—প্রতীকী ছবি।
উপমুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার প্রশ্নই নেই। তেজস্বীপ্রসাদ যাদব বহাল থাকছেন নিজের পদেই। সর্বসম্মতিক্রমে এমন সিদ্ধান্ত হল আরজেডি-র পরিষদীয় দলের বৈঠকে।
আরজেডি সুপ্রিমো লালুপ্রসাদ যাদব ও তাঁর ঘনিষ্ঠ পরিজনদের বাড়িতে সিবিআই হানার পর থেকেই বিহারে জোট সরকারের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে একটি শিবির। এফআইআর-এ লালুর ছোট ছেলে তেজস্বীর নাম থাকায়, উপমুখ্যমন্ত্রী পদে তাঁর থেকে যাওয়ার নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন তাঁরা। মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার কী চাইছেন, তা নিয়েও নানা জল্পনা পটনার রাজনৈতিক অলিন্দে। কিন্তু বিহারের শাসক জোটের বৃহত্তম শরিক আরজেডি সোমবার খুব স্পষ্ট করে জানিয়ে দিল, দল তেজস্বীর পাশেই।
লালুর মতো তেজস্বীর বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সিবিআই তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছে, যাদব পরিবারের বিভিন্ন বাড়ি ও অফিসে শুক্রবার ম্যারাথন তল্লাশি চালানো হয়। লালু যথারীতি বলছেন, এই সিবিআই হানা বিজেপি-র রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। কংগ্রেস তো বটেই, তৃণমূল-সহ অন্য কয়েকটি বিরোধী দলও লালুপ্রসাদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে ঠিকই, কিন্তু বিজেপি তথা লালু-বিরোধীরা এই সুযোগ হাতছাড়া করতে নারাজ। দুর্নীতিতে অভিযুক্ত লালু-পুত্র তেজস্বীপ্রসাদ যাদবকে বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরানোর দাবি তুলতে শুরু করেছেন তাঁরা। বিহার বিজেপি সরাসরি নীতীশ কুমারের দিকেই প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছে। সুশাসনের ধ্বজাধারী নীতীশ কী ভাবে বিপুল অঙ্কের আর্থিক দুর্নীতিতে অভিযুক্ত তেজস্বীকে নিজের ডেপুটি পদে রেখে দেবেন? বিজেপি এই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে।
সোমবার পটনায় আরজেডি পরিষদীয় দলের বৈঠকে লালু, রাবড়ির সঙ্গে তেজস্বী (লালুর পাশে), তেজপ্রতাপ (রাবড়ির পাশে)। ছবি: পিটিআই।
নীতীশ কুমার এখনও মুখ খোলেননি বিষয়টি নিয়ে। লালুর বাড়িতে সিবিআই হানা নিয়ে তিনি নীরব। মন্ত্রিসভায় তেজস্বীর থাকা বা না থাকার প্রসঙ্গেও নীরব তিনি। ভাইরাল জ্বরে কাবু বলে কয়েক দিন সংবাদমাধ্যমের সামনে আসতেও পারছেন না মুখ্যমন্ত্রী, এমনটাই দাবি নীতীশের দল জেডি(ইউ)-এর। তবে লালু চুপ থাকলেন না। আজ, সোমবার পটনায় আরজেডি পরিষদীয় দলের বৈঠক ডাকা হয়েছিল। বিধানসভার আসন্ন অধিবেশন নিয়েই মূলত আলোচনা হওয়ার কথা ছিল সেখানে। তবে অবধারিত ভাবে মন্ত্রিসভায় তেজস্বীর থাকা-না থাকার প্রসঙ্গও সেখানে ওঠে। বিহারের শাসক জোটের বৃহত্তম দলের বিধায়করা সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেন, উপমুখ্যমন্ত্রী পদে তেজস্বীই থাকবেন। আরজেডি-র তরফে পরে মিডিয়াকে সে সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েও দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিজেপি-বিরোধী তদন্ত থমকেই
নীতীশ কুমারও কিন্তু বৈঠক ডেকেছেন। তাঁর দল জেডি(ইউ) আগামী কাল অর্থাৎ মঙ্গলবার বৈঠকে বসছে। সোমবার সাধারণত তিনি জনতার দরবার বসান এবং সাধারণ নাগরিকদের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের অভাব-অভিযোগ শোনেন। জনতার দরবারের পর তিনি মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলেন। এ সপ্তাহে সেই কর্মসূচি বাতিল হয়েছে। অসুস্থতার কারণেই নীতীশের দরবার এ সপ্তাহে বসল না বলে জানানো হয়েছে। ফলে আজ তাঁকে মিডিয়ার মুখোমুখি হতে হয়নি। লালুর বাড়িতে সিবিআই হানা নিয়ে মুখ খুলতেও হয়নি।
সব চোখ তাই এখন আগামী কালের বৈঠকের দিকে। জেডি(ইউ)-এর সেই বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হবে, তেজস্বীকে নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হবে কি না, বৈঠক শেষে মিডিয়ার মুখোমুখি হয়ে নীতীশ কী বলবেন— সে সব নিয়ে এখন জোর জল্পনা বিহারে।