তিরুমালা তিরুপতি মন্দির। —ফাইল চিত্র।
অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতি বেঙ্কটেশ্বর মন্দিরের কোনও কাজে আর নিযুক্ত থাকতে পারবেন না অ-হিন্দু সম্প্রদায়ের কেউ। সোমবার মন্দিরটির পরিচালন সংস্থা তিরুমালা তিরুপতি দেবস্থানম (টিটিডি) এই মর্মে একটি প্রস্তাব পাশ করিয়েছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, মন্দিরের অ-হিন্দু কর্মচারীদের হয় স্বেচ্ছাবসর নিতে হবে, না হলে তাঁদের অন্য সরকারি দফতরে বদলি করা হবে।
প্রস্তাব পাশ করানোর বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন টিটিডি-র চেয়ারম্যান বিআর নায়ডু। তবে বর্তমানে ওই মন্দিরে কত জন অ-হিন্দু কর্মচারী রয়েছেন, তা স্পষ্ট করেননি তিনি। একটি সূত্রের দাবি, মন্দিরের দৈনন্দিন এবং প্রশাসনিক কাজের জন্য সাত হাজার জন স্থায়ী কর্মচারী রয়েছেন। এই কর্মচারীদের মধ্যে অন্তত ৩০০ জন অ-হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। স্থায়ী কর্মী ছাড়াও অন্ধ্রপ্রদেশের ওই মন্দিরে প্রায় ১৪ হাজার অস্থায়ী কর্মচারী রয়েছেন।
মন্দির কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে অধিকাংশ কর্মচারী সংগঠন। একটি সংগঠনের এক নেতার কথায়, “টিটিডির বিধিতেই এই বন্দোবস্তের কথা বলা হয়েছিল। এত দিনে তা কার্যকর করার কথা বলা হল।” প্রসঙ্গত, গত ৩১ অক্টোবর টিটিডি-র মাথায় বসানো হয়েছিল বিআর নায়ডুকে। তার পরেই তিনি ইঙ্গিত দেন, মন্দির কেবল হিন্দুদের দ্বারাই পরিচালনার বিষয়ে উদ্যোগী হবেন।
অবশ্য এর আগেও তিন বার টিটিডি আইন বদল করে বলা হয়েছিল, মন্দিরের পরিচালক সংস্থা কেবল হিন্দুদেরই নিয়োগ করতে পারবে। তার পরেও বহু অ-হিন্দু সম্প্রদায়ের কর্মচারী মন্দিরের প্রশাসনিক নানা কাজে নিযুক্ত ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। চন্দ্রবাবুর সরকার ক্ষমতায় আসার পরে মন্দিরের সেবায়েতদের একাংশ এই বিষয়ে আপত্তি জানান।
সম্প্রতি লাড্ডু-বিতর্কে সংবাদ শিরোনামে এসেছিল তিরুপতি মন্দির। অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী তথা তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি)-র প্রধান চন্দ্রবাবু নায়ডু সম্প্রতি অভিযোগ করেন, জগন্মোহন রেড্ডির সরকারের আমলে তিরুমালার প্রসাদী লাড্ডু বানানোর সময় ব্যবহৃত ঘিয়ের সঙ্গে পশুর চর্বি মেশানো হত! গুজরাতের এক সরকারি ল্যাবরেটরির জুলাইয়ের একটি রিপোর্ট উদ্ধৃত করে চন্দ্রবাবু দাবি করেন, তিরুপতি বেঙ্কটেশ্বর মন্দিরের প্রসাদী লাড্ডুতে ‘বিশুদ্ধ’ ঘিয়ের সঙ্গে মেশানো হচ্ছে পশুর চর্বি। সেই থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত। ওয়াইএসআর কংগ্রেস অবশ্য ওই অভিযোগ অস্বীকার করে এবং চন্দ্রবাবুর মন্তব্যকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে মন্তব্য করে। এই নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়। এনডিএ-র শরিক দল টিডিপির বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করার অভিযোগ তোলে দেশের বিজেপি-বিরোধী দলগুলি।