বিহার ভোটের সপ্তাহখানেক আগে তেজস্বীর সভায় মানুষের ঢল মহাজোটকে উৎসাহিত করছে। ছবি পিটিআই।
বিহারের ভোট যত এগিয়ে আসছে, ভিড় বাড়ছে আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবের জনসভায়। বিরোধী নেতারা দাবি করছেন, মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের ১৫ বছরের শাসনে বিহারে উন্নয়নের তুলনায় প্রচার হয়েছে বেশি। অন্য দিকে, তেজস্বীর দেওয়া ১০ লক্ষ সরকারি চাকরির প্রতিশ্রুতি যুব সমাজকে আকৃষ্ট করেছে।
আর রয়েছে নীতীশের বিরুদ্ধে পরিযায়ী শ্রমিকদের ক্ষোভ। যার জেরে ভিড় বাড়ছে পাঁচ বিরোধী দলের মহাজোটের জনসভাগুলিতে। বিহার ভোটের সপ্তাহখানেক আগে তেজস্বীর সভায় মানুষের ঢল মহাজোটকে উৎসাহিত করলেও নির্বাচন কমিশন আজ রাজনৈতিক দলগুলিকে জানিয়ে দিয়েছে, কোভিড নির্দেশিকা অমান্য করে জনসভা করলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলবন্দি আরজেডি নেতা লালু প্রসাদ এই প্রথম ভোটের প্রচারে নামতে পারছেন না। তবে এ নিয়ে দলের কর্মীদের প্রাথমিক ধাক্কা কেটে গিয়ে লালু-পুত্র তেজস্বীর সভায় ব্যাপক সাড়া মিলতে শুরু করেছে বলেই দাবি করেছেন আরজেডি নেতারা। আজই রাজ্যে ১২টি জনসভা করেছেন তেজস্বী।
আরও পড়ুন: কোয়াড-এর পাল্টা জোট গড়ছে চিন
তাঁর সভাগুলিতে মানুষের জমায়েত দেখে অভিভূত তেজস্বী টুইট করে বলেছেন, ‘‘মানুষ পরিবর্তন চাইছেন। গত ১৫ বছরের এনডিএ শাসনে বিহার ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। মানুষ এখন উন্নয়ন আর চাকরি চাইছেন। সে জন্যই জনসভাগুলিতে এসে আমাদের কথা শুনতে চাইছেন তাঁরা।’’ বিজেপি মুখপাত্র শাহনাওয়াজ হুসেনের অবশ্য দাবি, আরজেডি যেখানে শক্তিশালী, ভিড় হচ্ছে সেখানেই। তাঁর মতে, ভিড় আর ভোটের কোনও সম্পর্কও নেই।
ভোটে জিতলে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকেই ১০ লক্ষ সরকারি চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করবেন বলে তেজস্বী যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা যে শাসক জোটকে ভাবাচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের প্রতিক্রিয়াতেই তা স্পষ্ট। গতকাল একটি জনসভায় নীতীশ বলেন, ‘‘বেতন দেওয়ার টাকা কোথা থেকে আসবে? যে কেলেঙ্কারি করে জেলে গিয়েছেন (লালু) সেখান থেকেই টাকা আসবে? আপনি (তেজস্বী) জাল নোট ছাপাবেন নাকি?’’ লালু-পুত্রের অভিজ্ঞতা কম বলেও দাবি করেন নীতীশ। বলেন, ‘‘এমন প্রতিশ্রুতি দুনিয়ার কেউ দিতে পারেননি। দশ লক্ষ কেন, তা হলে সবাইকেই চাকরি দিন।’’
আরও পড়ুন: গেরুয়া ছোপ মুছতে সক্রিয় অকালি দল
জবাব দিয়েছেন তেজস্বীও। তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমি উপমুখ্যমন্ত্রী ছিলাম। এতটা অনভিজ্ঞ হলে, ২০টা হেলিকপ্টার নিয়ে বিজেপি নেতারা আমার পিছনে ছুটে বেড়াচ্ছিলেন কেন?’’ নীতীশ কুমার ‘শারীরিক ও মানসিক ভাবে ক্লান্ত’ হয়ে পড়েছেন বলে দাবি করে তেজস্বী বলেন, ‘‘১৫ বছর সরকার চালানোর পরে উনি বলছেন টাকা কোথায়? ...বিহারের বাজেটে সাড়ে চার লক্ষ সরকারি চাকরি খালি পড়ে থাকার কথা রয়েছে। আর নীতি আয়োগ বলেছে, বিহারের উন্নয়নের জন্য আরও সাড়ে পাঁচ লক্ষ চাকরি প্রয়োজন।’’