ফরাক্কা বিতর্ক

মোদীর নির্দেশ মেনে বিহারে পৌঁছল নদী-বিশেষজ্ঞ দল

নীতীশ কুমারের দাবি মেনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ফরাক্কা বাঁধ ও গঙ্গা অববাহিকার অবস্থা খতিয়ে দেখতে চার সদস্যের বিশেষজ্ঞ দলকে বিহারে পাঠালেন। আজই সেই দল পটনায় এসে পৌঁছেছে। আগামী কয়েক দিন ধরে পটনা ও বিহারের বিভিন্ন গঙ্গা অববাহিকার অবস্থা খতিয়ে দেখবেন দলের সদস্যরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পটনা শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:০৮
Share:

নীতীশ কুমারের দাবি মেনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ফরাক্কা বাঁধ ও গঙ্গা অববাহিকার অবস্থা খতিয়ে দেখতে চার সদস্যের বিশেষজ্ঞ দলকে বিহারে পাঠালেন। আজই সেই দল পটনায় এসে পৌঁছেছে। আগামী কয়েক দিন ধরে পটনা ও বিহারের বিভিন্ন গঙ্গা অববাহিকার অবস্থা খতিয়ে দেখবেন দলের সদস্যরা।

Advertisement

গত ২৩ অগস্ট দিল্লি গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার বিহারের বন্যা পরিস্থিতির জন্য ফরাক্কা বাঁধকে দায়ী করেন। এমনকী, ফরাক্কা বাঁধ ভেঙে দেওয়ার দাবিও করেন তিনি। সে সময়ে প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছিলেন। তার প্রেক্ষিতেই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে চার সদস্যের দল তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। দশ দিনের মধ্যে রিপোর্ট তৈরি করে জমা দিতে হবে ওই দলকে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ওই দলের দায়িত্বে রয়েছেন ‘গঙ্গা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বোর্ড’-এর সদস্য এ কে সিংহ। তিনিই এই দলের প্রধান। এ ছাড়া, বাকি তিন জন হলেন: কেন্দ্রীয় জল আয়োগের চিফ ইঞ্জিনিয়ার এস কে সাহু, দিল্লি আইআইটির অধ্যাপক এস কে গোঁসাই এবং কেন্দ্রীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের অন্যতম পরামর্শদাতা রজনীশ রঞ্জন।

Advertisement

সরকারি সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় দল তিনটি বিষয়ের ওপরে মূলত নজর দেবে। (এক) গঙ্গা অববাহিকায় সম্প্রতি কেন এমন বন্যা হচ্ছে। এর আসল কারণ কী পলি জমে যাওয়া, না অন্য কিছু? (দুই) ফরাক্কা বাঁধ তৈরি হওয়ার পরে গঙ্গা অববাহিকায় কতটা পলি জমা হয়েছে? তার প্রভাব কতটা পড়েছে? দু’টি বিষয়ের তুলনামূলক পর্যালোচনা করবে কমিটি। (তিন) চলতি বছরে বন্যায় জলের গতি অনেক কম ছিল। জল বের হতে দশ দিনের বেশি সময় লেগেছে। কেন এমন হয়েছে তাও খতিয়ে দেখা হবে।

নীতীশ কুমার তিন পাতার চিঠিতে মূলত বক্সার থেকে ফরাক্কা পর্যন্ত গঙ্গার নাব্যতা কমে যাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন। তার জন্য ফরাক্কা বাঁধকেই দায়ী করেছেন তিনি। গঙ্গা জাতীয় নদী হওয়ায় এ সংক্রান্ত সমস্ত বিষয় কেন্দ্রীয় সরকারের এক্তিয়ারভুক্ত। রাজ্য সরকার শুধুমাত্র দাবি জানাতে এবং পরামর্শ দিতে পারে। পূর্ব উত্তরপ্রদেশ এবং বিহারে গঙ্গার অববাহিকায় পলি জমা এবং নাব্যতা কমার বিষয়টি তুলে নীতীশ তাঁর দাবিকে জোরদার করেছেন। নরেন্দ্র মোদীর নির্বাচনী কেন্দ্র বারাণসী বিহারের বক্সার লাগোয়া। ওই এলাকার বাসিন্দারাও একই সমস্যায় রয়েছেন বলে দাবি করেছে নীতীশ কুমারের দল জেডিইউ। বিষয়টি সামনে এনে উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনের আগে এক ঢিলে নীতীশ একাধিক পাখি মারতে চেয়েছেন বলে বিহার রাজনীতির বিশেষজ্ঞদের মত।

তাঁদের ধারণা, অবিলম্বে কেন্দ্রীয় দল পাঠিয়ে সেই ঢিলের পাল্টা পাটকেল ছুড়েছেন নরেন্দ্র মোদী। রিপোর্ট জমা পাওয়ার পরে তা নিয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর। ‘নমামি গঙ্গে’ প্রকল্পে পলি তোলা ও নাব্যতা বাড়ানোর কাজ শীঘ্রই শুরু করা হবে। জাপানের কাছ থেকে প্রযুক্তিগত সাহায্য নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রক। উত্তরপ্রদেশ, বিহার ও পশ্চিমবঙ্গের সেচ ও জলসম্পদ মন্ত্রীদের সঙ্গেও এই পলি তোলা নিয়ে আলোচনা করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement