গি সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্র বলছে, সীমান্তে কড়া পাহারা সত্ত্বেও ৪৫-৫০ জন জঙ্গির একটি দল ইতিমধ্যেই ভারতে প্রবেশ করেছে। জম্মু-কাশ্মীরের শ্রীনগর, উরি, অবন্তীপোরা, জম্মু, পঠানকোটের পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশের গাজ়িয়াবাদের হিন্ডন বায়ু সেনা ঘাঁটিতেও হামলার পরিকল্পনা রয়েছে ওই জঙ্গিদের। সতর্কতা জারি হয়েছে দিল্লিতেও। আড়ি পেতে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, জইশের মাথা মৌলানা মাসুদ আজহার শারীরিক ভাবে অসুস্থ হওয়ায় গোটা অপারেশনের দায়িত্বে রয়েছে তার ভাই আব্দুল রউফ।
গোয়েন্দাদের দাবি, জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপের ‘বদলা’ নিতে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ডোভালের উপরে আত্মঘাতী হামলা চালাতে প্রস্তুতি নিয়েছে জইশের জঙ্গিরা। আজ প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বলেন, ‘‘জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে যে চ্যালেঞ্জই আসুক না কেন সেনা, নৌবাহিনী ও বায়ুসেনা তার জবাব দিতে প্রস্তুত।’’
গোটা বিষয়টিতে ইন্ধন জুগিয়েছে পঞ্জাবে ড্রোনের মাধ্যমে পাকিস্তানের অস্ত্র পাঠানোর বিষয়টি। সম্প্রতি পঞ্জাবের তর্ণ তারণে একটি পোড়া ড্রোন উদ্ধার হয়। তদন্তে নেমে দেখা যায় আধুনিক ওই ড্রোনটির মাধ্যমে পাকিস্তান থেকে অস্ত্র পাঠানো হচ্ছিল পঞ্জাবে। সেটি পাকিস্তানে ফিরতে ব্যর্থ হওয়ায় জ্বালিয়ে দেয় জঙ্গিরা। ড্রোনটি দ্রুত গতির, ৫ কিলোগ্রাম ওজন বহনে সক্ষম এবং নীচ দিয়ে উড়তে সক্ষম হওয়ায় সেটিকে চিহ্নিত করাও কঠিন। গোয়েন্দাদের আশঙ্কা, সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে অন্তত বার দশেক ড্রোনের মাধ্যমে পাকিস্তান থেকে অস্ত্র পাঠানো হয়েছে পঞ্জাবে। সৌদি আরবের তেল শোধনাগারে ড্রোন হামলার পরে বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্র। ড্রোন হামলা মোকাবিলায় নীতি তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রক।
পঞ্জাব পুলিশের দাবি, জম্মু-কাশ্মীর সীমান্তে কড়া পাহারা রয়েছে। তাই সড়ক পথে কাশ্মীরের জঙ্গিদের গোলাবারুদ পৌঁছে দিতে পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের মদতে ড্রোনের সাহায্যে খলিস্তান জিন্দাবাদ ফোর্সের জন্য অস্ত্র পাঠানো হয়েছিল। তল্লাশিতে একাধিক এ কে ৪৭ রাইফেল, গ্রেনেড এবং একটি স্যাটেলাইট ফোন উদ্ধার করেছে পঞ্জাব পুলিশ।