সন্ত্রাসের ‘পোস্টারবয়’। ২১ বছরের বুরহান ওয়ানিকে এ ভাবেই চিনত ভূস্বর্গ। দক্ষিণ কাশ্মীরের বাসিন্দা এই সুপুরুষ তরুণের দৌলতেই ফের জঙ্গিপনার দিকে ঝুঁকতে শুরু করেছিলেন স্থানীয় যুবকদের একটি বড় অংশ। এ দিন সেই দক্ষিণ কাশ্মীরেরই কোকেরনাগে যৌথ বাহিনীর অভিযানে খতম হল সেই বুরহান। এই ঘটনার জেরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় স্থগিত রাখা হয়েছে অমরনাথ যাত্রা।
ত্রাল এলাকার সম্পন্ন পরিবারের ছেলে বুরহান। দাদাকে সেনারা মারধর করায় ২০১০ সালে হিজবুল মুজাহিদিনে যোগ দেয় সে। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রায়ই পোস্ট করত জঙ্গি জীবনের ছবি ও ভিডিও। ক্রমে এই সুপুরুষ তরুণ হয়ে ওঠে হিজবুলের প্রচারের নয়া মুখ। লস্করের মতো পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠনগুলির চাপে কোণঠাসা হিজবুল সম্প্রতি ফের কাশ্মীরি যুবকদের দলে টানতে পেরেছে। গোয়েন্দাদের মতে, এর অন্যতম কারণ সোশ্যাল মিডিয়ায় বুরহানের জনপ্রিয়তা। তবে সে নিজে আদৌ কোনও হামলায় অংশ নিয়েছে কি না তা নিয়ে সন্দিহান গোয়েন্দারা।
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, ত্রাল ও আশপাশের এলাকা থেকে অন্তত ৩০ জন তরুণ সরাসরি বুরহানের প্রভাবে হিজবুলে যোগ দেওয়ার পরে চরম পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। বুরহান সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় থাকায় তার অবস্থান সংক্রান্ত তথ্য কিছুটা সুবিধে হয়েছে গোয়েন্দাদের।
এ দিন নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে কোকেরনাগে অভিযান চালায় সেনা ও পুলিশের যৌথ বাহিনী। শেষ পর্যন্ত বুমডুরা গ্রামে বাহিনীর হামলায় নিহত হয় বুরহান ও তার দুই সঙ্গী। পুলিশের দাবি, নিহতদের মধ্যে রয়েছে আর এক হিজবুল জঙ্গি সরতাজ। সে দক্ষিণ কাশ্মীরে অনেক হামলায় জড়িত ছিল। তৃতীয় জনের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
এলাকায় জনপ্রিয়তা থাকায় বুরহানের মৃত্যুর খবরে গোলমালের সম্ভাবনা ছিলই। প্রত্যাশিত ভাবেই দক্ষিণ কাশ্মীরের কিছু এলাকায় পথে নেমেছেন বাসিন্দাদের একাংশ। শুরু হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ। শ্রীনগরের বেশ কিছু এলাকায় কার্ফু জারি করা হয়েছে। বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা। শনিবার হরতালের ডাক দিয়েছেন বিচ্ছিন্নতাবাদী হুরিয়ত নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানি।