ফাইল চিত্র
জাতীয় শিক্ষানীতিতে পড়ুয়াদের তিন ভাষা শেখানোর ফর্মুলাকে ‘দেশ জুড়ে হিন্দি ভাষাকে চাপিয়ে দেওয়ার ফন্দি’ বলে বর্ণনা করলেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী ই কে পলানীস্বামী। বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে আর্জি জানিয়ে এআইডিএমকে-র এই নেতা ঘোষণা করেছেন, তাঁর রাজ্য কখনওই এই শিক্ষানীতি গ্রহণ করবে না।
এর আগে তামিলনাড়ুর প্রধান বিরোধী দল ডিএমকে-র প্রধান এম কে স্ট্যালিনও শিক্ষানীতিকে ‘মলম মাখানো মনুসংহিতা’ বলে বর্ণনা করে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, তামিলনাড়ুর উপরে বিষয়টি চাপানোর চেষ্টা করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠবে, যার পরিণতি ভয়ঙ্কর হতে পারে। বিরোধী দলগুলিকে এক জোট হয়ে শিক্ষানীতি চাপিয়ে দেওয়ার কেন্দ্রীয় প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে সরব হতে বলেছেন স্ট্যালিন। তার ২৪ ঘণ্টা পরে প্রতিপক্ষ নেতা মুখ্যমন্ত্রী পলানীস্বামী একই সুরে শিক্ষানীতির বিরোধিতা করলেন। ষাটের দশকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু দেশ জুড়ে হিন্দিকে কেন্দ্রের সরকারি কাজের ভাষা হিসেবে চালু করার প্রস্তাব দিলে তামিলনাড়ু উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি সামলাতে নেহরু
রাজ্যের সঙ্গে কেন্দ্রের যোগাযোগকারী কাজের ভাষা হিসেবে ইংরেজিকে চালু রাখতে বাধ্য হন। কিন্তু সেই আন্দোলনের ফলশ্রুতিতেই তামিলনাড়ুতে ক্ষমতায় আসে ডিএমকে। তা থেকে ভেঙে তৈরি হওয়া এডিএমকে-ও সেই আন্দোলনের ঐতিহ্য বহন করে। আগামী বছর বিধানসভা ভোটের আগে কোনও দলই তাই বিষয়টি নিয়ে হাওয়া গরম করার সুযোগ ছাড়বে না।
তবে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্ক তামিলনাড়ু থেকে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পন রাধাকৃষ্ণনের টুইটের জবাবে রবিবার দাবি করেছেন, কোনও রাজ্যের উপরে কোনও নির্দিষ্ট ভাষা কেন্দ্র চাপিয়ে দেবে না।
শিক্ষানীতিতে ভাষার বিষয়টি ঠিক করার দায় সম্পূর্ণ ভাবেই রাজ্যের এক্তিয়ারে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী পলানীস্বামীর দাবি, মুখে এ কথা বললেও তামিল ও ইংরেজির পাশাপাশি হিন্দি বা সংস্কৃতকে চাপিয়ে দেওয়ার কৌশল নেওয়া হয়েছে শিক্ষানীতিতে, দ্রাবিড়ভূম যা কিছুতেই মেনে নেবে না।