গত কাল টুইটারেই কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার ঘটনার নিন্দা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ ঝাড়খণ্ডে বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে এসে কাশ্মীরের ওই ঘটনার কড়া জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিলেন তিনি।
গত কাল উত্তর কাশ্মীরের বারামুলা জেলার উরি সেক্টরের সেনা ছাউনিতে আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা। ঘটনায় অন্য দশ জনের সঙ্গে রাঁচির বাসিন্দা, পঞ্জাব রেজিমেন্টের লেফটেন্যান্ট কর্নেল সঙ্কল্প শুক্লরও মৃত্যু হয়। সে রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের আগে, প্রধানমন্ত্রীর দ্বিতীয় কাশ্মীর সফরের আগে আগেই ওই ঘটনা। সোমবার সেখানে যাওয়ার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। কিন্তু তার আগে ঝাড়খণ্ডের বিধানসভা নিবার্চনের প্রচার-মঞ্চকেই ব্যবহার করলেন প্রধানমন্ত্রী। আজ হাজারিবাগে মোদী তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই ঝাড়খণ্ডের ভূমিপুত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল শুক্ল-সহ কাশ্মীরে নিহত জওয়ানদের উদ্দেশে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। একই সঙ্গে সময় মতো এই ঘটনার জবাব দেওয়া হবে বলেও তিনি হুঁশিয়ারি দেন। সঙ্কল্পকে ‘ঝাড়খন্ড কে লাল’ বলে সম্বোধন করে মোদী বলেন, “ঝাড়খণ্ড আর গোটা দেশ তাঁর বলিদানকে মনে রাখবে।” তিনি আরও বলেন, “জঙ্গিরা গণতন্ত্রের উপরে আঘাত করেছে। কাশ্মীরে এত ভোট পড়েছে যে জঙ্গিরা হতাশ হয়েই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। ঠিক সময় এর জবাব দেওয়া হবে।”
কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা শুক্ল পরিবারের বাড়ি রাঁচির বুটি মোড়ের কাছে। তাঁর স্ত্রী প্রিয়া ও দুই কন্যা সারা এবং মান্না থাকেন বিহারের দানাপুরে। বাবা এস কে শুক্ল আর মা সুষমা শুক্ল কৃষ্ণনগরের বাংলোয় রয়েছেন। দুর্ঘটনার আগের দিন রাতেও সুদূর উরি থেকে টেলিফোনে মায়ের স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর নিয়েছিলেন সঙ্কল্প। পরিবারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ১৯৯৯ সালে চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই পঞ্জাব রেজিমেন্টের এই অফিসার কাশ্মীরেই কর্মরত ছিলেন। ২০০৪ সালেও জঙ্গিদের গুলিতে এক বার গুরুতর জখম হয়েছিলেন সঙ্কল্প। শুক্রবার রাতে তাঁর মৃত্যুর খবর পৌঁছয় কৃষ্ণনগরের বাড়িতে। রামগড় ক্যান্টনমেন্ট থেকে শুক্ল পরিবারের কাছে বাড়ির একমাত্র ছেলের মৃত্যুর খবর পৌঁছে দেওয়া হয়। শোকে ভেঙে পড়েন বাবা-মা।
আজ সকাল থেকেই সঙ্কল্পের কৃষ্ণ নগরের বাড়িতে ভিড় ভেঙে পড়ে। নিহত কর্নেলকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে চান সকলেই। সারা দিনের অপেক্ষার পর দিল্লি থেকে বিশেষ বিমানে আজ রাতে সঙ্কল্পের মৃতদেহ কৃষ্ণনগরের বাড়িতে এসে পৌঁছয়। রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ বিমানবন্দরে উপস্থিত থেকে পরিবারের তরফে মৃতদেহ গ্রহণ করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। তার আগে সন্ধ্যায় তাঁর বোন মেধা এসে পৌঁছন। উপস্থিত আত্মীয়-স্বজনরাও। শোকাহত পিতা এর মধ্যেই বাড়ির সামনের লনে অভ্যাগতদের বসার ব্যবস্থা করেন। ছিলেন সেনাবাহিনীর কর্তা থেকে জওয়ান, অনেকেই। সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, সঙ্কল্পের শেষকৃত্য সম্ভবত আগামী কালই সম্পন্ন হবে।